কলকাতা: তদন্তের গতি আরও বেড়েছে। দফায় দফায় টানা তল্লাশি চলছে ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’ কোম্পানিতে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের হাতে এসেছে একের পর এক বিস্ফোরক নথি, চাঞ্চল্যকর তথ্য। আর তা নিয়ে প্রশ্ন করতেই বেজায় চটলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের ‘কাকু’। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতেই কথার বলার শালীনতা হারালেন তিনি। এসএসকেএম হাসপাতালে ঢোকার মুখেই সাংবাদিকরা সুজয়কৃষ্ণকে দেখে প্রশ্ন করেন। আর তখনই মেজাজ হারান তিনি।
তদন্ত এগোচ্ছে, আর বুকে ব্যথা বাড়ছে ‘কাকু’র। সোমবার রাতভর তল্লাশি চালিয়েছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, তাঁদের হাতে এমন কিছু তথ্য এসেছে, যাতে ‘কাকু’র বিপদ বাড়বে বই কমবে না। মঙ্গলবার যখন সুজয়কৃষ্ণ এসএসকেএম হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখনই সাংবাদিকরা তাঁকে দেখে খুবই সাধারণ একটি প্রশ্ন করেন, “লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস কোম্পানিতে তল্লাশি চলছে, কী বলবেন?” সুজয়কৃষ্ণ তখন ছিলেন গাড়ির ভিতরে। মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো। তিনি প্রথমে হাত দিয়ে সাংবাদিকের বুম ঠেলে সরিয়ে দেন। তারপর বলেন, ‘সরুন এখান থেকে, অসভ্য সব…’ তারপর মুখ থেকে অক্সিজেন মাস্ক নামিয়ে রীতিমতো অগ্নিশর্মা হয়ে বলেন, ‘২ কোটি বার তল্লাশি করবে, তোর বাপের কী? তোর বাপের কী?’
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, ‘যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখো তাই…’ যখন শিক্ষায় দুর্নীতির তদন্তের শুরুর দিকে একের পর এক পেঁয়াজের খোসা ছাড়াচ্ছেন তদন্তকারীরা, তখন গোপাল দলপতির মুখে উঠে এসেছিল কালীঘাটের ‘কাকু’র নাম। TV9 বাংলার প্রতিনিধি সরাসরি পৌঁছে গিয়েছিলেন তাঁর বাড়িতে। সেদিন অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। নিজেই এই প্রবাদ বলেছিলেন। সেদিন বলেছিলেন, সমস্ত রকমের তদন্তের মুখোমুখি হতে তিনি প্রস্তুত। তিনি তাঁর ভূমিকা একেবারেই দুধ সাদা। কোনওভাবেই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন তিনি। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র আপাতত বিচারাধীন। তবে তাঁর আত্মবিশ্বাস যে এখন আর অটুট নেই, তা দৃশ্যত ধরা পড়ল ক্যামেরায়। সাংবাদিকরা স্বাভাবিক প্রশ্ন করতেই মেজাজ হারালেন তিনি।
‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসে’র বিষ্ণুপুর জল কারখানা থেকে দু’ব্যাগ নথি ও ডিজিটাল নথি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। নিউ আলিপুরের অফিস থেকে উদ্ধার হয়েছে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিপুল নথি। উদ্ধার বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে মউ এবং চুক্তিপত্র। ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসে’র আয় ব্যয়ের ‘ফক্কা’ হিসাব ধরতে মরিয়া তদন্তকারীরা।