কলকাতা: দেড় বছর আগেই অভিযোগ দায়ের হয়েছিল পার্কস্ট্রিট থানায়। কিন্তু এতদিন ধরে ঘটনার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসেনি। ইডির অভিযানে গার্ডেনরিচের বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হতেই ১৪ দিনের মধ্যেই আমিরকে গ্রেফতার করা হল। গাজিয়াবাদ থেকে গ্রেফতার করা হয় আমির খানকে। ইডি নয়, কলকাতা পুলিশের হাতেই গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। পুলিশের জন্য এটি একটি বড় সাফল্য বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। আবার অন্য একটি অংশের মনে খটকা জাগছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। দেড় বছর আগে অভিযোগ পাওয়ার পরও কেন ইডি টাকা উদ্ধারের পরে গ্রেফতার করা হল? এমন প্রশ্ন ইতিমধ্য়েই উঠতে শুরু করেছে।
গার্ডেনরিচের শাহি আস্তাবল এলাকার এক অখ্যাত গলি ১০ সেপ্টেম্বর সরাসরি লাইমলাইটে চলে এসেছে। সৌজন্যে পরিবহন ব্যবসায়ী নিসার আহমেদ খানের বাড়ি। তাঁর বাড়ির খাটের তলা থেকে উদ্ধার হয় ১৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ইডি গোয়েন্দাদের সন্দেহ, এই টাকা নিসারের ছেলে আমির খানের লোক ঠকানো কারবারের কালো টাকা। ইডির দাবি, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত গেমিং অ্যাপের প্রায় ৪৭ কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে। আমিরের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ করা হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে। ২৬ ডিসেম্বর পার্ক স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ জানায় ফেডারেল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ জানানো হয়েছিল লালবাজারে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনারের কাছেও।
পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতের দ্বারস্থ হয় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। আদালতের নির্দেশে গতবছর ১৫ ফেব্রুয়ারি পার্ক স্ট্রিট থানায় আমির খান ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়। আর এতেই প্রশ্ন উঠছে, এতদিন ধরে পুলিশের ভূমিকা কী ছিল? কী পদক্ষেপ করেছে পুলিশ? বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্য়েই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই বিষয়ে বলেন, “তাঁকে বাঁচানোর জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। যাতে তিনি ইডি-সিবিআই-এর হাতে না পড়েন। পড়লেই বিপদ। কারণ, মেটিয়াবুরুজে কোনও ঘটনা ঘটলে, মেটিয়াবুরুজের মালিকের কাছে কোনও তথ্য থাকবে না, এটা তো হতে পারে না। তাঁর কাছে তথ্য ছিল, নাম তো আসতই। তাঁকে বাঁচানোর জন্য এই কাজ করা হয়েছে।”
যদিও সুকান্তর মন্তব্যের পাল্টা দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিমও। তিনি বলেন, “এরা হল সমালোচক। এদের নিয়ে যে মানুষের খুব একটা মাথা ব্যাথা রয়েছে, তা নয়। আইন, আইনের পথে চলবে। আগ বাড়িয়ে এইসব বলা মানে, পুলিশকে ও ইডিকে প্রভাবিত করা। এইসব কথার কোনও মানে হয় না।”