কলকাতা: বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Examination)। তবে এবার মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেকটাই কম। তা নিয়ে ইতিপূর্বেই মধ্য শিক্ষা পর্ষদের তরফে কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কিন্তু বিতর্ক কমছে না বিষয়টিকে নিয়ে। এবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বললেন, ‘অভিভাবকরা মধ্য শিক্ষা পর্ষদের উপর থেকে বিশ্বাস হারাচ্ছেন। সেই কারণে নিজেদের ছেলে-মেয়েদের বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন।’ রাজ্য শিক্ষা ব্যবস্থায় সাম্প্রতিক অতীতে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তার প্রভাবেই কি বিশ্বাস হারাচ্ছেন অভিভাবকরা? প্রশ্ন করায় সুকান্তবাবু বলেন, ‘অবশ্যই দুর্নীতির জন্য।’ সঙ্গে সুকান্তবাবু আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে যদিও মাধ্যমিক দিচ্ছে না, কিন্তু আমিও মেয়ের স্কুল বদল করিয়েছি।’
বঙ্গ বিজেপির সভাপতি জানালেন, তিনি মেয়েকে সরকারি স্কুল ছাড়িয়ে বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। মেয়েকে তিনি প্রথমে মধ্য শিক্ষা পর্ষদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন। কিন্তু পর্যাপ্ত বইয়ের অভাবে সেই স্কুল ছাড়িয়ে বেসরকারি স্কুলে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করিয়েছেন। এমনই ব্যাখ্যা সুকান্ত মজুমদারের।
যদিও মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় সুকান্ত মজুমদারের ব্যাখ্যার সঙ্গে একেবারেই একমত নন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সুকান্তবাবু যে দুর্নীতির অভিযোগের কারণে পর্ষদের উপর অভিভাবকদের আস্থা হারানোর কথা বলছেন, তাতে একেবারেই আমল দিচ্ছেন না কুণাল। বললেন, বেসরকারি স্কুলে কি পরীক্ষা হচ্ছে না? তারা কি মাধ্যমিক দেবে না? রাজ্যর শিক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত ভাল জায়গায় আছে। পূর্ণ আস্থা আছে। হই হই করে মাধ্যমিক হচ্ছে।’ বিরোধীদের খোঁচা দিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘শকুনের শাপে গরু মরে না। কোনও বছর পরীক্ষার্থী বাড়ে, আবার কোনও বছর কমে। এটাই তো স্বাভাবিক নিয়ম।’
প্রসঙ্গত, এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ লাখ কমে গিয়েছে। এই বছর মাধ্যমিকে মোট পরীক্ষার্থী রয়েছে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৯২৮। কেন এই পরীক্ষার্থী সংখ্যা কমল? পর্ষদের ব্যাখ্যা ছিল, করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে হয়ত একাংশের পড়ুয়া এবার পরীক্ষায় বসছে না। অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে যে ‘গ্যাপ’ তৈরি হয়েছিল, সেই গ্যাপের কারণেই এটি হতে পারে বলে ব্যাখ্যা ছিল পর্ষদের।
পাশাপাশি, ২০১৭ সালের অ্যাডমিশন রুলসে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছিল। সেই বছর তিনটি বিজ্ঞপ্তি বেরিয়েছিল ২০১৭ সালের ভর্তির জন্য। ২০১৭ সালের বিজ্ঞপ্তিতে (বয়সের) ফ্লেক্সিবিলিটির জায়গাটি বাদ গিয়েছিল। যার ফলে একটি বড় সংখ্যক পড়ুয়া অ্যাডমিশন নিতে পারেনি। সেটিও একটি কারণ হতে পারে বলে ব্যাখ্যা দিয়েছিল পর্ষদ। কারণ, ২০১৭ সালে যাঁরা ক্লাস সিক্সে ভর্তি হয়েছিল, তারাই ক্লাস টেনের পরীক্ষা দিচ্ছে ২০২৩ সালে।