নোদাখালি : বুধবার সাত সকালে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালি এলাকা। তীব্র বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন তিন জন। প্রাথমিক ভাবে বাজির মশলা থেকে বিস্ফোরণ বলে দাবি করা হলেও, সেই যুক্তি মানতে নারাজ বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের দাবি, রাজনৈতিক অশান্তির জন্যই বারুদ মজুত রাখা হয়েছিল। সেখান থেকেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। সেই ঘটনায় এবার এনআইএ তদন্তের দাবি জানাল বিজেপি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানোর আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সেটি ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। আর ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই সাংসদ অভিষেকের নামও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন সুকান্ত। তিনি লিখেছেন, ‘আমি আবেদন করছি, আপনি এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিন। কেন ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে বারবার বিস্ফোরণ ঘটছে? কারা এর পিছনে রয়েছে? তা খতিয়ে দেখা উচিৎ।’
একই দাবি জানিয়েছেন, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা থেকে শুভেন্দু অধিকারী। তিনি অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বারুদের স্তূপে বসে রয়েছে বাংলা। এখানেই না থেমে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়কের আরও সংযোজন, “তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বে অপরাধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। উপরতলার নির্দেশে পুলিশও সরে দাঁড়িয়েছে।পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। বারুদের স্তূপে বসে আছে। এনআইএকে দিয়ে অবিলম্বে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক।” নোদাখালি বিস্ফোরণ নিয়ে একটই টুইটও করেন অধিকারী পুত্র।
টুইটে শুভেন্দু লেখেন, “দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজের এই ভয়ঙ্কর ছবি;…যেখানে একটি বেআইনি বাজি কারখানার বিস্ফোরণ ঘটে। মানুষ মারা গিয়েছে। বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। গোটা এলাকা সন্ত্রাসের কবলে। এই জেলাটি ধীরে ধীরে জেএমবি জঙ্গী ও জিহাদিদের আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার সকালেই বিস্ফোরণের এলাকাটি পরিদর্শনে আসে ফরেনসিক দল। ঘটনাস্থল থেকে তাঁরা বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন। আক্রান্ত দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কথা বলেন। পাশাপাশি, ঘটনাস্থলটি খতিয়ে দেখেন তাঁরা। এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী।
বুধবার সাতসকালেই ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম ভাঙে নোদাখালি এলাকার বাসিন্দাদের। ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে আশেপাশের বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে গিয়েছে। অবৈধ বাজি কারখানায় জমে থাকা বাজি তৈরির মশলা থেকেই এই বিস্ফোরণ বলে জানা গিয়েছে। বুধবার সকালে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নোদাখালি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক। ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় তৃণমূল নেতা বুচান বন্দ্যোপাধ্যায়। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে বাড়ির মালিক অসীম মিদ্য়ের। তাঁর মামী কাকলি মিদ্যে এবং কারখানার একজন শ্রমিকেরও মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন : Covid Update: ওমিক্রন আতঙ্কের মধ্যেও রাজ্যে কমল সংক্রমণ, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মৃত্যু