মেদিনীপুর : আমতার ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুতে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। আনিস-কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল শহরের রাস্তা। আর এরই মধ্যে বিস্ফোরক দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, কোনও এক ফেসবুক পোস্টের জন্যই নাকি আনিসের বাড়িতে হাজির হয়েছিল পুলিশ। উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের নির্দেশে পুলিশকর্মীদের পাঠানো হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তিনি। মঙ্গলবার মেদিনীপুরে পুরভোটের প্রচারে গিয়ে শুভেন্দু জানিয়েছেন, আনিসের পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। আনিসের দাদা সাবিরের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগও দাবি করেছেন শুভেন্দু।
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, আনিস খানের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘পুলিশই খুন করেছে।’ তাঁর আরও দাবি, কোনও এক বিশেষ ফেসবুক পোস্টের জন্যই আনিস খানের বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। শুভেন্দু বলেন, ‘ফেসবুক পোস্টের জন্য আনিসকে শায়েস্তা করতে গিয়েছিল পুলিশ। বেশি শায়েস্তা করতে গিয়ে খুন করতে হয়েছে।’ তাঁর মতে, নীচুতলার পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না তুলে জোড়া আইপিএসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার এবং হাওড়া গ্রামীণ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দুই আইপিএস- এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিধায়ক।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, দুই আইপিএস এর নির্দেশেই আনিসের বাড়িতে পুলিশ গিয়েছিল, আর ‘১৪ তলা’ অর্থাৎ নবান্ন থেকেই পুলিশকে নির্দেশ দিতে বলা হয়েছে। সিট গঠন করে তদন্ত ঠিক হবে না বলেই মনে করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি চান সিবিআই তদন্ত হোক।
উল্লেখ্য, আনিসের বাবাও শুরু থেকেই সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন। রাজ্য পুলিশের ওপর যে তাঁদের কোনও আস্থা নেই সেই কথা বার বার বলেছেন তিনি। আর মঙ্গলবার যখন সিটের সদস্যরা আনিসের বাড়িতে গিয়েছিলেন, সেই সময় ছেলের মোবাইল পুলিশের হাতে দিতে চাননি তিনি। শুধু তাই নয়, সিআইডির দেওয়া নোটিসও ফিরিয়ে দিয়েছে আনিসের পরিবার। আনিসের বাবার বক্তব্য, সিট নিজেদের মতো করে তদন্ত করুক। কিন্তু সিবিআই ছাড়া কারও সামনে মুখ খুলতে চাইছে না আনিসের পরিবার।
ইতিমধ্যে আমতা থানার তিন পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করেছে সিট। গাফিলতির অভিযোগে তিন পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কনস্টেবল, এএসআই ও এক হোমগার্ড। এএসআই নির্মল দাস, কনস্টেবল জিতেন্দ্র হেমব্রম, হোমগার্ড কাশীনাথ বেরাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সিটের তদন্তে জানা গিয়েছে ঘটনার দিন আনিসের বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশই।
আরও পড়ুন : AMTA Student Death: সংবাদ মাধ্যমের সামনে সব কথা বলতে মানা! আনিস তদন্তে ফের প্রশ্নের মুখে সিটের ভূমিকা