কলকাতা: উপনির্বাচনে ৬ কেন্দ্রেই হার বিজেপির। গতবারের মতো এবারও হারের দায় নাম না করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দিকেই ঠেললেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, তিনি বিরোধী দলনেতা, সংগঠনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তিনি যুক্ত থাকেন না। পাশাপাশি এও বললেন, “হাতে মাত্র ১ বছর। নির্বাচনমুখী সংগঠন, আন্দোলনমুখী দল দরকার।”
ফল মোটামুটি ঘোষিত হয়ে যাওয়ার পর শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমি সংগঠনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাই না, যুক্তও থাকি না। তবে উপলব্দির মধ্যে দিয়ে একটা কথাই বলতে পারি, নির্বাচনমুখী সংগঠনের প্রয়োজন রয়েছে। সকলেই আমরা ২০২৬-এর জন্য অপেক্ষা করছি। এই ৬টা আসন নিয়ে আমরা কেউই ভাবিনি।”
তবে এই প্রথমবার নয়, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দলের খারাপ ফলের দায়ও নেননি শুভেন্দু। সেবারে কার্যত দায় ঠেলেছিলেন রাজ্য সভাপতির দিকেই। চলতি বছরেই ১৩ জুন শুভেন্দু বলেছিলেন, “সামগ্রিকভাবে দলকে প্রতিনিধিত্ব করি না। সংগঠন করি। সংগঠিত করার কাজটা আমার নয়। কেবলমাত্র আমার জেলাতে পার্টির সংগঠনের লোকেরা যেমন রাজ্যের নির্দেশিকাও পালন করেন, আমার পরামর্শটাও মেনে চলেন। এর বাইরে সাংগঠনিক ব্যাপারে আমি কোনওদিনই হস্তক্ষেপ করি না। ভবিষ্যতেও করার কোনও ইচ্ছা নেই।”
তবে দলের হারের দায় এড়াননি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “উপ নির্বাচনে এমনই হয়।” উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “কালিয়াগঞ্জের উপনির্বাচন, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর উপনির্বাচনে আমরা হেরে গিয়েছিলাম। একুশে কালিয়াগঞ্জ আমরা বিপুল ভোটে জিতেছি। প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ থাকার পরও জিতেছি। ২৪-এ আমরা লোকসভাতে জিতলাম। আবার ২৬-এ বিধানসভাতেও জিতব। ”
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই বিজেপি অন্দরে বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়ের একটি পোস্ট ঘিরে চরম চর্চা শুরু হয়েছে। আর সেই পোস্টের সূত্র ধরে TV9 বাংলার একান্ত সাক্ষাৎকারে তথাগত দাবি করেছেন, বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি হিসাবে শুভেন্দু অধিকারীই একমাত্র ‘যোগ্যতম’ চয়েস। সুকান্তকে তিনি কার্যত অতীতের খাতাতেই রেখেছেন। তথাগতর কথায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানোর জন্য একবারে ঠিক লাইনে চলছেন শুভেন্দুই।’ বিজেপির পরবর্তী রাজ্য সভাপতি শুভেন্দুই কিনা, তা নিয়ে জল্পনার মাঝেই, এই হারের দায় সংগঠনের নেতার ঘাড়েই ঠেললেন বিরোধী দলনেতা।
স্বাভাবিকভাবেই উপ নির্বাচনের ফলে ভীষণভাবে উচ্ছ্বসিত তৃণমূল। বিজেপিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “নাচতে না জানলে উঠোন ব্যাঁকা। যে ক্লাস ওয়ানেই মুখ থুবড়ে পড়ছে, সে বলছে আমি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করবে। শুনলেও হাসি পায়, বিজেপিও ভোট চায়।”