Suvendu Adhikari: ‘সাংগঠনিক ব্যাপারে আমি হস্তক্ষেপ করি না, ভবিষ্যতে ইচ্ছাও নেই’, এক ঢিলে ‘দুই পাখি’ মারলেন শুভেন্দু?

Pradipto Kanti Ghosh | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Jun 13, 2024 | 4:56 PM

Suvendu Adhikari On BJP: বর্তমানে বঙ্গ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি পদে রয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। তবে সদ্যই তিনি প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেছেন। তাই নিয়ম অনুযায়ী একজন যেহেতু দুই পদে থাকতে পারেন না, সেক্ষেত্রে কে হতে পারেন বঙ্গ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি? সেই নিয়ে একটা জল্পনা অব্যাহত রয়েছে।

Suvendu Adhikari: ‘সাংগঠনিক ব্যাপারে আমি হস্তক্ষেপ করি না, ভবিষ্যতে ইচ্ছাও নেই’, এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন শুভেন্দু?
শুভেন্দু অধিকারী, বিরোধী দলনেতা
Image Credit source: Facebook

Follow Us

কলকাতা: সংগঠনের কাজে তেমন আগ্রহী নন। এমনকী সংগঠনেও হস্তক্ষেপ করেন না। ঠিক এই মন্তব্য এবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গলায়। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন উঠছে তবে কি অভিমানী শুভেন্দু অধিকারী? কারণ লোকসভা ভোটের ফলাফলের পর থেকেই রাজ্য বিজেপি-র অন্দরে শুরু হয়েছে কোন্দল। বারবার বিভিন্ন তাবড় তাবড় বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। চলেছে দড়ি টানাটানি। দায় ঠেলাঠেলি। একাধিকবার দলের সিদ্ধান্তকে ‘দায়ী’ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, খোদ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে বলতে শোনা গিয়েছিল, সব সিদ্ধান্ত তিনি নেন না, কিন্তু রাজ্য সভাপতি হওয়ার দরুন দায় তাঁকেই নিতেই হবে। রাজনৈতিক কারবারিদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন আকার ইঙ্গিতে এই সকল রাজ্য নেতারা কি বিজেপির ফলাফল খারাপের পিছনে আঙুল তুলছেন শুভেন্দু অধিকারীর দিকে? তাই কি বিরোধী দলনেতার অভিমান করে কৌশলী বার্তা দিয়ে বোঝলেন তিনি সংগঠনের কাজে আগেও হস্তক্ষেপ করেননি?

শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “আমাকে যেখানে প্রচার করতে যেতে বলা হয় সেখানে যাই। সংগঠিত করার কাজ আমার নয়। কেবলমাত্র আমার জেলাতে পার্টির সংগঠনের নেতারা রাজ্যের নির্দেশিকাও যেমন পালন করেন, আমার পরামর্শও মেনে চলেন। এর বাইরে সাংগঠনিক ব্যাপারে আমি কোনও দিন হস্তক্ষেপ করি না।” একদিকে, যখন সুকান্ত মজুমদারকে বলতে শোনা গিয়েছে, “সিদ্ধান্ত হয়ত অন্য কেউ নেবে। তবে দায় আমাকেই নিতে হবে।” সেখানে আবার বিরোধী দলনেতাও বলছেন, সংগঠিত করা তাঁর কাজ নয়। তাহলে খারাপ রেজাল্টের দায় কার? উত্তর না মিললেও এর দায় ঠেলাঠেলি যে অব্যাহত রয়েছে সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বর্তমানে বঙ্গ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি পদে রয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। তবে সদ্যই তিনি প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেছেন। বিজেপি-র সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী একজন যেহেতু দুই পদে থাকতে পারেন না, সেক্ষেত্রে কে হতে পারেন বঙ্গ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি? সেই নিয়ে একটা জল্পনা অব্যাহত রয়েছে। আর রাজ্য সভাপতির দৌড়ে প্রথমেই এগিয়ে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর পরিশ্রম, তৃণমূল বিরোধিতার চড়া সুর এই লড়াইয়ে নন্দীগ্রামের বিধায়ককে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছে। কিন্তু ভোটের ফলাফলের পর থেকেই দেখা গিয়েছে, একাধিক রাজ্য বিজেপি-র প্রথম সারির মুখ সংবাদ মাধ্যমের সামনে প্রকাশ্যেই মুখ খুলেছেন। বিশেষ করে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে দিলীপ ঘোষের পরাজয়ের পর প্রথমেই মেদিনীপুর থেকে তাঁকে সরিয়ে কেন কেন্দ্র বদল করা হল সেই প্রশ্ন খোদ দিলীপ যেমন করেছেন, পাশাপাশি প্রশ্ন তুলেছেন সৌমিত্র খাঁ, জগন্নাথ সরকাররা। এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু বলেই ফেললেন, “সাংগঠনিক ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করি না, ভবিষ্যতেও করার কোনও ইচ্ছা নেই।” ফলত, যে সময় রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা নিয়ে চর্চায় প্রথমেই শুভেন্দুর কথা উঠে আসছে সেখানে তিনি রাজ্য় সভাপতি হতে চান না একথাই কি বুঝিয়ে দিয়েছেন এই মন্তব্যে? রাজনীতির কারবারিরা তেমনটাই কিন্তু অনুমান করছেন।

পরাজয়ের পর দিলীপ ঘোষকে একদিকে যেমন বলতে শোনা গিয়েছিল, “কিছু তো আছেই। পার্টির পুরনো প্রতিষ্ঠিত নেতাদের হারানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল? লোকে হারা সিট জেতার জন্য প্ল্যানিং করে। এখন তো মনে হচ্ছে জেতা সিট হারানোর জন্য প্ল্যানিং হয়েছে।” আবার জগন্নাথ সরকার বলেছেন, “মনোনয়ন জমার আগের দিন কেন্দ্র বদল করে দিল।” সৌমিত্রর কথায়, “২৫ জনের কোর কমিটির মধ্য ২০ জন অযোগ্য। দল ভোগ করছে। দিলীপদার লড়াকু মনোভাব ও মুকুল রায়ের রণনীতির যৌথ প্রচেষ্টায় আমরা আগে ১৯টা সিট পেয়েছিলাম। দিলীপ ঘোষের মুখ ছিল। দুটো কাজ হয়েছে। এখানে শুভেন্দুদা আছেন। কিন্তু তাঁর পিছনে যাঁরা আছে তাঁদের তো আমাদের কাজ করতে হবে।”

ফলত, এখানেই ওয়াকিবহল প্রশ্ন তুলছেন কোথাও কি ঘুরিয়ে নাক ধরতে চাইছেন বঙ্গ বিজেপি-র তাবড় মুখরা? নাম না করেই কি শুভেন্দু অধিকারীকে দায়ী করছেন? সেই কারণেই কি অভিমানী বিরোধী দলনেতা? নাকি সবটাই নিছক জল্পনা।

Next Article