কলকাতা: রাজ্য বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে সোমবারও হইচই কাণ্ড। বিধানসভায় মুলতুবি প্রস্তাব এনেছিল বিজেপি। রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছিল পদ্ম শিবির। কিন্তু সেই আলোচনার দাবি খারিজ করে দেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভার অন্দরে শুরু হয়ে হই-হট্টগোল, পরে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। আর এই হইচইয়ের সময় বিজেপির চার বিধায়ক মেনশন করেননি। আর তারপরই অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন যে ওই চার বিধায়ক এই অধিবেশনে আর মেনশন করতে পারবেন না। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সোমবার এমনই দাবি করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এমন পরিস্থিতিতে আগামী বাজেট অধিবেশনে বিধানসভার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথাও ভাবছে বিজেপি শিবির। যদিও বিষয়টি এখনও বিবেচনার পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। আগামী দিনে বৈঠক করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বিধানসভার অভ্যন্তরে শাসক দলের এককথায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে দাদাগিরি ও একপেশে আচারণ নতুন নয়। গত ১৮-১৯ মাস ধরে আমরা তা উপলব্ধি করছি এবং বাংলার মানুষও তাই দেখছে। আমরা আজ একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব এনেছিলাম। যেহেতু রাজ্যের ক্যাবিনেট অযোগ্যদের চাকরির সুপারিশ করেছিল, সমগ্র ক্যাবিনেট এটার জন্য দায়ী বলে আমরা মনে করি। ক্যাবিনেটের দায়বদ্ধতা হল বিধানসভায়। আদালতের কথা বলে, বিচারাধীন বলে অধ্যক্ষ আমাদের অনুমতি দেননি। আমরা ওয়েলে না নেমে, পোস্টার-প্ল্যাকার্ড না নিয়ে, নিজেদের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে আমরা প্রতিবাদ করেছি। আমাদের যে সদস্যরা আজ মেনশনে জমা দিয়েছিলেন, তাঁদের নাম অধ্যক্ষ ডেকেছিলেন। যেহেতু তাঁরা প্রতিবাদের মধ্যে ছিলেন, তাই স্বাভাবিকভাবেই বক্তব্য রাখার পরিবেশ না থাকার কারণে, তাঁরা বক্তব্য রাখেননি।”
বিরোধী দলনেতার আরও বক্তব্য, “অফিসটি অধ্যক্ষের নয়, অফিসটি সচিবের। অধ্যক্ষ মেনশন কেসে কাকে বলতে দেবেন, না দেবেন, সেটি লটারির মাধ্যমে হয়। তিনি বাতিল করতে পারেন। বিধানসভার ভিতরে নিয়ম ঠিকঠাক পালিত হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব অধ্যক্ষের, এটি আমরা জানি। কিন্তু অফিসকে নিতে না বলা… এই কারণে তিনি স্থায়ী সচিবকে জয়েন করতে দেননি। আমরা বিজেপির পরিষদীয় দল আমাদের সহকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে, আগামী কাল-পরশু আমাদের কোনও সদস্য মেনশন কেস জমা দেবেন না।”
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, “বাজেট অধিবেশনে আমরা প্রাথমিক আলোচনার মধ্যে রেখেছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনব আমাদের বঞ্চনা করার জন্য। আমরা কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছি, যাতে অবিলম্বে সচিব যোগ দেন। কারণ বিধানসভার ভিতরে পরিচালনার দায়িত্ব অধ্যক্ষের, বাকিটা হল সচিবালয়। সচিবালয় কোনও রাজনৈতিক দলের হতে পারে না। সচিবালয় বিজেপি বিধায়কদের মেনশন কেস জমা নেবে না, এই নির্দেশ হাউসের মধ্যে দেওয়া যায় না।”