কলকাতা: দলত্যাগ ইস্যুতে মুকুল রায়ের ছকেই বাকি দলছুট বিধায়কদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে চলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ()। সূত্রের খবর, তৃণমূলের দুই দলত্যাগী বিধায়ককে নিয়ে সোমবার বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকরের মাধ্যমে দু’জনেরই বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। এ ক্ষেত্রেও স্পিকার ‘নিষ্ক্রিয়’ রইলে এই দুই বিধায়কের বিরুদ্ধে আইনি পথে হাঁটতে পারে বিজেপি।
দিন দশেক আগেই পদ্মফুল ছেড়ে প্রথমে ঘাসফুলে যোগ দিয়েছিলেন বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। এরপর বিরোধী শিবিরে দ্বিতীয় ধাক্কাটা দেন বাঁকুড়া বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। একই সপ্তাহে উত্তর দিনাজপুরের সৌমেন রায়ও বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে শামিল হয়ে যান। যদিও তাঁর নামে স্পিকারকে কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র বিশ্বজিৎ ও তন্ময়ের বিধায়ক পদ খারিজ করার আবেদন জানিয়েই স্পিকারকে এই চিঠি দিয়েছেন শুভেন্দু। এই চিঠিতে আর্জি জানানো হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব যেন এঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়।
তবে এ ক্ষেত্রে মনে করিয়ে দেওয়া সমীচীন, এই দুই বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই তাঁদের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। যেখানে তিনি এই দুই বিধায়কের কাছে তাঁদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্টভাবে জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সূত্র জানাচ্ছে, সেই চিঠির জবাব সম্ভবত এখনও আসেনি। ওই চিঠিতে জবাব দেওয়ার সময়ও বেঁধে দিয়েছিলেন শুভেন্দু। কিন্তু সেই বিষয়টিও মানা হয়নি। যে কারণে সরকারি স্পিকারকে চিঠি দিয়ে এ বার বিধায়ক পদ বাতিল করার আবেদন জানালেন শুভেন্দু।
তবে বিরোধী দলনেতা স্পিকারের কাছে চিঠি দিলেও এতে আদৌ কোনও লাভ হবে কিনা সেটা নিয়ে এখনও সংশয় থেকেই যাচ্ছে।কারণ মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরও পিএসি চেয়ারম্যান হন, এবং তাঁর বিধায়ক পদ বাতিলের দাবি তুলে ৬৪ পাতার চিঠি স্পিকারকে দেন শুভেন্দু। তা সত্ত্বেও কোনও ফয়সালা হয়নি। কয়েক দফা শুনানি হয়েছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর ফের সেই মামলার শুনানি রয়েছে স্পিকারের ঘরে। সেখানেও মুকুলের বিধায়ক পদ নিয়ে পাকাপাকি কোনও সিদ্ধান্তে আদৌ আসা যাবে কি না, সেটা সংশয়ে ঘেরা থাকছে।
আরও পড়ুন: হেস্টিংসের অফিস থেকে সরল রাজীবের নেমপ্লেট! তবে কি পুজোর আগেই ‘পদ্ম’ বিদায়?
সংবিধানে দলত্যাগ বিরোধী আইনের অস্তিত্ব থাকলেও সেটা কার্যকর করার পুরো বিষয়টিই নির্ভর করে রাজ্যসভার স্পিকারের উপর। তিনি না চাইলে কখনই কোনও দলত্যাগী বিধায়কের বিরুদ্ধে এই আইন কার্যকর করা যায় না। অন্য কোনও দলের সব ধরনের পদ না ছেড়েই দল পরিবর্তন করলে কোনও বিধায়ক বা সাংসদের বিরুদ্ধে এই আইন কার্যকর করা যায়। তবে সেটা আদৌ কার্যকর করা হবে কিনা তা পুরোটাই সংশ্লিষ্ট আইনসভার অধ্যক্ষ বা স্পিকারের উপর নির্ভর করে।
আরও পড়ুন: আগে জানতেন না আইকোর চিটফান্ড? প্রশ্ন শুনেই মেজাজ হারালেন পার্থ