কলকাতা : স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিষেবা পেতে গিয়ে, মাঝে মধ্যেই নাকাল হতে হচ্ছে রোগীদের। বিশেষ করে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেখালে নাকি অনেক সময়েই বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের ভরতি নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা করা হচ্ছে। কোথাও বলা হচ্ছে বেড নেই, আবার কোথাও অন্য কোনও অজুহাত। যে হাসপাতালগুলি এই ধরনের ব্যবহার করবে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিল রাজ্য। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেখালে কোনওভাবেই আর ফেরানো যাবে না রোগীদের। আজ ফের এক দফা নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য ভবন।
আজ স্বাস্থ্য সাথী কার্ড সংক্রান্ত বিষয়ে নতুন উপদেশাবলী প্রকাশ করল স্বাস্থ্য দফতর অধীনস্ত স্বাস্থ্য সাথী কমিটি। সরকারি হাসপাতালে রোগী ভরতি করাতে বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেখাতে না পারলে সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় হেল্থ স্কিম, বা রাজ্য সরকারের হেল্থ স্কিম বা ইএসআই কার্ড জমা করলেও চলবে। যদি কোনও কার্ড না থাকে, তাহলে কার্ড করিয়ে দিতে হবে হাসপাতালকে।
এর পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকেও কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের ওষুধের খরচে বিবেচ্য হবে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের দাম। জরুরি ভিত্তিতে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত প্যাকেজ বহির্ভূত বিল করা যাবে। কিন্তু তারপর ওই রোগীকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনস্ত কোনও না কোনও প্যাকেজের আওতায় আনতে হবে।
তবে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বরুয়া জানিয়েছেন, একদিকে আমাদের বলা হচ্ছে উন্নত মানের পরিষেবা দিতে হবে। কিন্তু আবার স্পেসিফায়েড করে দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ, এর বেশি আপনি করতে পারবেন না। এই প্রস্তাব অবৈজ্ঞানিক এবং বাস্তবসম্মত নয়।
শিলিগুড়ির প্রশাসনিক সভায় গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও একবার বলে দেন, “শুনেছি, বহু বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য সাথী কার্য নিচ্ছে না। এমনটা হলে আগে চিহ্নিত করুন। দ্রুত তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে হবে। দরকার হলে আমি তাদের লাইসেন্স বাতিল করব।” স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে আরও একবার বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে সতর্ক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর আজ এই নির্দেশিকা। তবে রূপক বরুয়ার মন্তব্য থেকে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত অসন্তুষ্ট বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষগুলির একটি বড় অংশ।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই পাঁশকুড়া ম্যেচগ্রামে দুর্ঘটনায় ভেঙেছিল কোমরের হাড়। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ছিল। স্বাস্থ্যবিমার অধীনে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা মিলবে এমনটাই বলা হয়েছিল। কিন্তু মেলেনি কিছুই। কোলাঘাটের গোপালনগর গ্রামের বছর বাইশের হরিপদ সামন্তের স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থেকেও কোনও লাভ হয়নি। অতিমারি পরিস্থিতির মধ্যেও বহু অভিযোগ উঠেছে এমনই। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থেকেও কোভিড হাসপাতালে কোনও সুবিধাই পাননি অনেকে। সে অভিযোগের সংখ্যাও নেহাতেই কম নয়। কিন্তু এবার থেকে এই মানুষগুলির সমস্যার কিছুটা হলেও সুরাহা হবে বলে আশা।
আরও পড়ুন : Samik Bhattacharya: ‘তৃণমূল সরকার নির্বাচনে বিশ্বাসী নয়’, পাহাড়ে ভোটের ঘোষণার দিনের মমতাকে কটাক্ষ শমীকের