Tanmoy Bhattacharya Interview: সত্য বচন, তবে সঠিক সময় ছিল না! আত্মোপলব্ধি তন্ময়ের
Tanmoy Bhattacharya: ২ মে বামেদের নির্বাচনী ভরাডুবির পর দলের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে দিয়েছিলেন দক্ষিণ দমদম বিধানসভা কেন্দ্রের পরাজিত বাম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য। জোর গলায় প্রকাশ্যে বলেছিলেন, এই হারের দায় নিতে হবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকেই। কেন সে কথা বলেছিলেন তিনি?
কলকাতা : ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামেরা বিধানসভা থেকে কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। তাদের সংযুক্ত মোর্চার একমাত্র প্রদীপ টিম টিম করে জ্বলছে নওসাদ সিদ্দিকীর হাত ধরে। কিন্তু সেই সংযুক্ত মোর্চার জোট কি এখনও রয়েছে? উত্তর জানা নেই বাম নেতাদের অনেকেরই। এদিকে ২ মে বামেদের নির্বাচনী ভরাডুবির পর দলের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে দিয়েছিলেন দক্ষিণ দমদম বিধানসভা কেন্দ্রের পরাজিত বাম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য। জোর গলায় প্রকাশ্যে বলেছিলেন, এই হারের দায় নিতে হবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকেই। বাম নেতাদের, তাও আবার তন্ময় বাবুদের মতো পরিচিত নেতাদের মুখে এমন বিদ্রোহের সুর সচরাচর শোনা যায় না।
সেদিন কী বলেছিলেন তন্ময় ভট্টাচার্য ?
বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের পর রাজ্যের দ্বিতীয় শক্তিশালী দল হিসেবে উঠে আসে বিজেপি। বাম ও কংগ্রেস কার্যত নিশ্চিহ্ন। একটি আসনও পায়নি। এই ফলাফল প্রকাশ্যে আসতেই এক সংবাদ মাধ্যমের টক শোয়ে দলের বিরুদ্ধে রণং দেহি মূর্তি ধারণ করেন তন্ময় ভট্টাচার্য। বলেছিলেন, লোকসভা ভোটে দলকে শূন্য করে দিয়ে কেউ তার দায় নেয়নি। বিধানসভা ভোটেও দল শূন্য। এবারও কেউ দায় নেবেন না? এটা তো হতে পারে না। এই বিপর্যয়ের দায় নিতে হবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে।”
উল্লেখ্য, এরপর তন্ময়বাবুর সুর শোনা গিয়েছিল কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, অশোক ভট্টাচার্যের মতো প্রথম সারির নেতাদের মুখেও। কান্তি বাবু আলিমুদ্দিনে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। বলেছিলেন, দলে মরচে ধরেছে। খোলনলচে বদলে ফেলার দাবি জানিয়েছিলেন। একইরকমভাবে অশোক ভট্টাচার্যও সংযুক্ত মোর্চার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। বলেছিলেন, “আমাদের জাতও গেল, পেটও ভরল না।”
কেন সেদিন দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তন্ময় বাবু?
TV9 বাংলার কথা বার্তা অনুষ্ঠানে এক একান্ত আলাপচারিতায় তন্ময় বাবু বলেন, “আমার পাঁচ বছরের বিধায়ক জীবনে, দৈনিক ভাতার একটা টাকাও আমার নিজের জন্য খরচ করিনি। একটি নির্দিষ্টি বুথ এলাকায় কম বেশি ১৬ টা বাড়ি আগুনে ভষ্মীভূত হয়েছিল। আমি পরের দিন পৌঁছে ১৬ টা বাড়িতেই ১০ হাজার টাকা করে চেক কেটে দিয়ে এলাম। দুই জন ফেরত দিয়ে দেন। তৃণমূলের লোকেরা এসে ভয় দেখান, যদি বিধায়কের টাকা নেন, তাহলে কোনও পুরসভার কোনও সরকারি সাহায্য পাবেন না। তাঁরা প্রায় কাঁদতে কাঁদতে এসে আমার কাছে চেক ফেরত দেন। যখন ভোটের রেজাল্ট গোণা হচ্ছে, সেই বুথেও আমি তৃতীয়। যে বুথের মানুষ জানে আমি নিজের বিধায়ক ভাতা থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিলি করেছি, তার মধ্যে ২০ হাজার নেননি। সেই বুথেও আমি তৃতীয়। আমিও তো রক্ত মাংসের মানুষ। একটা তীব্র যন্ত্রণা এবং তীব্র কষ্ট ছিল আমার ভিতর। তার সঙ্গে ছিল তীব্র আবেগ ও তীব্র হতাশা। ফলে আমি মে মাসের ২ তারিখ অনেক কথা বলেছি।”
‘সঠিক কথা, তবে সঠিক সময় ছিল না’, মন্তব্য তন্ময় ভট্টাচার্যের
সেই সঙ্গে তন্ময় বাবু এও বলেন, “আমি মনে করি না, সব কথাগুলো আমি ভুল বলেছি। কথাগুলো হয়তো ঠিক। আজও আমি বলছি। কথাগুলির মধ্যে অনেকগুলি যে ঠিক, তা তো পরবর্তীতে প্রমাণিতও হয়েছে। কারণ, পরবর্তীকালে পার্টি যে মূল্যায়ণ প্রকাশ করেছে, যা ছাপার আকারে বিক্রি হচ্ছে, তাতে অনেকগুলি কথা গৃহীত হয়েছে।”
সেই প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, “কিন্তু একইসঙ্গে এটাও ঠিক যে মে মাসের ২ তারিখ যখন সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে আমাদের কমরেডরা আক্রান্ত হচ্ছেন, রক্তাক্ত হচ্ছেন, আমাদের পার্টি অফিসগুলো আগুনে জ্বলছে, আমাদের পোলিং এজেন্টদের বাড়িতে বাড়িতে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী হামলা করছে, সেই সময় টেলিভিশনে দলের একজন দায়িত্বশীল প্রতিনিধি হিসেবে আমি এই কথাগুলো বলেছি। এই সময় নির্বাচন আমার দিক থেকে ঠিক হয়নি। আমি যেমন সব কথা প্রত্যাহার করছি না, তেমনই সেই সময় নির্বাচন যে ভুল হয়েছে, এটাও স্বীকার করছি।”
আরও পড়ুন : UGC Notice: চিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ডিগ্রি স্বীকৃতি পাবে না এ দেশে! বিবৃতি দিয়ে জানাল ইউজিসি