কলকাতা: নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে (Amartya Sen) নিয়ে সম্প্রতি বিশ্বভারতীয় উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে বিভিন্ন মহলে। উপাচার্যের সমর্থনে মুখ খুলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষও। দিলীপের দাবি, তিনি নাকি এই কথা অনেক আগে থেকেই বলে আসছেন। এবার অমর্ত্য সেনের নোবেল বিতর্ক নিয়ে কড়া সমালোচনার সুর তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের (Tapas Roy) গলায়। টিভি নাইন বাংলার কথাবার্তা অনুষ্ঠানে ম্যানেজিং এডিটর অমৃতাংশু ভট্টাচার্যর সঙ্গে এক একান্ত আলাপচারিতায় এই বিতর্ককে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলেই ব্যাখ্যা করলেন তাপস রায়।
তাপস রায় বললেন, “কোথাও একটা পড়েছিলাম, একটি সময় আসবে যখন বিদ্বজ্বনের তাঁদের বিদ্যা ও পাণ্ডিত্যের জন্য লাঞ্ছিত হবেন। আর কম জানা, অর্ধশিক্ষিতরা এই পণ্ডিতদের উপর রাজ করবে। সেই কথাটি আজ আমার ভীষণভাবে মনে পড়ছে।” পাশাপাশি অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা নিয়ে অতীতে যে ধরনের সমালোচনা হত, সেই প্রসঙ্গও তুলে আনেন তাপস রায়। বললেন, সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা নিয়ে অনেকেই অনেক ব্যাখ্যা করতেন। কিন্তু সত্যজিৎ রায় নিজেই বিভিন্ন সময়ে জানাতেন, তিনি তা বোঝাতে চাননি। কী বোঝাতে চেয়েছিলেন, সেই ব্যাখ্যাও দিতেন। কিন্তু তথাকথিত সমালোচকরা সেই ব্যাখ্যা দিতেন না বলেই দাবি তাপসের।
তৃণমূল বিধায়কের কথায়, দেশে একটি আইন হওয়া দরকার যেখানে উল্লেখ থাকবে কে কার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারবে। নোবেলজয়ী বিরুদ্ধে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যেভাবে কথা বলা হচ্ছে, তাতে ভীষণ আশ্চর্য হচ্ছেন তাপস রায়। বললেন, “তাঁদের পাণ্ডিত্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে বন্দিত। নোবেলজয়ীর বিরুদ্ধে বলার যে আস্পর্ধা ও আস্ফালন, তা বরদাস্ত করা যায় না।”
পাশাপাশি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের হাতেখড়ির অনুষ্ঠান ঘিরে বিভিন্ন মন্তব্য ও বিতর্ক নিয়েও মুখ খুললেন তাপস রায়। বিধায়কের বক্তব্য, কোনও বিতর্ক তৈরি হয়নি। বরং, কিছু রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে বঙ্গ বিজেপি বিতর্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তাঁর সাফ কথা, যদি কেউ বাংলার সঙ্গে একাত্ম হতে চান, যদি কেউ বাংলাকে জানতে-বুঝতে চান, যদি কেউ বাংলার প্রতি তাঁর আকর্ষণের কথা বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চান, তাতে আপত্তি কীসের! সুর চড়িয়ে তাপস রায় আরও বলেন, ‘একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল (রাজ্যপাল হিসেবে) এমন কাউকে চাইছে, যিনি তাদের কথা বলবেন।’