কলকাতা: বাংলায় বাড়ছে অবাঙালিদের সংখ্যা? বিপন্ন বাঙালির আবেগ থেকে সত্ত্বা? খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতার মুখে আশঙ্কার কথা শোনা যেতেই তা নিয়ে তীব্র চাপানউতোর চলছে গোটা রাজ্যেই। মমতা তো বলেই দিয়েছেন, “এরপর তো এই রাজ্যের পরিচয় নষ্ট হয়ে যাবে। বাংলায় কথা বলার লোক খুঁজে পাবেন না।” একইসঙ্গে সতর্ক করে দিয়ে এও বলেছেন, “প্রতিটা রাজ্যের একটা পরিচয় আছে, সংস্কৃতি আছে। তবে বাংলার পরিচয় যাঁরা নষ্ট করার চক্রান্ত করছেন আমি তাঁদের সকলকে সাবধান করছি।” আচমকা মমতার মুখে এ কথার পিছনেও কিন্তু শুভেন্দু দেখছেন ভোট ব্যাঙ্কের অঙ্ক। তাঁর দাবি, হিন্দি ভাষাভাষী লোকজনের আধিক্য যেখানে আছে সেখানে হেরেছেন মমতা। সেই রাগ থেকেই তাঁদের টার্গেট করছেন।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু স্পষ্ট বলেন, “উনি হিসাব করে দেখেছেন হিন্দি ভাষাভাষীর লোকজন বয়েছেন এমন বুথগুলিতে হেরেছেন। আসানসোলের কুলটিতে হেরেছেন, রানিগঞ্জ প্রায় সমান সমান, দুর্গাপুর শহরে হেরেছেন, ভাটপাড়ায় হেরেছেন। উনি খুব চতুরভাবে বিশ্লেষণ করে দেখেছেন এটা।”
এরপরই খানিক আক্ষেপের সুর শুভেন্দু বলেন, “একসময় অবিভক্ত বাংলার অংশ ছিল বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড। আগে এ জিনিস কেউ ভাবত না। আগে এসব হয়নি। এবারে কীর্তি আজাদকে অনেক বাঙালি ভোট দিয়েছেন। বাঙালিরা এসব ভাবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিনি এই যে বীজটা বপন করছেন এটা খুব খারাপ ইঙ্গিত।” এরইমধ্যে এই ইস্যুতে মমতাকে তোপ দেগেছেন বামেরাও। বাম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য তো বলছেন, “আইনি কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে এরকম নাটকবাজি করাটা অত্যন্ত অশ্লীল, এটা অসভ্যতামি। RSS এর পরামর্শে নড়াচড়া করেন মমতা। এই বিভেদই আরএসএস চায়।”
অন্যদিকে এদিন এই ইস্যুতে লাগাতার মমতার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে গিয়েছেন শুভেন্দু। দেশ বিরোধী বলেও তোপ দেগেছেন। বলছেন, “তিনি বলছেন স্বাস্থ্য খাতে ৫টা রাজ্যকে টানতে হচ্ছে। তাহলে আপনি ভেলোর বা কটকে গিয়ে দেখুন, বেঙ্গালুরুতে, মুম্বইতে যান। সেখানে গিয়ে দেখবেন সেখানে বেশিরভাগ রোগী পশ্চিমবঙ্গের। দেশের মধ্যে আর একটা দেশ বাংলা নয়। পশ্চিমবঙ্গ একটা অঙ্গরাজ্য। তাই মমতার মানসিকতার প্রয়োজন করা দরকার। মমতা হিন্দি বলা মানুষদের টার্গেট করে এসব বলছেন। এটা দেশ বিরোধী বলে আমি মনে করি।”