কলকাতা: স্পিকারের কড়া নির্দেশ রয়েছে। বিধানসভা চত্বরে কোনওভাবেই প্রবেশ করতে পারবেন না কেন্দ্রের মোতায়েন করা নিরাপত্তারক্ষীরা। যার দরুণ আগামিকাল থেকে শুরু হতে চলা বিধানসভা অধিবেশনটা বাইরের ফুটপাথেই কাটাবে হবে তাঁদের। সেই কথা মাথায় রেখে বিধানসভা ভবনের বাইরের ফুটপাথে বিশেষ ছাউনির বন্দোবস্ত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য। কিন্তু অধিবেশন শুরুর আগে সেই ছাউনিতেও ভোলবদল। তৈরি হওয়ার আগে যে ছাউনির কাপড় সাদা ও কফি রঙের ছিল, কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর তা বদলে গেল নীল-সাদায়।
তৃণমূলের কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকার এবং এর প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এই নীল-সাদা রং। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় নবান্ন হোক, তাঁর প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চ হোক, ছোট-বড় কোনও সরকারি দফতর হোক, শহরের পেল্লাই ফ্লাইওভার হোক বা রাস্তার ধারে ফুটপাথের রেলিঙের রং। শহর এবং রাজ্যের সর্বত্রই এই নীল-সাদা রঙের উপস্থিতি যে কোনও মানুষের চোখ টানতে বাধ্য। খাতায়-কলমে কোনও সিলমোহর না থাকলেও এই নীল-সাদা রং যেন সরকারের একপ্রকার প্রতীক রূপে নিজেকে তুলে ধরে। সেই নীল-সাদা রঙে মোড়া ছাউনিই এ বার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষীদের বাঁচাবে রোদ-ঝড়-জল থেকে।
কিন্তু কেন এই রংবদল? এর কোনও সদুত্তর এখনও পাওয়া যায়নি। ছাউনি তৈরির কাজে মগ্ন কর্মীরা এই নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। তবে তাঁদের হাবেভাবে স্পষ্ট, ‘উপরমহলের’ নির্দেশেই তাঁরা এই কাজ করছেন। বিধানসভার বাইরে ছাউনি তৈরির প্রস্তাব অবশ্য স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই দিয়েছিলেন। যদিও রংবদলের নির্দেশও তাঁর কি না, সেই বিষয়টি জানা যায়নি। বিজেপি বিধায়কদের শপথ নেওয়ার দিন শুভেন্দু অধিকারীর দেহরক্ষীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন স্পিকার।
আরও পড়ুন: হুইপ জারি তৃণমূলের, অধিবেশনের প্রথমদিন বাধ্যতামূলক বিধায়কদের উপস্থিতি
বিমানবাবুর স্পষ্ট যুক্তি ছিল, সংসদে যদি রাজ্য সরকারের নিরাপত্তারক্ষীরা প্রবেশ করতে না পারে তবে বিধানসভায় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনী প্রবেশ করবে কেন? কিন্তু এরপর বিজেপি বিধায়কদের একাংশ প্রশ্ন তোলেন, তবে কি রক্ষীরা রোদে পুড়বেন আর জলে ভিজবেন? তারপরই এই অস্থায়ী ছাউনি তৈরির প্রস্তাব দেন অধ্যক্ষ।
আরও পড়ুন: ধনখড়ের ছবিতে দেবাঞ্জনের দেহরক্ষী! ‘মাঝে মধ্যে খাম-টাম যেত’, বিস্ফোরক দাবি তৃণমূলের