কলকাতা: ফের একবার ধাক্কা এসএসসি (SSC)-র। সুপার নিউমেরারি পোস্টের নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ল আরও। আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে এই নিয়োগ করার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই নিয়োগ নিয়েই প্রশ্ন তুলে মামলা হয়। বুধবার আদালত যা নির্দেশ দিয়েছে, তাতে আপাতত কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার ওপর নিয়োগ বন্ধ থাকবে।
কর্মশিক্ষায় ৭৫০টি ও শরীর শিক্ষায় ৮৫০টি সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরির কথা জানানো হয়েছিল কমিশনের তরফে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার পর মামলাকারীরা জানান, কর্মশিক্ষা ও শারীর শিক্ষায় এমন ৬০ জন চাকরি করেন, যাঁদের প্রাপ্ত নম্বর মামলাকারীদের থেকে কম। সেই নিয়েই মামলা চলছিল আদালতে।
কমিশন দাবি করেছিল, যাঁদের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তাঁদের তিন বছর চাকরি হয়ে গিয়েছে। তাঁদের কাজ নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। তাই তাঁদের চাকরি রেখেই নতুন নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি বসু। তিনি বলেছিলেন, ‘এঁরা শিক্ষক হতে পারেন না। এঁরা শিক্ষক হন, তাতে রাজ্যের ক্ষতি নয়, ছাত্রদের জীবনের ক্ষতি হবে।’
এই নিয়োগ সংক্রান্ত অন্য একটি একটি মামলা চলছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের বেঞ্চে। সুপার নিউমেরারি নিয়োগের নির্দেশ কে দিয়েছে, সেই ‘মূল চক্রীকে’ খুঁজতে সম্প্রতি সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই মামলায় শিক্ষা দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারিকেও তলব করেছিলেন বিচারপতি। যদিও রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পর সেখানে হাইকোর্টের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে তার আগেই হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে হাজিরা দিয়েছিলেন শিক্ষা সচিব।
শিক্ষা সচিব মণীশ জৈন আদালতে জানিয়েছেন, অবৈধ উপায়ে চাকরি প্রাপকদের চাকরি যাবে না, প্রয়োজনে নতুন করে শূন্যপদ তৈরি করে তাঁদের চাকরি বহাল রাখা হবে, এই সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেওয়া হয়েছিল। এই পদ কে তৈরি করেন, সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এটা একটা সিদ্ধান্ত। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এই তথ্যের কথা জানিয়েছিলেন। আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথাও বলেছিলেন ব্রাত্য।
অন্যদিকে, এই মামলা চলাকালীন এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। শিক্ষক বদলির বিষয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি। তিনি মন্তব্য করেন, ‘রাজ্যের অধিকার আছে বদলি করার। এবার আইন করে সেটা বন্ধ করুন। শিক্ষকরা হয় গ্রামে যাবে, না হয় তাঁদের চাকরি ছাড়তে বলা হোক। গ্রামের ছাত্ররা বঞ্চিত হচ্ছে।’