কলকাতা: শনিবার ভোর চারটে। সকাল দশটা। সকাল এগারোটা। একের পর এক শিশু মৃত্যুর খবর আসছে বি সি রায় ( B C Hospital) শিশু হাসপাতাল থেকে। প্রত্যেকেই জ্বর, কাশি, সর্দি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিল হাসপাতালে। লাগাতার শিশু মৃত্যুর সেই খবর প্রকাশ্যে আনে Tv9 বাংলা। তাই কি বি সি রায় হাসপাতালের স্বাস্থ্য অর্ধিকর্তার ক্ষোভের মুখে সংবাদ মাধ্যম? এ দিন শিশু মৃত্যু নিয়ে খবর করতেই বেজায় রেগে গেলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী। হাত দিয়ে সরিয়ে দিলেন ক্যামেরা। এমনকী সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরা বাজেয়াপ্ত করার হুমকিও দেন তিনি।
আজ বি সি রায় হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী। সেই সময় Tv9 বাংলার ক্যামেরাপার্সন তাঁর ছবি তোলেন। তখনই বেজায় রেগে যান তিনি। বলেন, “এই ছবি তুলবে না। সরো…সরো। অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা যায় না। ক্যামেরা নিয়ে নেব। ক্যামেরা বাজেয়াপ্ত করে নেব।”
এই বিষয়ে চিকিৎসক সংগঠনের নেতা মানস গুমটা বলেন, “বিষয়টি ঠিক হয়নি আমরা মনে করি। সংবাদ মাধ্যম তার কাজ করবে। স্বাস্থ্য আধিকারিক তার কাজ করবে। খবর করা বা ছবি তোলার ক্ষেত্রে সাধারণভাবে কোথাও কোনও আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু আমরা যে পরিস্থিতিতে বাস করছি সেখানে এই সব খবর শুনতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য আধিকারিকের এই ভঙ্গিমা আমরা চিকিৎসক হয়েও সমর্থন করতে পারছি না।” বিজেপি নেতা তথা চিকিৎসক ইন্দ্রনীল খাঁ বলেন, “স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রী খোদ মিডিয়াকে ভয় দেখান। সবসময় হুমকি দেন। কোনও রকম অপ্রিয় জিনিস যাতে সামনে না আসে সেই কারণেই মিডিয়াকে হুমকি দিয়ে রাখেন। তাই স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই ধরনের নির্দেশ দিয়েছেন অধিকর্তাকে। এ নতুন কিছু না। অ্যাডিনো ভাইরাসের যে বাড়-বাড়ন্ত হচ্ছে তা যদি স্বীকার না করতে চান তাহলে তা মিডিয়ায় নিয়ে আসবেন না।” তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা যায়? একটা হাসপাতালে কতজন সুস্থ হয়ে উঠছেন তা না দেখিয়ে কতজন মারা যাচ্ছে তা বড়-বড় করে দেখালে জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করবেন তাও কি বাঞ্ছনীয়? সাংবাদিকতার একটা নিয়ম আছে।”