কলকাতা: সংযুক্ত মোর্চায় থেকে কলকাতা ও হাওড়া পুরভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফ। সূত্রের খবর, আইএসএফের রাজ্য কমিটির বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে রবিবার। তবে ‘সাম্প্রদায়িক শক্তি’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কেউ যদি আইএসএফের দিকে হাত বাড়ায়, তাহলে তারাও মৈত্রীর হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত।
রবিবার ফুরফুরা শরিফে আইএসএফের কেন্দ্রীয় কমিটির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কলকাতা ও হাওড়া পুরসভার ভোটে আইএসএফ আর সংযুক্ত মোর্চার ‘ব্যানারে’ লড়াই করবে না। সূত্রের দাবি, এই বৈঠকে এও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কলকাতা ও হাওড়া পুরসভার বাছাই করা আসনে লড়বে আইএসএফ।
ভোট আসে, সঙ্গে আসে জোটের জটিলতা। প্রথমে বাম-কংগ্রেস জোট বেঁধেছিল এ রাজ্যে ভোটে লড়বে বলে। একুশের ভোটের আগে সেই জোট হল সংযুক্ত মোর্চা। সেখানে যোগ দিল আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ। ভোটের আগে জোর প্রচার, ভোটেও চলল লড়াই। কিন্তু এত কিছুর পরও ২ মে থেকে এ রাজ্যের পরিষদীয় রাজনীতি থেকে সিপিএম, কংগ্রেসের অস্তিত্বটাই বিলুপ্ত হয়ে গেল। বরং উল্লেখযোগ্য ভাবে আইএসএফ একটি আসন জিতে বিধানসভায় প্রবেশের অধিকার আদায় করে নেয়।
এই সংযুক্ত মোর্চা নিয়ে একুশের ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই নানা সমালোচনা-বিতর্ক শুরু হয়। বিশেষ করে বামফ্রন্টের শরিকি দলগুলি আইএসএফকে সঙ্গে নিয়ে ভোটে লড়ার বিষয়টিকে মোটেই ভাল ভাবে নেয়নি। বরং তাদের বক্তব্য ছিল, সাধারাণ মানুষের কাছে এই জোট বিরূপ বার্তা দিয়েছে। কারও কারও মনে হয়েছে, সিপিএমের এই সিদ্ধান্তে কোথাও গিয়ে ধর্মীয় উদারতার যে বার্তা তা ক্ষুন্নই হয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই সংযুক্ত মোর্চার জন্মলগ্নে ব্রিগেডের মঞ্চে মহম্মদ সেলিমের মতো যে সমস্ত নেতারা অত্যন্ত তৎপর ছিলেন, ভোটে ভরাডুবির পর তাঁদের খুব একটা আর সামনে উঠে আসতে দেখা যায় না। অন্যদিকে সীতারাম ইয়েচুরিও জানিয়ে দিয়েছিলেন, জোট হয়েছিল ভোটের জন্য। ভোট যখন মিটে গিয়েছে তা হলে আর জোট কী!
আইএসএফ সূত্রে খবর, দল মনে করছে ভোটের পরাজয়ের জন্য বার বার তাদের কাঠগড়ায় তুলছে সংযুক্ত মোর্চার শরিকরা। কিন্তু কেন এমনটা হবে প্রশ্ন আইএসএফের অন্দরেই। রাজ্যে নতুন সংগঠন শুরু করেই ভোটে একটা আসন জিতে নেওয়া দল এই দায় কেন একা মাথায় নেবে? উঠছে সে প্রশ্নও। সংযুক্ত মোর্চার শরিকদের নির্বাচনে কী ভূমিকা ছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা উচিৎ ছিল বলেই মনে করে আইএসএফের কেউ কেউ।
উপনির্বাচনের সময় থেকেই জোটের টালমাটাল পরিস্থিতি বোঝা যাচ্ছিল। কংগ্রেসের তরফে অধীর চৌধুরী একাধিক বার বলেছেন, জোট তাঁরা ভাঙেননি। ভবানীপুরের ক্ষেত্রে সর্বভারতীয় কংগ্রেস চেয়েছিল তাই তাঁরা প্রার্থী দেননি। শান্তিপুরের ক্ষেত্রে আবার কংগ্রেসেরও প্রার্থী ছিল। তবে পুরভোটের ক্ষেত্রে বামেদের অবস্থান দেখেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন।
সোমবার রাজ্য বামফ্রন্টের বৈঠক রয়েছে পুরভোট নিয়ে। আলোচনায় থাকবে রাজ্যে পুরভোটে জোট না কি একলা চলবে বামেরা? কতগুলি আসনে প্রাথী দেবে বামেরা। প্রাথী বাছাইয়ের ফর্মুলা কী হবে, তা নিয়েও কথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই সূত্রের দাবি।
আরও পড়ুন: ছ’ ঘণ্টা টিকিট কাটা যাবে না, আগামী সাতদিনের জন্য বড় ঘোষণা রেলের