কলকাতা: তিলজলা শিশুকন্যা খুনের ঘটনায় চলতি মাসের ৩১ তারিখ রাজ্যে আসতে পারে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধি দল। তিলজলাকাণ্ডে মৃত শিশুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন NCPCR এর চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো। এছাড়াও রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে পারেন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো। ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশের ডিজি ও মুখ্যসচিবকে নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় শিশুসুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো টুইট করে জানিয়েছেন, তিলজলার ঘটনায় তাঁরা উদ্বিগ্ন। টুইটে লেখা হয়েছে, ‘‘কলকাতায় সাত বছরের শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় কমিশন উদ্বিগ্ন। ওই রাজ্যের ডিজিপি এবং মুখ্যসচিবের কাছে আমরা নোটিস পাঠাচ্ছি। আমাদের একটি প্রতিনিধি দল এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ জানবেন।’’
শিশুকন্যা খুনে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধিতে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি শিশুকন্যার আবাসনের একতলার ফ্ল্যাটেই থাকেন। রবিবার সন্ধ্যায় তাঁরই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় শিশুকন্যার বস্তাবন্দি হাত-পা বাঁধা দেহ। শিশুকন্যার দেহে একাধিক ক্ষত ছিল। মাথায় বড় বড় ক্ষত ছিল। স্ক্রু ড্রাইভার জাতীয় কিছু জিনিস দিয়ে ফুটো করার চিহ্ন মিলেছে। পরিবারের তরফ থেকে কেবলই খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ প্রথম থেকেই অনুমান করছিল, খুনের আগে যৌন নির্যাতন হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও তার উল্লেখ থাকে। শিশুকন্যার যৌনাঙ্গে ক্ষতচিহ্ন ছিল বলে পুলিশ জানাচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে এই ঘটনার নেপথ্যে তন্ত্রযোগের একটি তত্ত্বও উঠে আসে।
জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্তের কোনও সন্তান ছিল না। কোনও তান্ত্রিকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই কারণের শিশু বলি নাকি, তা ভাবাচ্ছিল পুলিশকেও। কিন্তু এক্ষেত্রে তান্ত্রিকের কথা উঠলেও সেটি কতটা সত্য, তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। কারণ তান্ত্রিকের কথায় শিশু বলি দিলে শরীর অক্ষত থাকার কথা। কিন্তু এই শিশুর ক্ষেত্রে তা ছিল না। উল্টে তার উপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছিল অভিযুক্ত, অন্তত সে তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। অভিযুক্তকে জেরা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। যে তান্ত্রিকের কথা তিনি বলছেন, তাঁর সন্ধান পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু সেই তান্ত্রিকের ঠিকানা ঠিক করে বলতে পারছেন না অভিযুক্ত। তাই খুঁজে পেতে সমস্যা হচ্ছে। অভিযুক্তের বক্তব্যও যাচাই করে দেখা হচ্ছে।