কলকাতা : বাবার মৃত্যুর পর তাঁর চাকরিটাই পেয়েছিলেন সৎ মা পিঙ্কি। অথচ চাকরি পাওয়ার পর থেকে সৎ ছেলের দায়িত্ব নেননি বলেই অভিযোগ। পূর্ব মেদিনীপুরের এক পরিবারের করা মামলায় মঙ্গলবার ওই সৎ মা পিঙ্কি টিংগুয়াকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এ দিন তিনি নির্দেশ দেন, সৎ ছেলেকে টাকা না দিলে বেতন বন্ধ করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি সৎ ছেলেকে যাতে একটি কংক্রিটের বাড়ি করে দেওয়া হয়, সেই সুপারিশ করেছেন শিশু সুরক্ষা দফতরকে। পূর্ব মেদিনীপুরের ওই পরিবারের তরফে মামলা করা হয়েছিল আগেই পিঙ্কির সৎ ছেলে সমীরকে স্কুলে ভর্তি করার বন্দোবস্তও করা হয়েছিল আদালতের হস্তক্ষেপেই।
আদালতের নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার সৎ মা পিঙ্কিকে আদালতে হাজির করে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। কেন ছেলেকে টাকা দিচ্ছেন না, সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে পিঙ্কি আদালতে জানান, স্বামীর ঋণ শোধ করতে গিয়ে ছেলেকে টাকা দিতে পারেননি তিনি। বকেয়া টাকা তিনি ইতিমধ্যে দিয়ে দিয়েছেন বলেও দাবি করেন ওই মহিলা।
বিচারপতি পিঙ্কিকে প্রশ্ন করেন, এত টাকা ঋণ কার কাছ থেকে করেছেন তিনি, কারা দিয়েছেন এই ঋণ? তাঁদের এত টাকা আছে? উত্তরে সৎ মা জানিয়েছেন, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন তিনি।
বছর কয়েক আগে সমীরের মায়ের মৃত্যু হয়। এরপর দ্বিতীয় বিয়ে করেন তাঁর বাবা। ২০১৫ সালে মৃত্যু হয় সমীরের বাবার। রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর তাঁর বাবার স্কুলের গ্রুপ ডি পদের চাকরি পান সৎ মা পিঙ্কি। চাকরি পেয়ে সৎ ছেলে তথা স্বামীর পরিবারের দেখাশোন করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি। এর কিছুদিন পরই সংসার ছেড়ে চলে যান সৎ মা। টাকাও দেন না ঠিক মতো। আপাতত সমীর ও তাঁর ঠাকুর্দা দয়ানাথ একসঙ্গে থাকেন। দয়ানাথ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আগেই সমীরকে স্কুলে ভর্তি করার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করেছিল আদালত। সম্প্রতি ৮০ শতাংশ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছে সমীর।
শুধু তাই নয়, দাদু ও নাতি মিলে ত্রিপলের নীচে থাকতেন দেখে তাঁদের বাড়ি তৈরির নির্দেশও দিয়েছিল আদালত। সাঁওতালদের জন্য যে সরকারি প্রকল্প আছে, সেই প্রকল্প অনুযায়ী, তাঁদের বাড়ি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।