কলকাতা: বারবার কর্মবিরতিতে ব্য়হত হচ্ছে কাজ। তাই সরকারকে ডিএ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার পরামর্শ দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালতের এই পরামর্শে খুশি আন্দোলনকারীরাও। কিন্তু শাসক দল বলছে, ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছে আদালত। যে আদালত ডিএ-কে মৌলিক অধিকার বলেছিল সেই আদালতই আলোচনার কথা বলছেন বলে মন্তব্য করেছেন তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। তবে বিজেপির মতে, এমন আলোচনাতেও আদতে কোনও প্রভাব পড়বে না। সরকার এই ইস্যুতে কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেছে গেরুয়া শিবির।
তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল হাইকোর্ট। প্রথমে বলেছিল ডিএ মৌলিক অধিকার। কিন্তু সরকার বলেছে, ডিএ মৌলিক অধিকার হতে পারে না। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। এখন মামলাকারীরা দেখছেন, সুপ্রিম কোর্ট থেকে অর্ডার বের করা দুরুহ।’ তৃণমূল নেতার দাবি, ডিএ যে মৌলিক অধিকার, এই যুক্তি ধোপে টিকছে না বলেই মামলাকারীরা এবার আলোচনায় বসা আর্জি জানিয়েছেন। আর আদালতও তার আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে।
জয়প্রকাশের প্রশ্ন, ‘কাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে সরকার?’ তাঁর দাবি, ৮০ শতাংশ কর্মী ডিএ-র বিষয়ে কোনও কথাই বলছেন না। তাঁরা নিজেদের কাজ করে যাচ্ছেন। তৃণমূল নেতা আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে আন্দোলনকারীরাই প্রশ্ন তুলবেন, তাদের ভুল পথে চালিত করা হল কেন।’ তিনি উল্লেখ করেন, আলোচনার কথা আগেও বলেছে সরকার।
বাম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের দাবি, সরকার কোনও পদক্ষেপ না করাতেই বলেন, ‘প্রশাসন চলছে না। তাই বারবার বিভিন্ন বিষয়ে আদালতকে নির্দেশ দিতে হচ্ছে। সরকার অচল, তাই হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে আদালতকে। এটা দুঃখজনক। প্রশাসন যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন আদালতকেই জাগাতে হয়।’
অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রথম থেকেই আমাদের এই আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন রয়েছে।’ কিন্তু আদতে আলোচনা করে কোনও লাভ নেই বলেই মনে করেন তিনি। সুকান্ত বলেন, ‘সরকার এতটাই অসংবেদনশীল যে এই আন্দোলন কোনও গুরুত্ব রাখে না। ভোটের বাইরে আর কোনও কিছুতেই গুরুত্ব দেয় না এই সরকার।’
কাজ বন্ধ রাখার ফলে ৪৩৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এমন অভিযোগ তুলেই একটি মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকারের করা সেই মামলার শুনানি ছিল হাইকোর্টে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম সরকারকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার পরামর্শ দিয়েছেন।