কলকাতা: কোনও অনৈতিক কাজকে সমর্থন নয়। দুর্নীতিযুক্ত কাজকে কোনও প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর এমনই বার্তা দিল তৃণমূল। বীরভূমের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেনি দল। তবে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠতে তৃণমূল নেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য স্পষ্ট জানান, দুর্নীতির প্রশ্নে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে বোলপুরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাপুটে নেতা অনুব্রতকে। এ দিন বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে চন্দ্রিমা বলেন, ‘দুর্নীতি নিয়ে জিরো টলারেন্স-এর কথা পরিস্কার করে দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘দলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, মানুষকে যদি ঠকিয়ে কোনও কাজ করা হয়ে থাকে, দল সেই কাজকে সমর্থন করে না। কেউ সেই কাজ করে থাকলে তাঁকেও দল সমর্থন করে না।’ চন্দ্রিমার দাবি, মানুষের সমর্থন নিয়েই ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। তাই মানুষের কথা সবার আগে ভাবার বার্তা দিয়েছেন নেত্রী।
তবে কি অনুব্রতর বিরুদ্ধে ওঠা আভিযোগ বরদাস্ত করছে না তৃণমূল? সরাসরি এমন কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি দলের তরফে। পার্থর মতো অনুব্রতর বিরুদ্ধেও কি কড়া পদক্ষেপ করবে দল? এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে চন্দ্রিমা বলেন, ‘আমাদের দলের একটা শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি আছে। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা যথা সময়ে জানতে পারবেন।’ অনুব্রত প্রসঙ্গে কোনও কড়া বার্তা না দেওয়া হলেও দল যে আপাতত সরাসরি তৃণমূল নেতার পাশে দাঁড়াচ্ছে না, চন্দ্রিমার কথায় তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে।
অনুব্রতকে নিয়ে যেমন বিতর্ক হয়েছে অনেক, অভিযোগও উঠেছে ভূরি ভূরি। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে সবসময়েই অনুব্রতর পাশে থাকতে দেখা গিয়েছে। এমনকি খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের হাত সবসময় ছিল অনুব্রতর মাথায়। তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের পরও একসময় মমতার যুক্তি ছিল ‘ওর ব্রেনে অক্সিজেন কম যায়’। বৃহস্পতিবার সকালেও দলের বর্ষীয়ান নেতা সৌগত রায়কে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘অনুব্রত ভাল সংগঠক।’ তবে তৃণমূলেরই একাংশকে প্রথম থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেল এ দিন। দলের নেতা তথা পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘অন্যায় করলে গ্রেফতার হতেই হবে। অন্যায় করিনি বললে নিজেকে আইনি পথে সেটা প্রমাণ করতে হবে।’ আর এবার চন্দ্রিমা কার্যত আনুষ্ঠানিকভাবে দলের তরফে দুর্নীতির বিপক্ষে বার্তা দিলেন।