কলকাতা: তৃণমূলের আক্রমণের অভিমুখ কি শুধুই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী? রেশন দুর্নীতিতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারির পর থেকে তা যেন আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। ইডির হাতে গ্রেফতারির পর সংবাদমাধ্যমে বনমন্ত্রীর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় সরাসরি নিশানা শুভেন্দুকে। জ্যোতিপ্রিয়র দাবি, শুভেন্দুই নাকি চক্রান্ত করেছেন। গ্রেফতার হতেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ‘চক্রান্তের’ তত্ত্ব বালুর মুখে। আর এরপরই রাজ্যের একের পর এক মন্ত্রী থেকে শাসক নেতা, সবার মুখেই একই সুর। বিজেপি ও শুভেন্দুর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের মুখে।
রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা যেমন সাংবাদিক বৈঠকে বালুর অভিযোগেই সিলমোহর দিলেন। বললেন,”জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক পরিষ্কার বলে দিয়েছেন এই ষড়যন্ত্রের কথা। তিনি পরিষ্কার বলে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীর নাম।” তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা তথা রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের নিশানাতেও সেই শুভেন্দু। কারও নাম না করে বললেন, “তাঁর যদি নিজেরই ছবি থাকে, প্রকাশ্যে টাকা নেওয়ার, তাহলে তিনি কীভাবে কথা বলেন!” তৃণমূল মুখপাত্র তথা শাসক দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের মুখেও সেই দলবদলের তত্ত্ব। বললেন, “উনি দল বদলেছেন শুধু নিজের গ্রেফতারি এড়াতে।”
তৃণমূল শিবির যে অভিযোগগুলি তুলছে, তা আজকের নয়। অনেকদিন ধরেই এই অভিযোগ তুলে আসছে রাজ্যের শাসক দল। এবার জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতারির পরও আবার সেই ‘ওয়াশিং মেশিন’ তত্ত্ব, আবার সেই ‘তদন্ত এড়াতে’ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার তত্ত্ব তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের মুখে। আবার আক্রমণের অভিমুখ শুধুই শুভেন্দু-কেন্দ্রিক।
জ্যোতিপ্রিয়র মুখে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগের পর সকালেই পাল্টা দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। বিধানসভার বিরোধী দলনেতার হয়ে ব্যাট ধরে বিজেপি সাংসদ বলেছিলেন, “শুভেন্দু যদি চক্রান্ত করে জেলে পাঠাতে পারতেন, তাহলে তৃণমূলের পুরো মন্ত্রিসভাই জেলে চলে যেত।” এরপর বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে নিজেই তৃণমূলের যাবতীয় নিশানার কড়া জবাব দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সব আক্রমণের পাল্টা দিয়ে শুভেন্দু বলেন, “পশু খাদ্য মামলায় জেলে গিয়েছিলেন লালু, আর মনুষ্য খাদ্য দুর্নীতিতে জেলে গেলেন বালু।”