কলকাতা: ৯ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ সামলে রাত ৯টার কিছু আগে সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বের হতে দেখা যায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বেরিয়েই ফের চাঁচাছোলা ভাষায় তোপ দাগলেন পদ্ম শিবিরের বিরুদ্ধে। সাফ বললেন, “আমি বারবার বলেছি সময় নষ্ট হচ্ছে। যারা ইডির দফতরে কাজ করছে আমি তাঁদের দোষ দিই না। তদন্তকারী সংস্থায় কাজ করলে অনেক সময় অনেক কাজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে করতে হয়। আগেও বলেছিলাম জিজ্ঞাসাবাদের নির্যাস শূন্য। আজ বলছি মাইনাস ২। আবার পরের দিন যদি ডাকে তাহলে মাইনাস ৪ হবে।”
এরপরই তাঁর মুখে শোনা যায় ধূপগুড়ি নির্বাচনের প্রসঙ্গ। এই ইস্যুতে বলতে গিয়েও পদ্ম শিবিরকে একহাত নিতে দেখা যায় তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডকে। বলেন, “যারা রাজনৈতিকভাবে লড়তে পারে না তদন্তকারী সংস্থার অপব্যহার করে রাজনৈতিক জমি ফিরে পাওয়ার মরিয়া চেষ্টা করে। তাদের জেনে রাখা উচিত যদি ভাবে ধূপগুড়ি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর ইডি দিয়ে ডাকিয়ে ধূপগুড়ি পুনরুদ্ধার হবে তা সারা জীবনেও হবে না। যদি ভাবে পঞ্চায়েতের ফল উল্টে যাবে তা জীবনেও হবে না। তৃণমূল যেমন ২০টি জেলা পরিষদ জিতেছে, তেমনই আগামীদিনে তৃণমূলের প্রতি মানুষের জন সমর্থন আরও বাড়বে। ধূপগুড়িতে ২০২১ সালে ভোটে জিতেছিল। সেই আসন তৃণমূল কংগ্রেস প্রায় ৪ হাজার ৪০০ ভোটে ছিনিয়ে নিয়েছে। তাই এসব ওরা যত করবে ততই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি মানুষের জন সমর্থন বাড়বে।”
প্রসঙ্গত, এদিনই আবার ইন্ডিয়া জোটের সমন্বয় কমিটি ছিল। যেখানে তৃণমূলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার কথা ছিল অভিষেকের। কিন্তু, ইডির তলবে সাড়া দিতে গিয়ে আর দিল্লি যাওয়া হয়নি অভিষেকের। যদিও এদিনই অভিষেককে ইডির তলব নিয়ে সুর চড়িয়েছেন ইন্ডিয়া জোটের তাবড় তাবড় নেতারা। সিজিও থেকে বেরিয়ে তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনও করেন অভিষেক। পাশাপাশি লোকসভা ভোটের মুখে জাতীয় স্তরে তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা যে ক্রমেই বাড়ছে তাও চাইলেন বোঝাতে। বলেন, “সব দল ছেড়ে ইডি বেছে বেছে আমাকে নোটিস দিয়েছে। দিয়েছে ভাল করেছে। কিন্তু, হাজিরার জন্য ডাকল যেদিন বৈঠক রয়েছে। বৈঠক ছিল ৪টের সময় দিল্লিতে। বৈঠকে যদি আমি অংশগ্রহণ করতে চাই তাহলে ২টোর মধ্যে আমাকে দিল্লি পৌঁছাতে হবে। আর আমাকে একই দিনে কলকাতার ইডি অফিসে ডাকা হল সকাল সাড়ে ১১টায়। আজকের আগে পরে ডাকলে আমি বৈঠকে থাকতে পারতাম। আজকে ডাকার ফলে এটা স্পষ্ট ভারতীয় জনতা পার্টি বেছে বেছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিকে আটকেছে। তাই ইন্ডিয়া জোট বা বিরোধী জোট গঠনে তৃণমূল কংগ্রেসের ভূমিকা কী সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র তৃণমূলকেই যে এরা আটকাতে চায় এটা আর একবার আজ স্পষ্ট হয়ে গেল।”
এরপরই শরদ পাওয়ারদের কুর্নিশ জানিয়ে অভিষেক বলেন, “সিনিয়র নেতা শরদ পওয়ার, সঞ্জয় রাউত, কেসি বেণুগোপাল-সহ যাঁরা আজ মিটিংয়ে ছিলেন আমি তাঁদের সকলকে নত মস্তকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমি মানুষকে বলব, দেশকে জোটবদ্ধ করার লক্ষ্যে যেভাবে ইন্ডিয়া জোট কাজ করছে সেই কাজে যাঁরা বাধা দিচ্ছেন তাঁদের জবাব দেন আগামীদিনে মানুষ দেন।”