কলকাতা : দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হল তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষকে (Kuntal Ghosh)। শনিবার চিনার পার্কে তাঁর বিলাসবহুল ফ্ল্যাট থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে ইডি (ED)। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, তাঁর কাছে একাধিক বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না তিনি। এরপরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে বেশ কিছু নথিও সংগ্রহ করেছেন আধিকারিকরা। তবে কোনও টাকা উদ্ধার হয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ওই ফ্ল্যাটে পৌঁছন আধিকারিকরা। রাতভর চলে তল্লাশি। এরপর শনিবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কী কী নথি আধিকারিকদের হাতে এসেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
কুন্তল ঘোষ বলাগড় ব্লকের শ্রীপুর বলাগড় পঞ্চায়েতের ধাওয়াপাড়ার বাসিন্দা কুন্তল ঘোষ। ২০১৬ সাল থেকে রাজনীতি শুরু করেন তিনি, তারপর ধাপে ধাপে রাজনীতিতে উত্থান। রাজ্য কমিটিতেও জায়গা করে নিয়েছিলেন কুন্তল ঘোষ। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি একটি এনজিও চালান বলেও জানা গিয়েছে।
কুন্তলের বিরুদ্ধে মোট সাড়ে ১৯ কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ সামনে আনেন মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল। এরপরই গোয়েন্দাদের আতস কাচের নীচে চলে আসেন হুগলির এই যুবনেতা। প্রথমে তিন দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। শেষ পর্যন্ত ইডি-র জালে চলে এলেন এই নেতা।
জানা গিয়েছে, কুন্তলের বিপুল সম্পত্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। চিনার পার্কের যে ফ্ল্যাট থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই একেকটি ফ্ল্যাটের দাম প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। ওই একই আবাসনে ৯০৩ ও ৯০৯ নম্বর ফ্ল্যাটটি কুন্তলের। এত টাকা কীভাবে পেলেন কুন্তল? সেই প্রশ্নের সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি বলেই গোয়েন্দা সূত্রের খবর।
কুন্তল ঘোষ গ্রেফতার হওয়ার পর বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘এদের ধরা পড়ারই কথা। অপরাধীরা জেলে থাকবেন, এতে অস্বাভাবিক কিছু নেই। কিন্তু এরা ছুটকো-ছাটকা। মাথারা কি ধরা পড়বে?’ কুন্তল ঘোষকে জেরা করে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক প্রশ্নের উত্তর সামনে আসবে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। তিনি বলেন, ‘কুন্তল বাবুর গ্রেফতার সময়ের অপেক্ষা ছিল। এবার আরও বড় রাঘব-বোয়ালরা ইডি-র জালে চলে আসবে।’