লক্ষ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের মেগা বৈঠক। নজরুল মঞ্চে আজ প্রধান বক্তা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ( Mamata Banerjee )। উপস্থিত সাংসদ বিধায়ক থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বস্তরের নেতা-নেত্রীরা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ২ জানুয়ারি দিনটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আগেই আভাস দিয়ে রেখেছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এদিনের বৈঠক থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন দুটি কর্মসূচির নাম ঘোষণা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’ ও ‘দিদির দূত’ নামক দুটি কর্মসূচির ঘোষণা। এদিনের বিশেষ কিছু ঝলক…
কালচারাল সেলটাকে অ্যাক্টিভ করতে হবে। ইন্দ্রনীল করল না। এই শোনো তুমি, রাজ আর বাবুল সুপ্রিয় মিলে তিনজনে বসবে। জুন আছে, সোহম আছে। যারা সময় দিতে পারে, পার্টির জন্য ভাবে চার পাঁচজন মিলে বসতে পার না? সুভদ্রা কত বলে কাজ করতে চায়, ওকে যুক্ত কর। করে দেব বলে ব্যস! তুমি গান গাইবে, আর রাজকে দায়িত্ব দিয়েছি বলে সব ওর মাথায় ঠেলে দেবে, বাহ! এটা তো একটা পরিবার। তোমরা একটা সাংস্কৃতিক পরিবার তৈরি কর। টনিকে ডেকে নাও। : মমতা
গ্রামসভা টাকা সরাসরি পায়। তাই কোন পঞ্চায়েতে কী দুর্নীতি হচ্ছে তা আমাদের নজরে রাখতে হবে। আমরা তো জানতে পারছি না কোন পঞ্চায়েত ভাল কাজ করছে, কে করছে না। আমি কিন্তু তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করব না, রিপোর্টটা দলকে দেব। রিপোর্টটা ক্রস চেক করব। পছন্দ করেন না, রিপোর্ট দিয়ে দিলেন তা হবে না। : মমতা
৬ তারিখ থেকে বিধানসভা শুরু হবে। শোকপালন হবে ওদিন। ৮ তারিখ থেকে যতদিন বাজেট সেশন হবে প্রত্যেক বিধায়ককে থাকতে হবে। সাংসদরাও থাকবেন। শনিবার রবিবার দলকে দেবে। ফেব্রুয়ারি মাসটার জন্য। জানুয়ারিতে সকলে সময় দিয়েছে। যাঁরা সময় দেননি, দোলা সেন, শত্রুঘ্ন সিনহা। নুসরত জাহান, মিমি, দেব ওরা একটু ফিল্ম করে ওদের ছাড় দিতে হবে। সৌগতদা কেন সময় দেননি? জুন তো এলাকায় কাজ করে। সিএম জাটুয়া অসুস্থ, ভাল থাকুন উনি। আজ উনি অবশ্য এসেছেন। কল্লোল খাঁ জীবনেও হাসপাতালে যায় না। হার্টের প্রবলেম থাকলেও ডাক্তারখানায় যেতে ভয় পায়। আগে ডাক্তার দেখাবে বলে দিলাম। চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, মনোজ তিওয়ারি। বাকি সকলেই টাইম দিয়েছে। দলকে একটা ভিজিল্যান্সে রাখতেই হবে। : মমতা
মানুষ ভুলে গেল। আমি গর্বিত বাংলায় জন্মে। হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষ পরিবার নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আগে তো ঘোরার জায়গা ছিল ভিক্টোরিয়া, চিড়িয়াখানা। সেই চিড়িয়াখানায় আড়াই কোটি দিয়ে বাঘের খাঁচাটাও আমাকে তৈরি করতে হয়েছে। আজ আলিপুর মিউজিয়াম দেখার মতো। ইকোপার্ক, সেভেন ওয়ান্ডার কী না হয়েছে। আলিপুর চিড়িয়াখানা আর ধনধান্য স্টেডিয়ামকে কানেক্ট করতে কার পার্কিং তৈরি হয়েছে। ক্যাফে থাকবে সেখানে। মানুষ বসে খেতে পারবেন। : মমতা
কীভাবে দেশে বেকারত্ব বেড়েছে আপনারা দেখেছেন। ৪০ শতাংশের উপর। সর্বাধিক বেকারত্ব ভারতে। আমরা কী করি, ভোটের আগে ৬ মাসের জন্য একটা প্রোগ্রাম করলাম। ভোটও শেষ, প্রোগ্রামও শেষ। বিজেপির চালাকিটা দেখেন তো। ভোট এল ১০ টাকা গ্যাসের দাম কমে গেল। ভোট গেল ৩০ টাকা বেড়ে গেল। : মমতা
তৃণমূলের বড় কাজ সকলকে একসঙ্গে নিয়ে চলা। সর্বধর্ম সমন্বয়। সারে জাহা সে আচ্ছা কেন ভুলব? তবে মনে রাখবেন নাগিনীরা চারিদিকে ফেলিতেছে বিষাক্ত নিঃশ্বাস। কেউটে সাপও পোষ মানে, কিন্তু সে পোষ মানবে না। এটাই বাস্তবতা। এখন প্রচারের থেকে অপপ্রচার বেশি হয়। সেটা রুখতে আপনারও দায় আছে। আমি একদিন আমার কর্মীর সঙ্গে গিয়ে বাড়িতে থাকলে কী সমস্যা? মধ্যাহ্নভোজ করব মানে এলাহি ভোজ নয়। একটা ডাল, একটা তরকারি, একটা ডিমের ঝোল বড় জোর। অথবা গ্রামে কুচো মাছ পাওয়া যায়। আমিও চেষ্টা করব এই উৎসবে শামিল হওয়ার। : মমতা
এখন কার্ডিয়াকে বেশি মারা যাচ্ছে। আমার গ্রামের যে ছেলেটা আমার এখানে থাকে, ওর ছেলের বয়স ২৭ বছর। তার কী প্রবলেম ছিল যে সে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে মারা যাবে? তার প্রেশার বেশি ছিল, কেয়ার করেনি। তিনটে চারটে করে ডিম খেত। ব্যস! একদিন গল্প করতে করতে নুইয়ে পড়েছে। বুঝতে পারেন না প্রেশার বাড়লে গা গোলাবে, ঘাড়ে ব্যাথা করবে। কোনও তথ্য় জানতে ইউটিউব দেখবেন। সব ঠিক দেয় তা নয়। দু’ তিনটে দেখবেন। আমি এখনও খনার বচন মানি। খালি পেটে জল আর ভরা পেটে ফল। : মমতা
আগেকারদিনের লোকের সার্টিফিকেট ছিল না। ৫০কে ৭০ বলে দিত। এখন তো তা নয়। আমাদের একটা ক্যালেন্ডার ইয়ার আছে, আমাদের একটা নিজস্ব জন্মদিন আছে। অনেকেরই আছে। আমারও আছে। আমি কী করতে পারি? যার জন্য আমাকে কেউ অভিনন্দন জানালে কোনও রেসপন্স করি না ওইদিন। আমার কিছু করার নেই। ওটা তো ক্যালেন্ডার ইয়ার। বাবা মা দিয়ে গিয়েছে, আমার কিছু করার নেই। এমনকী আমি একটা বইয়ে লিখেও দিয়েছি, যে আমার দাদা সার্টিফিকেটে আমার থেকে ৬ মাসের ছোট না বড় যেন। তাই দেখে দাদা আমাকে গল্পটা বলল। আমরা যারা বাড়িতে জন্মেছি তাদের ক্ষেত্রে এরকম হয়। অথচ দাদা আমার থেকে ৫ বছরের বড়। কিন্তু সার্টিফিকেটে আমি ৬ মাসের ছোট না বড় যেন। এর উত্তর কে দেবে? তবে এখন এসবের কোনও ব্যাপার নেই। : মমতা
মহিলা, সংখ্যালঘু, এসসি, এসটি সবাইকে কিন্তু সঙ্গে নিতে হবে। আরও ভাল হয় যদি কালচারাল লেভেল থেকে একটা ছেলে যদি প্রতি ব্লকে রাখা হয়। কারণ, গ্রামগঞ্জের ছেলেরা এত ভাল গান করে। তাঁদের তুলে ধরাটাও আমাদের কাজ। লোকাল প্রতিভাকে তুলে আনতে হবে। বর্তমান প্রজন্মকে বলব ডিপ্রেশনের কোনও জায়গা নেই। বছরে একবার করে শরীরের চেকআপ করবেন। এই যে সুব্রতটা (সুব্রত সাহা), কার্ডিয়াক প্রবলেম, ও চেকই করত না। একটু নজরদারি থাকলে আরও কয়েক বছর বেঁচে যেতে পারত। বয়স তো কিছু হয়নি। : মমতা
কারও যেন চিকিৎসার অসুবিধা না হয়। কেউ বুড়ো হয়ে গিয়েছে, তাঁকে দেখি না, এটা ঠিক নয়। তাঁরা আমাদের মানুষ করেছেন। তাঁদের সম্মান দিয়ে কাজটা আমি করব, এটাই আমার যুক্তিতর্ক। যে প্রোগ্রাম নেওয়া হয়েছে, ফেব্রুয়ারির ৬ তারিখে সম্ভবত বিধানসভা চালু হবে। সুব্রত সাহাও মারা গিয়েছেন। সাধন পাণ্ডে, সুব্রতদাও মারা গিয়েছেন। দলকে খুব ভালবাসতেন তাঁরা। এরকম অনেক সহকর্মীকে আমরা হারিয়েছি। অনেককে কোভিডে হারিয়েছি। তাঁরা ফিরে আসবেন না, তবে তাঁদের ফেলে যাওয়া কাজ করতে হবে। : মমতা
আগে কাস্ট সার্টিফিকেট পড়ে থাকত। বলত ৫০ সালের কাগজ নিয়ে এস। আমরা বলে দিয়েছি বাড়িতে একজন থাকলেই হবে। কারণ, এটা বাই বার্থ। কী প্রকল্প নেই। তবে যেটা বাকি আছে, তা হল আমরা প্রচার করি না। আমরা একটু কুঁড়ে হয়ে গিয়েছি। মনে রাখবেন, যতক্ষণ সুস্থ থাকবেন, সুস্থতাই আপনার বয়স। অন্য কিছু নয়। রোজ সকালে উঠে বলেন, আমরা কত বয়স হল। এটা একটা রোগ। কাজ করবে না, ফাঁকি দেবে বলে এটা ভেবে নেয়। আমি এটার বিরুদ্ধে। আমি মনে করি যতক্ষণ সুস্থ থাকব, সেটাই আমার বয়স। সুস্থতা মানুষকে কাজ করতে শেখায়। : মমতা
অনেকে জেনেও জানেন না। আসলে আমরা ভুলে যাই তাড়াতাড়ি, মনে রাখি না। অনেক মা আছেন, সন্তানের জন্ম দিয়ে মারা যান। সেইসব বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য পিজিতে বিশেষ প্রকল্প আছে, ‘মধুর স্নেহ’। বেছে বেছে সব নাম দেওয়া। এগুলো মনে রাখবেন। আমরা এখানে একটা কর্ড ব্লাড ব্যাঙ্ক তৈরি করেছি। আগামিদিন বিপ্লব হবে। প্রেগন্যান্ট মহিলারা যখন সন্তান প্রসব করেন, আমরা সেখান থেকে রক্ত নিয়ে রেখে দিই। সেই রক্তটা খুব দামী। পরবর্তীকালে বাচ্চার কোনও সমস্যা হলেও বা অন্য কারও মারাত্মক রোগ হয়েছে, এই রক্ত অন্য কারও শরীরে গেলে নতুন জীবন পেতে পারেন। আমাদের ডাক্তাররা অনেক কাজ করছেন। : মমতা
আগে তো পিজিতে ভর্তিই করতে পারতাম না। জুতোর শুকতলা ক্ষয়ে যেত। গ্রাম থেকে লোকগুলো এসে পড়েই থাকত। এখন তো আমার গর্বই হয় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাটা আমরা বিনা পয়সায় করে দিয়েছি। আপনারা কি কেউ জানেন, ৩০ হাজারের বেশি বাচ্চাকে বিনা পয়সায় হার্ট অপারেশন করানো হয়েছে। প্রোগ্রামটার নাম শিশুসাথী। : মমতা
অভিষেক কালকে আমাকে বলছিল দিদি তুমি আমার বাচ্চাদের কত খেলনা কিনে দাও, আমাকে তো একটা কিছু দিতে না। আমি বললাম, আমার কাছে কিছু ছিল না তো কী করব? এখন আমি বইটই লিখি, দু’টো পয়সা পাই, তাতে না হয় ওদের কিনে দিই। ছোটদের আমি সবসময়ই ভালবাসি। সুতরাং দলই দলকে দেয়। আমি বলে কিছু নেই। আমি মনে করি তৃণমূল কংগ্রেস পরিবারটাই আমাদের পরিবার। এমন কোনও দিন নেই যেদিন আপনি তৃণমূল কংগ্রেসকে পাশে পান না। অসুখ করলে যদি তৃণমূল পরিবার জানতে পারে, অসুখ করেছে কারও, সে তার সাধ্যমতো বলবে আমরা ব্য়বস্থা করছি। : মমতা
আমাদের পরিবার অনেক বড় পরিবার। সবার পরিবারই বড় হয়েছে। কেউই আজ এক জায়গায় থাকে না। সবাই তার নিজের মতো। তিনটে জেনারেশন তৈরি হয়ে গিয়েছে। তারা নিজের নিজের মতো দাঁড়িয়েছে। সুতরাং আমায় কাউকে হেল্পও করতে হয় না, আর কাউকে আমাকেও হেল্প করতে হয় না। আমি একটা ব্যাপারে আমার বাড়ির বউদের খুব প্রশংসা করি। আমি অনেক সময় শুনি বউরা এই চায়, ওই চায়। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমি বাইরে গেলে যদি একটা ছোট্ট দোকান থেকে দু’টো মাথার ক্লিপ কিনে দিই তাতেই তারা খুশি হয়। দিদি দিয়েছে। দার্জিলিংয়ে গেলে একটা চাদর কিনে হাতে দিলে, তাতেই খুশি হয়েছে। কোনওদিন সোনা, মুক্তো, হিরা চায় না। একটা পুজোতে শাড়ি দিলেই মুখটা জ্বলজ্বল করে। কারণ, তারা এভাবে তৈরি হয়েছে। মানসিকতাটা তৈরি হয়েছে। : মমতা
আমার এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০৭-১০৮টা বই বেরিয়ে গিয়েছে। তার বেশি হবে, কম বললাম। আমি প্রতি বছর বইয়ের রয়ালটি পাই ১০ শতাংশ করে। যতগুলো বই বিক্রি হয়, সবটা তো আমাকে দেয়ও না। যতটা পাই ততটাই আমার যথেষ্ট। আমার বই সব থেকে বেশি বিক্রি হয়। আমি গর্বিত আপনাদের কাছে, বাংলার মানুষের কাছে, দেশের মানুষের কাছে। আমার গানে সিডি আছে, ইন্দ্রনীলরা জানে। গোল্ডেন ডিস্ক অনেক আগেই পেয়ে গিয়েছে। সেখান থেকে আমি একটা রয়ালটি পাই ৪-৫ লক্ষ টাকার মতো বছরে। তার থেকে আমার ভালভাবে চলে যায়। : মমতা
দুয়ারে সরকারের যে আইডিয়া, এটা তারই অপর একটা রূপ। সরকারের সরকারের কাজ করবে, কিন্তু অনেক সময় অভিযোগ পার্টি পর্যায়েও আসে। কারণ, ৭৫-৮০ শতাংশ পঞ্চায়েত তো আমাদের আছে। সেখানে কোন পঞ্চায়েত কতটা কাজ করতে পেরেছে, কী করতে পারেনি, কী তাদের সমস্যা, মানুষের কথা মানুষ বলতেই পারে। দুয়ারে সরকার কাজ করে অনেক সমস্যাই সমাধান করতে পেরেছে। প্রায় ২৫ শতাংশ বাকি। দিন দশেক আগে আমরা আবেদন পেয়েছি। এর মধ্যে যতটা সম্ভব সব দেখে করা হবে। সরকারের কাজ সরকার করবে। তবে তৃণমূল কংগ্রেসও কাজ করে যাবে। : মমতা
মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া আমাদের কর্তব্য। ৩ হাজার ৩৪৩ গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় যেমন আমরা করছি, তেমনই ১১৭টি পুরএলাকা এবং ৭টি কর্পোরেশন এলাকাতেও হবে। প্রতি শহর, প্রতি ব্লকে এটা কার্যকর হবে। : অভিষেক
৮ তারিখ থেকে জেলার হেড কোয়ার্টারে পাওয়া যাবে কিট ব্যাগ। এই কিট ব্যাগে থাকবে নির্দেশিকা। কীভাবে কর্মসূচি পালন করবে তা লেখা থাকবে। সঙ্গে একটা চিঠি থাকবে। দিদির দেওয়া সেই চিঠি। যারা দিদির দূত হয়ে যাচ্ছেন তারা দিদির দূতের মতো আচরণ করবেন। কারণ আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্য প্রতিনিধি হিসাবে যাচ্ছেন। মানুষের প্রতি সংবেদনশীল হবেন। আরও বিনম্র, বিনয়ী হতে হবে। ধৈর্যের যেন বিচ্যুতি না ঘটে। প্রতি পরিবারে আধ ঘণ্টা সময় দিতে হবে। একটা ক্যালেন্ডার থাকবে। ২০২৩ ও ২০২৪-এর ডেট থাকবে। প্যাম্পফ্লেটে থাকবে কিউআর কোড। অ্যানড্রয়েড ফোন থেকে সেই কোড স্ক্যান করে নামানো যাবে দিদির দূত অ্যাপ। ৩ জানুয়ারি থেকে ১০ জানুয়ারি অবধি ৩ হাজার ৩৪৩টি অঞ্চলে প্রশিক্ষণ শিবির হবে। সেখানে এই কাজ কীভাবে হবে তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কিট ব্যাগে থাকবে রিস্ট ব্যান্ড। থাকবে দিদির দূত লেখা ব্যাজ, স্টিকার। কর্মসূচি শেষে বাড়ির দেওয়ালে স্টিকারটি লাগাতে হবে। : অভিষেক
দিদির দূত হিসাবে কাজ করবেন প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ ভলান্টিয়ার। তাঁরা মানুষের বাড়ি বাড়ি যাবেন। এই কর্মসূচির ২টো পর্যায়। প্রথম পর্যায়ে, প্রত্যেক সাংসদ, বিধায়ক, সভাধিপতি, জেলা প্রেসিডেন্ট, জেলা চেয়ারম্যান, দলীয় মুখপাত্ররা ৩২০ জনের টিম তৈরি হয়েছে। তাঁরা জানুয়ারির ১০ তারিখ থেকে ফেব্রুয়ারি ২৮ অবধি ১০ রাত করে গ্রামে থাকবেন। বাংলায় সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৩৪৩ অঞ্চল রয়েছে। ১ জন ১০টা অঞ্চলে রাতে থাকেন, তবে ৩২০ জনের হিসাবে ৩ হাজার ২০০ অঞ্চলে রাত কাটানো যাবে। ৯৮ শতাংশ অঞ্চলই কভার হবে। সেখানে গিয়ে কী করবেন তার সূচি আমরা দিয়ে দেব। : অভিষেক
বাংলায় ১০ কোটি মানুষ, ২ কোটি পরিবার। মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। এতজন মানুষের কাছে পৌঁছনো নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে। তবে ভুললে চলবে না, অসম্ভবকে সম্ভব করার নামই তৃণমূল। ভারতবর্ষে এত বড় রাজনৈতিক কর্মসূচি কোনও দল নেয়নি। বিজেপি জোর গলায় বলতে পারে তারা দেশের সবথেকে বড় পার্টি। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস গর্ব করে বলতে পারে, আমরা ছোট পার্ট হতে পারি, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের শিখিয়েছেন রাজনীতির ময়দানে যখন নির্বাচন থাকবে, আমরা রাজনীতি করব। কিন্তু ভোটে জেতার পর সকলের একটাই ধর্ম মানব ধর্ম। : অভিষেক
আজ দিদির হাত ধরে দিদির সুরক্ষা কবচের সূচনা হচ্ছে। দিদির দূতেরা গিয়ে তা গিয়ে দেখবেন। ২০১১ সাল থেকে সরকার একাধিক জনকল্যাণমুখী প্রকল্প ঘোষণা করেছে। খাদ্যসাথী, বাংলা আবাস যোজনা, নিজ গৃহ নিজ ভূমি, স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, ঐক্যশ্রী, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, যুবশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কৃষক বন্ধু, সামাজিক সুরক্ষা যোজনা, মানবিক পেনশন, বিধবা ভাতা, জয় বাংলা পেনশন স্কিমের পেনশন আছে। এই প্রকল্পগুলি অ্যাপের মাধ্যমে বাংলার প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে দিদির দূতেরা। : অভিষেক
দুয়ারের সরকারের মতো মানুষের দরজায় তৃণমূল কংগ্রেস। সাড়ে তিন লক্ষ কর্মী ২ কোটি পরিবারে যাবে। ১০ কোটি মানুষের কাছে যাবে। হয়তো কোনও ব্যক্তি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া জন্য অ্যাপ্লিকেশন ফর্মটা পূরণই করতে পারছেন না। আমাদের কর্মীরা তাঁদের সাহায্য করবেন। এর জন্য কোনও পয়সাকড়ি লাগবে না। বিএসকে কেন্দ্র আমরা চালু করছি। প্রত্যেকটা ব্লকে। বিএসকে কেন্দ্রে মানুষের যে কোনও অসুবিধা রেজিস্ট্রার করতে পারবেন। এটা কিন্তু পয়সা দিয়ে নয়। তাই কম্পিউটার জানা ছেলেমেয়েদের নিয়ে বিএসকে কেন্দ্রগুলো করা হয়েছে।: মমতা
দু একটা রাজনৈতিক দল যে অকথা কুকথা বলে, এটা সারা ভারতের আর কোথাও নেই। সমাজের একটা বড় স্তম্ভ মিডিয়া। মিডিয়াটাকে যদি মিডিয়ার মতো চলতে দেওয়া না হয়, মিডিয়াকে যদি স্বাধীনভাবে তার কথা বলতে দেওয়া না হয়, তাহলে যা হয়, সেটা পরাধীনতার থেকেও বেশি।: মমতা
এখন যাঁদের কোনও কাজ নেই, অকথা কুকথা বলেন, বড় বড় কথা বলে বেরান, তাঁদের আমি বলব, আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, আমরা কিন্তু ধ্বংসাত্মক কিছু করিনি। গঠনমূলক কাজ করেছি। একটা রাজনৈতিক দল যখন তৈরি হয়, তার অনেক দায়বদ্ধতা থাকে। সেটা মানতে গিয়ে কোথাও কোথাও অনেক কঠিন পরিস্থিতিকেও সামাল দিতে হয়। তা সত্ত্বেও আমরা বিরোধীতে থাকাকালীনও যেমন ডেডিকেটেড ছিলাম উন্নয়নের জন্য, মানুষের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমরা একমত হয়েছিলাম। আজও সেই সংগ্রামই করছি: মমতা
মেমারির কারেন্দা থেকে শুরু করে, কোচবিহারের নার্স বর্ণালী দত্ত থেকে শুরু করে, হাওড়ায় পুলিশের গুলিতে খুন হয়ে গেল বিমাল দে, বেহালার রঘুনন্দন তিওয়ারি খুন হয়ে গেল, রাজারহাটে গুলি চলল, শান্তিপুরে, কোচবিহারে গুলি চলল। শুধু গুলির ফোয়ারা দেখতাম আমরা। সেই দিনগুলো অনেক কষ্টে পার করে এসেছি।: মমতা
২৫ বছরে পা দিয়েছে তৃণমূল। কত মানুষ শুধু লড়াই করে গিয়েছেন। কখন দিন হয়েছে, কখন রাত হয়েছে আমরা বুঝতে পারিনি। রাস্তার পর রাস্তার হেঁটে, আন্দোলনের পর আন্দোলন হয়েছে। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম তো অনেক পরে। ২০০৮ সালের ব্যাপার। বিরানব্বিশ সাল ফিরে যান তো। কান্দুয়া আর আমতার হাত কাটার ঘটনা। দাঙ্গার ঘটনা। তিরানব্বিশ সালে ২১ জুলাইয়ের ঘটনা। একটার পর একটা: মমতা
‘দুয়ারে সরকার’ আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান করেছে। তবে এখনও ২৫ শতাংশ কাজ বাকি আছে। দশদিন আগে আমরা পেয়েছি সে সব আবেদন। প্রযুক্তিগত সমস্যা থাকতে পারে। তবে অনেক প্রযুক্তিগত সমস্যাও আমরা মানবিকভাবে দেখতে বলি। সরকার যেমন সরকারের কাজ করছে, করবে: মমতা
‘দুয়ারে সরকার’ আইডিয়ার একটি রূপ ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’। সরকার সরকারের মতো কাজ করবে। কিন্তু অনেক সময় নানা অভিযোগ পার্টি স্তর থেকে আসে। কারণ, ৭৫-৮০ শতাংশ পঞ্চায়েত তো আমাদের আছে। সেখানে কোন পঞ্চায়েত কী করতে পেরেছে, কতটা করতে পেরেছে, কী পারেনি, এটা ক্ষোভ উগরে দেওয়ার জন্য নয়। কিন্তু মানুষের কথা মানুষ বলতে পারে: মমতা
আমাদের একটি ঘরোয়া টিম আছে। ঘর-বাড়ি ছেড়ে সারাক্ষণ তারা কাজ করে। তাদের এই ত্যাগের জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই: মমতা
ছাত্র-যুবদের কথা বলা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার যেমন গুরুত্ব রয়েছে পাশাপাশি দরকার শব্দ ও বাক্য চয়ন ঠিক করা। বাংলাভাষা-সহ বিভিন্ন মাতৃভাষার বাক্যচয়নকে গুরুত্ব দিই আমরা। ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ নামটি আমার দেওয়া নয়। নামটি আমাদের আইটি টিমের দেওয়া: মমতা
আগামী ২ মাস ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রায় সাড়ে তিনশো জন রাজ্য স্তরের নেতা, তাঁরা ১০ দিন করে প্রত্যেকটি অঞ্চলে রাত্রিযাপন করবেন। মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁদের অভাব অভিযোগ, মতামতের কথা, যাতে নেত্রী পর্যন্ত পৌঁছয় তার ব্যবস্থা করবেন। তিনি চলে যাওয়ার পরে যাতে পরের দিন থেকে দিদির দূতরা গিয়ে প্রত্যেকটা বাড়িতে গিয়ে সরকারের সুযোগ সুবিধা, সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচি, সেটা সাধারণ মানুষে প্রকৃত অর্থে পাচ্ছেন কিনা, তার খোঁজ নেবেন। ১১ তারিখ থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে: অভিষেক
একটি অ্যাপ আমরা তৈরি করেছি। প্লে স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে। যার নাম ‘দিদির দূত’। এই অ্যাপের মাধ্যমে প্রত্যেকটা বাড়ি ম্যাপ করা যাবে। এখানে আলাদা আলাদা প্যারামিটার রয়েছে। এখানে স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা, আবাস, শিক্ষা, খাদ্য রয়েছে। আলাদা আলাদা প্যারামিটারে প্রায় ১৫ টি স্কিম, যেমন স্বাস্থ্য সাথী, শিক্ষাত্রী, কন্যাশ্রী, ঐকশ্রী, বাংলা আবাস যোজনা, লক্ষ্মীর ভান্ডার- প্রত্যেকটিকে সরকার মানুষের বাড়িতে পৌঁছে দিতে চাইছে।: অভিষেক
দিদির দূত হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সাড়ে তিন লক্ষ প্রতিনিধি প্রায় ২ কোটি মানুষের বাড়িতে পৌঁছবেন। সরকারের যে ১৫ টা স্কিম রয়েছে, তার সুযোগ সুবিধা সাধারণ মানুষ ঠিক সময়ে ঠিকভাবে পাচ্ছেন কিনা, তার খোঁজ নেবেন। গত বছর থেকে আমাদের সরকার দুয়াকে সরকার চালু করেছে। তারপরও এই কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গে ১০ কোটি মানুষের বাড়িতে গিয়ে আমাদের কর্মীরা খোঁজ নেবেন : অভিষেক
দিদির রক্ষাকবচ কর্মসূচির সূচনা করল তৃণমূল কংগ্রেস। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একটি লোগো তৈরি করা হয়েছে। এই কর্মসূচিটির নাম হচ্ছে দিদির সুরক্ষাকবচ। আগামী ১১ তারিখ থেকে এটি বাস্তবায়িত হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের সাড়ে তিন লক্ষ ভলেন্টিয়র অ্যাক্টিভ হয়ে বাংলার ১০ কোটি মানুষ ও ২ কোটি হাউজ় হোল্ডের কাছে বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছাবেন।”