TV9 Bangla Explained: জাতীয় দলের তকমা থাকবে তৃণমূলের? থাকবে কি জোড়া ফুলের প্রতীকও?

TMC National Party Status: তিনটি শর্তের মধ্যে যে কোনও একটি পূরণ করতে হয় জাতীয় দলের তকমা পেতে গেলে।

TV9 Bangla Explained: জাতীয় দলের তকমা থাকবে তৃণমূলের? থাকবে কি জোড়া ফুলের প্রতীকও?
তৃণমূলের তকমা নিয়ে সংশয়, অলংকরণ- TV9 বাংলা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 22, 2023 | 3:32 PM

নয়া দিল্লি: রাজ্যের বাইরে দলের বিস্তার বাড়াতে আগেই উদ্যোগী হয়েছে তৃণমূল। দিল্লির মসনদকে পাখির চোখ করে ত্রিপুরা, গোয়ার পর মেঘালয়েও সংগঠন বাড়াতে তৎপর হয়েছে ঘাসফুল শিবির। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন যখন শিয়রে, তখনই জাতীয় দলের তকমা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) নোটিস পেয়ে ইতিমধ্যেই কমিশনে গিয়েছিলেন দলের সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। তবে জাতীয় দলের তকমা কি আদৌ ধরে রাখতে পারবে তৃণমূল (TMC)?

কোন কোন শর্তে হওয়া যায় জাতীয় দল?

তিনটি শর্তের মধ্যে যে কোনও একটি পূরণ করতে হয়। এক, লোকসভা নির্বাচনে কোনও দলকে অন্তত তিনটি রাজ্য থেকে ভোটে লড়তে হবে ও দেশের মোট লোকসভা আসনের ২ শতাংশ আসনে জিততে হবে।

দ্বিতীয় শর্ত হল, লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে অন্তত ৪টি রাজ্যে ৬ শতাংশ করে ভোট পেতে হবে ও এক বা তার বেশি রাজ্যে ৪টি লোকসভা আসন পেতে হবে।

তৃতীয় শর্ত, ৪টি বা তার বেশি রাজ্যে রাজ্যদলের তকমা থাকতে হবে দলের কাছে। এই তিন শর্তের যে কোনও একটি পূরণ করলেই জাতীয় দলের তকমা পাওয়া যায়।

কোন শর্ত পূরণ করে কোনটা করে না তৃণমূল?

শর্ত ১: ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি বিরোধী দলের প্রচারে গিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কোনও রাজ্য থেকেই প্রার্থী দেয়নি তাঁর দল। শুধুমাত্র সমর্থন জানিয়েছিল অন্য দলকে। সেই হিসেবে তিনটি রাজ্য থেকে ভোটে লড়া হয়নি। তবে দেশের নিরিখে ২ শতাংশের বেশি আসনেই জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। ৫৪৩ টি আসনের মধ্যে ২৪ টি আসন রয়েছে তৃণমূলের হাতে। অর্থাৎ শর্তের পরের অংশ মিললেও প্রথম অংশ মিলছে না।

শর্ত ২: পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৪-এর বেশি আসন রয়েছে তৃণমূলের হাতে। তবে, ভোট শতাংশ কি তৃণমূলকে তকমা পেতে সাহায্য করবে? ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনে মেঘালয় থেকে তৃণমূলের ঝুলিতে এসেছে প্রায় ১৪ শতাংশ ভোট আর ত্রিপুরায় পাওয়া ভোট শতাংশ ১-এরও কম (০.৮৮ শতাংশ)। আর ২০২২ সালে গোয়ায় তৃণমূলের ভোট শতাংশ ছিল ৫.২১ শতাংশ অর্থাৎ ৬ শতাংশে কিছুটা কম। জাতীয় দলের তকমা পাওয়ার মতো ভোট শতাংশও নেই জোড়াফুলের হাতে।

শর্ত ৩: রাজ্য দলের তকমা তখনই দেওয়া হয়, যদি সেই দল সংশ্লিষ্ট রাজ্যে অন্তত ২টি বিধানসভা আসন পায় ও কমপক্ষে ৬ শতাংশ ভোট পায়। তৃণমূল বাংলার বাইরে শুধুমাত্র মেঘালয়েই ৫ টি আসন পেয়েছে। তাই এই শর্তেও ব্যকফুটেই থাকছে তৃণমূল।

জাতীয় দলের তকমা থাকলে কী সুবিধা?

বর্তমানে দেশের মোট ৭ টি রাজনৈতিক দলের কাছে রয়েছে জাতীয় দলের তকমা। ভারতে কোনও দল জাতীয় দলের তকমা পেলে, তারা কিছু সুবিধা পেয়ে থাকে।

১. দলের জন্য একটি প্রতীক রিজার্ভ করা বা নির্দিষ্ট করা থাকে। অন্যথায় প্রতীক ‘ফ্রি’ হিসেবে গণ্য হবে।

২. সংশ্লিষ্ট  রাজ্যের সরকারি পরিচালিত টেলিভিশন বা রেডিওতে সম্প্রচারের জন্য নির্দিষ্ট সময় পেতে পারে ওই দল।

৩. নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করা বা নির্বাচনী বিধি তৈরির ক্ষেত্রে মতামত দিতে পারে জাতীয় দলগুলি। অন্য দলের কাছে সেই সুযোগ থাকে না।

জাতীয় দলের তকমা কীভাবে পেয়েছিল তৃণমূল?

২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় দল হিসেবে তৃণমূলকে স্বীকৃতি দেয় নির্বাচন কমিশন। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এই তকমা দেওয়া হয়েছিল। ওই বছর ৫ টি রাজ্যে ৬ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিল ঘাসফুল শিবির। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও মনিপুর, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড ও অসমেও ভোটে লড়েছিল দল। সেবার পশ্চিমবঙ্গে ৪২ টি আসনের মধ্যে ৩৪ টি পেয়েছিল তৃণমূল। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলের সেই তকমা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

নির্দিষ্ট সময় পরপর জাতীয় দলের তকমা খতিয়ে দেখে নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি তৃণমূল, সিপিআই ও এনসিপি-র কাছে কমিশন জানতে চেয়েছে, কেন তারা ওই তকমা পাবে? জাতীয় দল হওয়ায় যোগ্যতা কি সত্যিই আছে ওই সব দলের? সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে চায় কমিশন।