কলকাতা: বিধায়করা মুখে একটু মধু দেবেন, সেটাও আটকাচ্ছে কেন্দ্র? এবার বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে এমনই এক যুক্তি শোনা গেল রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গলায়। ভাবছেন এ আবার কেমন যুক্তি! তাহলে একটু খোলসা করে বলা যাক। শুক্রবার বিধানসভার অধিবেশনের প্রথমার্ধে সরকার পক্ষের উপ মুখ্য সচেতক বিধায়ক তাপস রায় মধু নিয়ে আর্জি জানান রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছে। বললেন, ‘বনমন্ত্রীকে বলছি, আপনি একটু মধু ও ভেষজ সম্পদ বিধায়কদের দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। আগের সব বনমন্ত্রীরা বিধায়কদের মুখে একটু মধু দিতেন।’ এরপরই, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কিন্তু স্যর (স্পিকার), বনমন্ত্রী সব বন্ধ করে দিয়েছেন।’
কেন হঠাৎ এমন আর্জি করলেন বিধায়ক তাপস রায়? তিনি অবশ্য ভুল কিছু বলেননি। অতীতে বাংলায় এমন রেওয়াজ ছিল। বন-দফতরের তরফে রাজ্যের সব বিধায়কদের জন্য মধু, ঘি বা অন্যান্য ভেষজ সামগ্রী দেওয়ার চল ছিল। এমনকী বিধায়কদের ইলিশ মাছ দেওয়ারও একটা চল ছিল। তৃণমূল সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরেও এই চল দেখা গিয়েছে বাংলায়। যদিও বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে বিধায়কদের হাতে ইলিশ বণ্টন দেখা যায়নি বলেই বিধানসভা সূত্রে খবর। সেই ইলিশ মাছও যাতে বিধায়কদের দেওয়া হয়, সেই নিয়েও এর আগে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায় চৌধুরীর কাছে আবদার করেছিলেন বিধানসভায় সরকার পক্ষের মুখ্য সচেতক তাপস রায়। যদিও বিপ্লববাবু তাতে কোনও জবাব দেননি, শুধু হেসেছিলেন।
তবে শুক্রবার তাপস রায়ের অনুরোধ শোনার পর বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক স্পষ্ট করে দিলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিধায়কদের মধু দেওয়া সম্ভব নয়। বললেন, ‘অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল নয়। তাই দেওয়া যাচ্ছে না। এটা দিতে গেলে তো বাজেটে আলাদা করে বরাদ্দ করতে হয়।’ এরপর আক্ষেপের সুরে বললেন, ‘কিন্তু কেন্দ্র তো ফান্ড দিচ্ছে না। সব বন্ধ করে দিয়েছে। কী করে করি সবটা…।’ অর্থাৎ, বুঝিয়ে দিতে চাইলেন ইচ্ছা থাকলেও, সামর্থ্য নেই। আর এর জন্যও কেন্দ্রের দিকেই দায় ঠেললেন বনমন্ত্রী।