কলকাতা : শুক্রবারই কলকাতা পৌরভোটের ইস্তাহার প্রকাশ করেছে বামেরা। বিধানসভা থেকে হারিয়ে যাওয়া বামেরা ফের একবার নতুন উদ্যমে ভোট ময়দানে নামতে চলেছে। আর ঠিক তখনই চাঁচাছোলা ভাষায় বামেদের আক্রমণ রাজ্যের শাসক শিবিরের। তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলার সম্পাদকীয়তে আজ লাল ব্রিগেডকে জাদুঘর বলে কটাক্ষ করেছে। আসন্ন পৌরভোটেও যে বামেদের ফলাফল বিধানসভার মতোই হবে, তেমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে।
জাগো বাংলায় শনিবারের সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে, “কলকাতার ধর্মতলা চত্বরে প্রায় শতাব্দী প্রাচীন বহু বাড়ি রয়েছে। তার মধ্যে একটি সাদা বাড়ি, যাকে কলকাতার মানুষ জাদুঘর হিসেবেই জানেন। সেই জাদুঘরেই নিজেদের নাম খোদাই করে রাখার জন্য চ্যালেঞ্জ নিয়েছে রাজ্যের বামেরা।” এর পাশাপাশি সেখানে আরও বলা হয়েছে, “২৩৬ থেকে এখন তারা আক্ষরিক অর্থেই শূন্য। বিধানসভায় শূন্য। লোকসভায় শূন্য। কলকাতা পুরসভা নির্বাচন শেষ হলে সেখানেও বিগ জিরো নিশ্চিত। পঞ্চায়েতেও ঘটনার পুনরাবৃত্তি।”
এর আগে বিভিন্ন সময়ে জাগো বাংলার সম্পাদকীয়তে কংগ্রেসকে বিঁধতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু এবার বামেদের উপরেও আক্রমণ শানাতে ছাড়ল না তৃণমূল। উল্লেখ্য, বিগত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস এবং বামেরা হাতে হাত মিলিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছিল। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টে বাম-কংগ্রেস শূন্য বিধানসভা দেখা গিয়েছে রাজ্যে। তারপর আসন্ন কলকাতা পৌরভোটে সরাসরি জোটের রাস্তায় না গেলেও বাম-কংগ্রেস উভয়েই কিছু কিছু জায়গায় আসন ছেড়ে দিয়েছে। আর সেই নিয়েই এবার প্রবল সমালোচনা করা হয়েছে জাগো বাংলায়। উল্লেখ করা হয়েছে, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে ভরাডুবির পরেও সিপিএম নেতাদের চেতনার এতটুকুও পরিবর্তন হয়নি। শরিকদের হুমকি উপেক্ষা করে কংগ্রেসের জন্য বেসরকারি ভাবে আসন ছেড়ে নিজেদের জেদ বজায় রেখেছে। জেদের রেজাল্ট আলিমুদ্দিনও জানে, জানে বিধানভবনও।”
শুধু তাই নয়। বামেদের বিগত নির্বাচনগুলিতে পরাজয়ের পর তার কারণ পর্যালোচনার যে ভূমিকা দেখা গিয়েছে, তা নিয়েও কিছুটা তাচ্ছিল্যের সুর। পৌরভোটে বামেদের ফলাফলের পূর্বাভাস দিয়ে বলা হয়েছে, “এরপর সাংবাদিকদের ডেকে বলা হবে আমরা মানুষের মানসিকতা ধরতে পারিনি। কেন এমন হল ভেবে দেখব। পার্টিতে আলোচনা করব। ভুল শুধরে নেব।”
উল্লেখ্য, শুক্রবারই জাগো বাংলায় ডিপ ফ্রিজে কংগ্রেস শীর্ষক সম্পাদকীয় কলমে কংগ্রেসের ধারাবাহিক ব্যর্থতার জন্য এবং নেতৃত্বের অপরিণামদর্শিতার জন্য সরাসরি রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করা হয়েছিল। লেখা হয়েছিল, “তৃণমূল কংগ্রেস বহুদিন থেকেই বলছে কংগ্রেস ব্যর্থ। ইউপিএ শেষ। বিরোধী জোট দরকার। দলীয় কোন্দল এবং রক্ত ক্ষরণে কংগ্রেস এতটাই বিদীর্ণ যে দল ধরে রাখাই সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”
আর তারপর এবার নিশানা বামেরা। আসন্ন পৌরভোটের আগে বামেদের উদ্দেশে এই চাঁচাছোলা আক্রমণে কী বার্তা দিতে চাইল তৃণমূল? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বঙ্গ রাজনীতির অন্দর মহলে।