Sougata Roy: ‘কেন বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল?’ দমদমে দুই বালিকার মৃত্যুতে সাংসদের মন্তব্যে বিতর্ক
electrocution: "কিন্তু দায় কার? এসময় লাইটপোস্ট ধরা উচিত নয়, কিছু পড়ে থাকলেও ধরা উচিত নয়। যে বাচ্চা দুটো মারা গিয়েছে প্যাথেটিক। কিন্তু এখন দায় কার বলে লাভ নেই।''
দমদম: ঘরের মেঝেতে এখনও গোড়ালি ডোবা জল। খাটের ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বই-খাতা, মোবাইল ফোন। খাটেরই স্ট্যান্ডে ঝুলছে স্কুলের ইউনিফর্ম। শো-কেসের কোণে রাখা ছোট্ট বসার টুলটার ওপর প্লাস্টিক আর তাতেই পুজোর জন্য কেনা নতুন জামা। ঠিক ছিল, ওই জামাটাই অষ্টমীতে পড়বে সে! সে সব পড়ে রইল। দমদমের বান্ধবনগরে শ্রেয়া বণিক ও অনুষ্কা নন্দী নামে দুই ছাত্রীর টিউশনে পড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। এই প্রেক্ষিতে সাংসদ সৌগত রায় (Sougata Roy)- এর মন্তব্যে শুরু হল নয়া বিতর্ক। দমদমের তৃণমূল সাংসদ মন্তব্য করলেন, ‘কেন বৃষ্টির দিনে বেরলেন দুই ছাত্রী!’
ঠিক কী বলেছেন সাংসদ?
তাঁর লোকসভা কেন্দ্রে দুই ছাত্রীর অকাল মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করে সৌগত রায় বলেন, “মেয়েগুলোর তো বেরনোর কথা ছিল না! ওরা বেরল। তার পর লাইটপোস্টেটা চেপে ধরল। তার পর মারা গেল। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কী হতে পারে!” তার পর তিনি যোগ করেন, “কিন্তু দায় কার? এসময় লাইটপোস্ট ধরা উচিত নয়, কিছু পড়ে থাকলেও ধরা উচিত নয়। যে বাচ্চা দুটো মারা গিয়েছে প্যাথেটিক। কিন্তু এখন দায় কার বলে লাভ নেই।”
তাঁর এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সদ্য সন্তান হারা মা। কাঁদতে কাঁদতে তাঁর কটাক্ষ, উনি কি সব জেনে বসে রয়েছেন? উনি দেখেছিলেন? জ্যোতিষী না তান্ত্রিক সাংসদ? তান্ত্রিক হলে আমার মেয়েকে এনে দিন।” ফের ডুকরে কেঁদে ওঠেন তিনি। বলেন, এই বাড়ি ছেড়ে এবার চলে যাব। আমার তো আর কেউ রইল না বলে হাহাকার শ্রেয়ার মায়ের।
এদিকে এদিন এলাকার কাউন্সিলর মৃত ছাত্রীর বাড়িতে দেখা করতে গিয়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। আবার বান্ধবনগরে জল জমা নিয়ে এলাকার কাউন্সিলরের মন্তব্য, “জল তো কোনও ওয়ার্ডের নয়। জল কি কোনও ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়েছে? আমাদের নিকাশি বাগজোলা খাল নির্ভর। কিন্তু খাল জলে টইটুম্বুর। আমার উপর কেন দায় বর্তাবে? আমিও তো মারা যেতে পারতাম!”
এই পারস্পরিক দোষারপের মধ্যে এদিন দুপুরে মৃত ছাত্রীর বাড়িতে যান সৌগত রায়। শ্রেয়া বণিকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন সাংসদ। জানান, মন্ত্রী ব্রাত্য বসুও দেখা করতে আসছেন।
সেখান থেকে বেরিয়ে সাংসদের মন্তব্য, “আমরা যাই আমরা করি না কেন, দুই ফুটফুটে শিশুকে তো ফেরাতে পারব না। সব জায়গায় জলবন্দি অবস্থা। কী করে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হল, তা খতিয়ে দেখা হবে। ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে মৃতের পরিবারদের।” তিনি আরও যোগ করেন, “লোকে বলতেই পারে, ক্ষোভ থাকতে পারে। সেটা স্বাভাবিক।”