কলকাতা: সোমবার, ২৯ নভেম্বর থেকেই শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন (Parliament’s Winter Session)। এবারের অধিবেশনে কী কী ইস্যুতে সরব হবে তৃণমূল(TMC) শিবির, তা ঠিক করতে সোমবারই দলের তরফে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক (Working Committee Meeting) ডাকা হল। আগামিকালের এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়(Mamata Banerjee), অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Abhishek Banerjee) সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্বরা। অন্য রাজ্য়ের যে সমস্ত নেতারা তৃণমূলে যারা যোগদান করেছেন, তাঁরাও উপস্থিত থাকতে পারেন। কালীঘাটে মুখ্য়মন্ত্রীর বাড়িতেই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। এদিকে এই বৈঠকের কারণেই আগামিকাল কংগ্রেসের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে তৃণমূল সাংসদরা যোগ দেবেন না বলেই জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, আগামিকাল তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কমিটির ২১ জন সদস্য়কেই ডেকে পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই বৈঠকেই জাতীয় স্তরে রাজনীতিতে তৃণমূলের কী অভিমুখ হবে, তা স্থির করা হবে। চলতি বছরের বাদল অধিবেশনে বিরোধী জোটের অন্য়তম মুখ হিসাবে তৃণমূল উঠে আসলেও, বিধানসভা নির্বাচনের দারুণ ফলের পর জাতীয় স্তরে তৃণমূল যেভাবে উঠে এসেছে, তারপরে শীতকালীন অধিবেশন দলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতিই তৃণমূলে একাধিক নতুন মুখের দেখা মিলেছে। গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফালেইরো থেকে শুরু করে অসমের প্রাক্তন কংগ্রেস নেত্রী সুস্মিতা দেবের মতো নেতৃত্ব তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। গত সপ্তাহেই ঘাসফুল শিবিরে নাম লিখিয়েছেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ কীর্তি আজাদ ও প্রাক্তন জেডি(ইউ) নোতা পবন বর্মাও। এদের মধ্যে লুইজিনহো ফালেইরো ও সুস্মিতা দেব রাজ্য়সভার সাংসদ পদ পেয়েছেন, ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হয়েছেন লুইজিনহো। আগামিকালের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এই নতুন মুখদেরও দেখা যাবে বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, কংগ্রেসের নেতৃত্বে গত অধিবেশনে যে বিজেপি-বিরোধী জোট তৈরি হয়েছিল, তাতেও ফাটল ধরতে শুরু করেছে। সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনের আগে কংগ্রেসের তরফে যে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে, তাতে যোগ দেবে না তৃণমূল। দলীয় সূত্রে খবর, ডাকা কোনও বৈঠকে যোগ দেবে না তৃণমূল।
জানা গিয়েছে, তৃণমূলের গোয়া ইউনিট চাইছে না কংগ্রেসের সঙ্গে কোনওরকম প্রত্যক্ষ আলোচনায় বসুক দলের দিল্লির নেতারা। কারণ, কয়েক মাস পরেই গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন। আর সেখানে বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও লড়াইয়ে নামছে কংগ্রেস। আর তাই সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের আগে কংগ্রেসের ডাকা কোনও বৈঠক এড়িয়ে চলতে হচ্ছে দিল্লির তৃণমূল নেতাদের।
সম্প্রতি মমতার দিল্লি সফরে বিরোধী ঐক্যের ফাটল আরও চওড়া হয়েছে। এতদিন পর্যন্ত মমতার দিল্লি যাওয়া মানেই, কিছু চেনা ছবি প্রত্যেকবারই দেখা যেত। সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে অন্তত একবার দেখা করা। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের সঙ্গেও অত্য়ন্ত সৌজন্য বিনিময়টুকু হত। কিন্তু এবার সে সবের কিছুই হচ্ছে না। উল্টে সোনিয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করায় একটু চটেই গেলেন মমতা। পরে অবশ্য ড্যামেজ কন্ট্রোলে বলেছিলেন, সোনিয়া পঞ্জাবের ভোটে ব্যস্ত, তাই তাঁর সঙ্গে দেখা করা হচ্ছে না। আর কেজরিওয়াল? তার সঙ্গেও কি সম্পর্ক কিছুটা শীতল হচ্ছে মমতার?