সৌরভ গুহ: মেঘালয়ে (Meghalaya) সরকার গড়বে তৃণমূলই (TMC)। মঙ্গলবার এমন আত্মপ্রত্যয়ী ঘোষণা শোনা গিয়েছে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের গলায়। সামনের মাসেই ফেব্রুয়ারিতে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা। মেঘালয়ের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার সুর চড়ছে। আর এই আবহেই মেঘের রাজ্যে সরকার গড়ার স্বপ্ন দেখছে তৃণমূল। মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বাংলার পর মেঘালয় হতে চলেছে দ্বিতীয় রাজ্য যেখানে তৃণমূল সরকার গড়বে।’
বাংলার বাইরে অন্য রাজ্যে তৃণমূলের প্রভাব বিস্তার করা বা সরকার গড়ার বার্তা এর আগেও শোনা গিয়েছিল। গোয়া বা ত্রিপুরায় সেই চেষ্টা চালাতেও দেখা গিয়েছিল ঘাসফুল নেতৃত্বকে। দুই ক্ষেত্রেই আশাব্যঞ্জক কিছুই করতে পারেনি তৃণমূল। সবথেকে বড় কথা যে ত্রিপুরা নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের এত মাতামাতি, সেই ত্রিপুরায় ফেব্রুয়ারি মাসেই ভোট। কিন্তু তেমন সাড়া শব্দ নেই তৃণমূল নেতৃত্বের। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, আসলে সুদীপ রায় বর্মন ফের কংগ্রেসে ফিরে যাওয়ায় ধাক্কা খেয়েছে ত্রিপুরার তৃণমূল। দল ছেড়েছেন একদা ত্রিপুরা প্রেসিডেন্ট সুবল ভৌমিকও।
আগামী ১৭ জানুয়ারি থেকে ১৯ জানুয়ারি ‘মেঘ-রাজ্যে’ নির্বাচনী প্রচারে যাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই রাজ্যে ৬০টি আসনে ইতিমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করেছে তৃণমূল। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ধাঁচে প্রকল্পও ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া তুঙ্গে। এমনকী বিজেপি নেতৃত্বও তাঁদের এই জোটসঙ্গীকে নিয়ে বিরক্ত। কংগ্রেসের রক্তক্ষরণও অব্যাহত। মুকুল সাংমা ১১ জনকে নিয়ে দল ছাড়ার পর ও দল ছাড়ছেন আরও বিধায়ক।
এই পরিস্থিতিতে মেঘালয় নিয়ে আশা দেখছে তৃণমূল। তবে তৃণমূল থেকে এক বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। সে যাই হোক তৃণমূল এই রাজ্যে আসন পাওয়া নিয়ে অন্য রাজ্যের চেয়ে একটু বেশিই আশাবাদী। দলীয় সংগঠনের কাজ দেখছেন মানস ভুঁইয়া।
রাজনৈতিক মহলের মতে, ত্রিপুরায় সুদীপ রায় বর্মণের ওপর ভরসা করে সংগঠন বিস্তার করেছিল তৃণমূল, তেমনই মুকুল সাংমার ওপর অতি নির্ভরশীলতা পরে কোনও সমস্যা তৈরি করবে না তো? মেঘালয়কে মমতা চিনতেন পূর্ণ সাংমার নামে। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা লগ্নে এই পূর্ণ সাংমা তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ হয়েছিলেন। পরে নিজের দল গঠন করেন। সেই দলই এখন মেঘালয়ে ক্ষমতায়। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে পূর্ণর পুত্র কনরাড। তাঁকে ঘিরে অভিযোগও বিস্তর। ভোটের আসরে কোমর বেঁধেছে বিজেপি। বিজেপির তরফে মেঘালয়ের ভোট পর্যবেক্ষক পাশের রাজ্য অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এই জটিল রাজনৈতিক আবহে সিকে ছিঁড়বে তৃণমূলের?