কলকাতা: মার্চের গোড়ায় শহর থেকে প্রায় আড়াই হাজার হলুদ ট্যাক্সি বাতিলের পথে। জীবন বাঁচানোর দাবি সহ একাধিক বিষয় নিয়ে এবার পরিবহণ মন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে চলেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট ফোরাম অফ ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন। মঙ্গলবার বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের অফিসে বৈঠক করেন সব ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের শীর্ষকর্তারা। এখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, হলুদ ট্যাক্সিকে বাঁচাতে হবে। আর সেকারণেই পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী হস্তক্ষেপ দাবি করছেন প্রতিটি অ্যাসোসিয়েশনের শীর্ষকর্তারা।
এদিন প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে, পরিবহণ মন্ত্রীর কাছে জানানো হবে, শহরে চলাচলকারী ট্যাক্সিগুলির ভাড়ার নির্দিষ্ট কাঠামো তৈরি করতে হবে। ‘বেস ফেয়ার’ বৃদ্ধি করতে হবে। ২০১৮ সালে শেষবারের মতো এই ‘বেস ফেয়ার’ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এতে চালকদের খুব সমস্যা হচ্ছে।
বর্তমানে পরিবহণ দফতর থেকে নতুন ট্যাক্সি কেনার এবং তারপর পারমিট পাওয়ার ব্যাপারে পরিবহণ দফতর সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় বলে অভিযোগ। কোনও পারমিট এখন দেওয়া হচ্ছে না। সেই পারমিট দেওয়ার ব্যাপারে পরিবহণ দফতরের তরফে সরলীকরণ করতে হবে। যাতে সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কিনে তাকে হলুদ ট্যাক্সিতে রূপান্তরিত করার পর পারমিট পাওয়া যায়।
পুলিশের বিরুদ্ধে জুলুমবাজির অভিযোগ তুলে রীতিমতো তিতিবিরক্ত ট্যাক্সি চালকরা। তাঁদের বক্তব্য, একের পর এক জরিমানা করে ট্যাক্সি চালকদের জীবন অসহ্য করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের এই ভূমিকার বিরুদ্ধে পরিবহণ মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছেন ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা।
এছাড়াও একাধিক বিষয়ে এই বৈঠকে উঠে আসে।
আগামী ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে শহর থেকে প্রায় ৩ হাজার ট্যাক্সি বাতিল হয়ে যাবে। ১৫ বছরের আইনের কারণে এই ট্যাক্সিগুলি বাতিল হতে চলেছে। যে কারণে বেসরকারি ক্যাব সংস্থার দাপট বাড়বে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা। সেই জায়গায় হলুদ ট্যাক্সিকে যদি বাঁচানো যায়, তাহলে চালকদের মনোভাব বদল এর চেষ্টা করা হবে বলেও এদিন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিন তথ্যসহ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা জানান, শহরে সকালের রাস্তায় প্রায় ২৫০০ ট্যাক্সি চলাচল করে। যেগুলি বৈধ কাগজ রয়েছে। রাতে প্রায় ৩০০০ ট্যাক্সি চলাচল করে। যার প্রায় ৯০ শতাংশের কোনও বৈধ কাগজ নেই। এছাড়া চালকের অভাবে এবং অন্যান্য কারণে বিভিন্ন মালিকের বাড়িতে প্রায় ৬৫০০ ট্যাক্সি পড়ে রয়েছে। যেগুলি রাস্তায় নামানো হয় না। এর ফলে শহরের বুকে ট্যাক্সি সঙ্কট তীব্র আকার নিয়েছে।
এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অসীম বসু, ক্যালকাটা ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট গুরু বক্স সিং, ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যাক্সি অপারেটরস কমিটির সাধারণ সম্পাদক নওলকিশোর শ্রীবাস্তব, ক্যালকাটা ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ যশবন্ত সিং, প্রগ্রেসিভ ট্যাক্সি মেনস ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি প্রবীর মহাপাত্র, কলকাতা ট্যাক্সি অপরেটার্স ইউনিয়ন যুগ্ম সম্পাদক মহম্মদ সাজ্জাদ।