কলকাতা: ‘হরি বোল’! দেশে সংশোধিক নাগরিকত্ব আইন (CAA) চালু হওয়ার পরই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এই শব্দবন্ধ লিখেছিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মতুয়াদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পূরণ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, লোকসভা নির্বাচনের ঠিক প্রাক লগ্নে এই বিজ্ঞপ্তি মতুয়া ভোটব্যাঙ্কের অঙ্ক একে একে দুই করার ক্ষেত্রে খুবই জরুরি। কিন্তু এই বিজ্ঞপ্তি জারির পরই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এর তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলেন, “আমরা স্ট্রংলি এটার প্রতিবাদ করব। আমরা আগেই জানিয়ে গেলাম। দ্বিতীয়ত, নো এনআরসি। এনআরসি মানতেই পারি না। আর ক্যা-এর নাম করে কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে এই চালাকিও আমরা করতে দেব না।” মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছিলেন, “আমাদের থিওরি, আমরা সবসময় বলি সবাই নাগরিক। আজ কেউ চাকরি করছে, কেউ স্কুলে পড়ছে, কেউ জমিজমা কিনে দীর্ঘদিন ধরে বসতি তৈরি করেছে। তার মানে সেগুলি ভ্যালিড নয়? ”
সোমবার কেবল মোদী-স্তূতি করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিবাদের পর চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন CAA-এর কার্যকারিতা ও তার কারণ। শুভেন্দু লিখলেন, “ভারতবর্ষের সংবিধান অনুযায়ী কোনও ভারতীয় নাগরিক, তিনি যে প্রদেশেরই হোন না কেন, অন্য কোনও প্রদেশে তাঁকে বহিরাগত আখ্যা দেওয়া যায় না।” শুভেন্দু আরও লেখেন, ” আমরাও কখনও কারুর গায়ে বহিরাগত তকমা সেঁটে দেইনি। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্ব বরাবর নিজেদের সুবিধার্থে ও স্বচ্ছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে সর্বভারতীয় স্তরের নেতাদের বহিরাগত বলে চিহ্নিত করেছে।”
উল্লেখ্য, এর আগে অবশ্য একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেতৃত্ব বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ‘বহিরাগত’ বলে কটাক্ষ করেছেন। সে বিষয়টিকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, বাংলার দল হলেও তৃণমূল লোকসভা ও রাজ্যসভার নির্বাচনে যে সকল প্রার্থীদের দাঁড় করিয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই সে অর্থের বাইরের রাজ্যেরই। লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুরের প্রার্থী হিসাবে তৃণমূল ইউসুফ পাঠানকে দাঁড় করিয়েছে তৃণমূল। তিনি আদতে গুজরাটের বাসিন্দা। আর আসানসোলে তৃণমূল দাঁড় করিয়েছে বিহারের শত্রুঘ্ন সিনহাকে। শুভেন্দুর কথায়, বাংলার দল কীভাবে বাইরে থেকে প্রার্থী এনে নির্বাচনী ময়দানে আনল? যেখানে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে তারাই কিনা ‘বহিরাগত’ তকমা দেগে দেন। সেই বিষয়টি উল্লেখ করেই শুভেন্দু লিখেছেন, “আজ আয়নাটা ওনাদের মুখের সামনে তুলে ধরলাম।”