কমিশনের কোপ এড়াতেই ‘গুড বুকে’ না থাকা পুলিশ অফিসারদের বদলি? নবান্নর বিজ্ঞপ্তিতে জল্পনা

ঋদ্ধীশ দত্ত |

Feb 06, 2021 | 6:47 PM

বিরোধীদের অভিযোগের পাশাপাশি কমিশনের নজরও এঁদের অনেকেরই ওপর ছিল। সিংহভাগই কমিশনের 'গুডবুকে' ছিলেন না বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের। গত মাসে যখন কমিশনের ফুল বেঞ্চ রাজ্যে আসে, তখনই রাজ্য প্রশাসনকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল।

কমিশনের কোপ এড়াতেই গুড বুকে না থাকা পুলিশ অফিসারদের বদলি? নবান্নর বিজ্ঞপ্তিতে জল্পনা
ফাইল চিত্র

Follow Us

কলকাতা: জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল শুক্রবার বিকেল থেকেই। শনিবার বিকেলে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর বেশ কিছু শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের রদবদলে সিলমোহর দিল। নবান্নর তরফে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের ২৪ জন উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে ২২ জন আইপিএস অফিসারের নাম রয়েছে। ভোটের আগে প্রশাসনিক স্তরে এহেন বদলির জেরে নানা মহলে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, নির্বাচনের সময় কমিশনের কোপ এড়াতেই কি এদের অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি করা হল?

এই বদলির তালিকায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার। তাঁকে সিআইডি-র আইজিপি ও এডিজি পদে আনা হয়েছে। আর কলকাতার নতুন নগরপাল হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আইপিএস সৌমেন মিত্র। অন্যদিকে, ড. দেবাশীষ রায়কে সরানো হয়েছে এডিজি ও আইজিপি-এপি পদ থেকে। তাঁকে ট্রেনিং বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। সিআইডি-র আইজিপি ও এডিজি পদ থেকে আইপিএস সিদ্ধার্থনাথ গুপ্তকে দক্ষিণবঙ্গের আইজিপি ও এডিজি পদে নিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আলোচনার কেন্দ্রে নাম থাকা আরেক আইপিএস জ্ঞানবন্ত সিংকে এডিজি আইনশৃঙ্খলা পদ থেকে সরিয়ে আনা হচ্ছে ড. দেবাশীষ রায়ের ছেড়ে যাওয়া পদে। অন্যদিকে এডিজি আইনশৃঙ্খলা করা হয়েছে জাভেদ শামিমকে।

বারাকপুর, হাওড়া ও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনারদেরও এদিন বদলির নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। মনোজ কুমার ভার্মার জায়গায় অজয় কুমার নন্দ বারাকপুরের নতুন কমিশনার হয়েছেন। হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের নতুন কমিশনার হয়েছেন সি সুধাকর, তিনি কুণাল আগরওয়ালের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে আইপিএস মুকেশকে বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে সুপ্রতিম সরকারকে নিয়ে আসা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘অনেক হয়েছে মমতা, পরিবর্তন চাইছে জনতা’, রথ যাত্রার শুরুতেই নাড্ডার হুঙ্কার

পুলিশের যে শীর্ষ কর্তাদের বদলি করা হয়েছে, তাঁদের বেশিরভাগই নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছে। কেননা, বিরোধীদের অভিযোগের পাশাপাশি কমিশনের নজরও এঁদের অনেকেরই ওপর ছিল। সিংহভাগই কমিশনের ‘গুডবুকে’ ছিলেন না বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের। গত মাসে যখন কমিশনের ফুল বেঞ্চ রাজ্যে আসে, তখনই রাজ্য প্রশাসনকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। বিতর্কে নাম রয়েছে বা নাম জড়াতে পারে বলে অনুমান, এমন আধিকারিকদের যেন আগেভাগেই বদলি করে দেওয়া হয় তা বলেছিল কমিশনের ফুল বেঞ্চ। তাহলে কমিশনের মেজাজ বুঝেই কি এই পদক্ষেপ গ্রহণ করল নবান্ন, তৈরি হচ্ছে জল্পনা।

এই বদলির তালিকায় রয়েছেন অজয় মুকুন্দ রানাডে, রাজীব মিশ্র, ত্রিপুরারি অর্থব, জয়ন্ত কুমার পাল, তন্ময় রায় চৌধুরী, প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠী, শিস রাম ঝঝরিয়া, ভি সলোমন নেশাকুমার, ভিদিত রাজ ভুন্দেশ, অনুপ জয়সওয়াল, কৌস্তভদীপ্ত আচার্য এবং মীর শাকির আলির মতো উর্দিধারীরা।

আরও পড়ুন: শুভেন্দুর তৃণমূল ছাড়ার আসল কারণ জানালেন অভিষেক

Next Article