কলকাতা: প্রয়াত হলেন ত্রিপুরার সিপিএমে(CPIM)র সম্পাদক তথা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাস(Gautam Das)। সম্প্রতিই তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, চিকিৎসার জন্যই তাঁকে গত ৬ সেপ্টেম্বর কলকাতায় আনা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
চলতি মাসের শুরুতেই তিনি করোনা (COVID-19) আক্রান্ত হন। বয়সজনিত কারণে শারীরিক জটিলতা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ৬ সেপ্টেম্বর তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে (Air Ambulance) করে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। কলকাতারই একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল রাতেই তাঁর ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং এ দিন সকাল ৬টা ৪৫ মিনিট নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তাঁকে হাসপাতালে শেষ দেখা দেখতে যান বিমান বসু ও সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ত্রিপুরা সিপিএমের সদস্যরা।
তবে জানা গিয়েছে, মৃত্যুর ৪৮ ঘণ্টা আগে গৌতম দাসের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। হাসপাতাল থেকেই এই তথ্য টুইট করে জানান তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ। করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা না থাকায় আগরতলায় তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখানেই শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে অন্তেষ্ট্যি ক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এ দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার বিমানে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলেন গৌতম দাস। ১৯৭০ সালে তিরুঅন্ততপুরম (তৎকালীন ত্রিবান্দ্রম) এসএফআই গঠনের লক্ষ্যে সম্মেলন করা হয়। সেখানেই প্রতিনিধি ছিলেন গৌতম দাস। রাজ্য থেকে উপস্থিত ছিলেন সুভাষ চক্রবর্তী, শ্যামল চক্রবর্তীর মতো বরিষ্ঠ নেতারা। ত্রিপুরা থেকে উপস্থিত ছিলেন সিপিএম শীর্ষ নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। উল্লেখ্য, এই সম্মেলন থেকেই এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন বিমান বসু।
তবে রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ রাখেননি নিজের কাজ। ত্রিপুরায় সিপিএমের মুখপত্র “ডেইলি দেশের কথা” নামক সংবাদকপত্রেরও সম্পাদক ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালেই তিনি বিজন ধরের হাত থেকে দলের মুখপত্র পরিচালেনের দায়িত্ব নেন।
বর্তমানে রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত ত্রিপুরা। গত সপ্তাহেই বিজেপির সঙ্গে সিপিএমের সদস্যদের সংঘর্ষ ও দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটে। সিপিএমের সম্মেলন প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে ত্রিপুরায়। এই পরিস্থিতিতেই রাজ্য সম্পাদকের মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে পরবর্তী সম্পাদক কে হবেন, তা নিয়ে।
সূত্রের খবর, নতুন সম্পাদক হিসাবে নাম উঠে আসছে জিতেন্দ্র চৌধুরীর। সম্প্রতিই ত্রিপুরায় হিংসার ঘটনায় সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার যে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন, তাতেও জিতেন্দ্র চৌধুরিকে দেখা গিয়েছিল। সেই সময় থেকেই নতুন সম্পাদক হিসাবে তঁর নাম ঘিরে জল্পনা শুরু হয়। গৌতম দাসের প্রয়াণের পর দলের সম্পাদকের দায়িত্ব তিনিই পান কিনা, এ বার তা দেখার অপেক্ষা।
আরও পড়ুন: ‘অন্য রাজ্য থেকে লোক আনা হচ্ছে, তাই অর্পিতা ঘোষের পদত্যাগ’, বললেন দিলীপ