কলকাতা: মমতা-সনিয়াদের টিম ‘ইন্ডিয়া’ আজ গিয়েছে মণিপুরে। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ২১ সাংসদের প্রতিনিধি দল মণিপুরে গিয়েছেন সেখানকার বাস্তব চিত্র সরেজমিনে ঘুরে দেখতে। বিরোধী সাংসদদের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী, তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেবরা। বিরোধী সাংসদদের মণিপুর যাওয়া নিয়ে এবার খোঁচা দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। সরাসরি অধীরের উদ্দেশে প্রশ্ন তুলে দিলেন, তিনি এবার পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি দেখানোর জন্য বিরোধী সাংসদদের বাংলায় ডেকে আনবেন কি না।
শনিবার সকালেই রাজ্যে এসেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। একগুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। প্রথমে কামারপুকুরে রামকৃষ্ণ মঠে যাওয়ার কথা রয়েছে অনুরাগের। তারপর খানাকুলে পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির জয়ী প্রার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়ার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। আজ কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণের পরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে একহাত নিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, ‘ইন্ডিয়া জোটের সাংসদদের মণিপুরে যাওয়া একপ্রকার লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই নয়।’
রাজ্য রাজনীতিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক তেলেবেগুনে। কথায় কথায় তৃণমূলকে বিঁধে আক্রমণ শানান অধীর। আঞ্চলিক স্তরে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের বন্ধুত্বতেও ঘোর আপত্তি অধীররঞ্জন চৌধুরীর। এক কথায় বলা যায়, বাংলায় সনিয়াদের সঙ্গে মমতার বন্ধুত্বের পথে একমাত্র অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন অধীর চৌধুরী। কিন্তু আজ সেই অধীররঞ্জন চৌধুরীই তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেবের সঙ্গে মণিপুরে গিয়েছেন সেখানকার বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর আজ সরাসরি প্রশ্ন তুলে দেন অধীরের উদ্দেশে। বললেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের উপর অত্যাচার হয়েছে, ভোটে মানুষের রক্ত ঝরেছে, মৃত্যু হয়েছে। কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলির নেতারা কি পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি দেখতে আসবেন? কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভায় তাদের নেতার উদ্দেশে আমার এই প্রশ্ন। নিজের রাজ্যেও কি আপনাদের জোটের বাকি সাংসদদের নিয়ে আসবেন আপনি? যাঁরা খুন হয়েছে, তাঁদের বাড়িতে নিয়ে যাবেন?’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে পাল্টা দিয়েছেন রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। অতীতে অনুরাগ ঠাকুরের ‘গোলি মারো’ মন্তব্য ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, সেই নিয়েও খোঁচা দিয়েছেন শশী পাঁজা। রাজ্যের মন্ত্রীর দাবি, অনুরাগ ঠাকুর পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে সন্ত্রাসের কথা বলছেন, সেই সন্ত্রাস বিজেপিই চালিয়েছে বাংলায়। বিজেপির প্রতিনিধি দল কেন মণিপুরে যাচ্ছে না, সেই নিয়েও পাল্টা প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন শশী পাঁজা।
এদিকে রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র ঋজু ঘোষাল আবার অনুরাগ ঠাকুরের প্রশ্নের জবাব দিয়ে বলছেন, ‘ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা নিশ্চয়ই আসবেন বাংলায়। বাংলায় ২০১৮ সালে ও ২০২১ সালের হিংসায় সবথেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছে বামপন্থী আর কংগ্রেসরা। এনআইএ ক’জনকে গ্রেফতার করেছে ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায়? অনুরাগ ঠাকুরকে এই প্রশ্নগুলোরও উত্তর দিতে হবে। অনুরাগ ঠাকুরের দল কী করেছে পশ্চিমবঙ্গে?’ পাল্টা তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির সেটিং তত্ত্বই উস্কে দিচ্ছেন ঋজু ঘোষাল।