কলকাতা: ‘কাউকে রেহাত নয়। তিন মাসের মধ্যে ফল পাবেন’। বিগত কয়েক বছরে যা দেখা যায়নি এবারের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে তেমন ছবিই দেখা গিয়েছিল। একেবারে অন্য মেজাজে ধরা দিয়েছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে একাধিক আসনে দলের ‘পরাজয়’, ‘পিছিয়ে পড়া’ সম্পর্কে ময়নাতদন্ত চলছিল। তার রিপোর্টও প্রায় তৈরি। আর তার উপর ভিত্তি করেই যে তৃণমূলে বড় রদবদল হতে চলেছে তা নিয়ে সাম্প্রতিককালে নানা জল্পনা চলেছে। কিন্তু, কোন পথে হবে সেই রদবদল? কোপ পড়বে কাদের ঘাড়ে? সূত্রের খবর, শাসকদলের সংগঠনে বদল হতে পারে নরমে-গরমে! বদলের ফর্মুলা নিয়ে জোরদার কাটাছেঁড়া চলছে তৃণমূলের অন্দরে। ক্যামাক স্ট্রিটে কান পাতালে শোনা যাচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চান, লোকসভা ভোটে শহরাঞ্চলে ফল খারাপ হওয়া এলাকায় একবারে খোলনলচে বদলে ফেলতে। বিরোধীদের থেকে পিছিয়ে পড়া এলাকায় শহর বা টাউন সভাপতি বদলের সঙ্গেই পুরসভার চেয়ারম্যান বদলও হোক, চান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আর তা হোক সর্বত্র।
প্রসঙ্গত, ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে অভিষেক সাফ বলেছিলেন, এই নির্বাচনে পঞ্চায়েত বা কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান থেকেও মানুষকে বোঝাতে সফল হননি। আমরা সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। কাউকে রেয়াত করা হবে না।” তবে শুধু অভিষেক একা নন, মমতাও দিয়েছেন ‘শুদ্ধিকরণের’ বার্তা। একুশের মঞ্চ থেকেই দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, “যেখানে আমরা জিতিনি, সেখানে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে বলবেন, আমাদের ক্ষমা করবেন, হয়তো আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতায় কোনও খামতি ছিল, আগামী দিন যাতে না হয়, আমরা দেখব।”
সূত্রের খবর, এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান, সব না বদলে কিছুটা বদলাতে। ৩০/৪০ শতাংশ বদলের পক্ষপাতি তৃণমূল নেত্রী। তাঁর মতে, সব বদলে দিলে চলবে কী করে? কিছু বদল হোক। বাকিদের রেখেই ছাব্বিশের লক্ষ্যে সংগঠন কাজ করুক।
ফর্মুলা কী?
অভিষেক চান পিছিয়ে পড়া এলাকা মানেই সেই এলাকায় রদবদলের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তা বড় ব্যবধান হোক কিংবা ছোট ব্যবধান হোক। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপাতত কম ব্যবধানের এলাকায় সব ছেঁটে ফেলতে নারাজ। তৃণমূল সূত্রে খবর, যেসব এলাকায় বড় ব্যবধানে বিজেপি-সহ বিরোধীরা লিড পেয়েছে, সেই সব এলাকায় বদল হবে, এটা মোটামুটি নিশ্চিত। ইতিমধ্যেই বিজেপির সঙ্গে কারা হাত মিলিয়ে তলে তলে তৃণমূলকে ‘ডুবিয়েছে’ তাঁর রিপোর্ট দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের অফিসে জমা পড়তে শুরু করেছে বলে খবর। সংগঠনে রদবদলে ওই রিপোর্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে বলেই খবর।