কলকাতা : আচার্য বিলের পর এবার বিধানসভায় পাশ হয়ে গেল ভিজিটর বিল। মঙ্গলবার বিধানসভায় এই বিল পাশ হয়েছে। এই বিল অনুযায়ী, রাজ্যের বেসরকারি বিশ্ববিদ্য়ালয়গুলিতে এবার থেকে রাজ্যপালের বদলে ভিজিটর পদে থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে এ দিন কোনও ভোটাভুটি হয়নি। আচার্য বিল পাশ হওয়ার সময় ভোটাভুটিকে কারচুপির অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। সেই কারণেই এ দিন তাঁরা ভোটাভুটি চাননি বলে দাবি বিরোধী বিধায়কদের। বিল পাশের পর শিক্ষামন্ত্রীর জবাবি ভাষণের সময় বিধানসভা কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান বিরোধী বিধায়কেরা।
প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি লজ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল পাশ হয় এ দিন। বিল পাশ হওয়ার পর শিক্ষামন্ত্রী ব্যাখ্যা করেন, রাজ্যপাল রাজ্যের বিরোধী। তাই এই ধরনের বিল আনতে হচ্ছে সরকারকে। তবে ভবিষ্যতে পরিস্থিতির বদল হলে এ ক্ষেত্রেও বদল হতে পারে অর্থাৎ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটর পদে রাজ্যপালকে আবার দেখা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্রাত্য।
শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, যুগ্ম তালিকা ভুক্ত ক্ষেত্রে রাজ্যের আইনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় আইনের যদি সরাসরি বিরোধ হয়, তাহলেই রাষ্ট্রপতি কাছে যেতে পারে কোনও বিল। তবে এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই দাবি করেছেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রী জানান, এই ধরনের বিলের ক্ষেত্রে রাজ্যপাল ফেরত পাঠালে আবার তা রাজ্যপালের কাছেই পাঠানো হয়, তারপর তিনি সই করে দিতে বাধ্য। বিজেপি ভুল বলছে বলেই দাবি মন্ত্রীর।
তাঁকে ভিজিটর পদে বসানো নিয়ে কেন বিরোধীদের এত অসন্তোষ? সেই প্রশ্ন তুলে ব্রাত্য এ দিন বলেন, ‘থিয়েটার করি বলে অপরাধ? ডাক্তার বা পুলিশ হলে এমন বলতে পারতেন?’ রাজ্যপাল অতি সক্রিয় রাজনীতি করছেন বলে অভিযোগ তুলে ব্রাত্য বলেন, ‘রাজ্যপাল রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলেন। ফলে রাজনীতিকরণ রাজ্যপালের হাত ধরেই আসছে।’
ব্রাত্য আরও দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে রাখার ঘটনা তৃণমূলের আমলে কখনও হয়নি। এই সরকারের সময়েই সবথেকে বেশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও উল্লেখ করেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনও হস্তক্ষেপ চায় না রাজ্য। রাজ্যপাল থাকলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে অনেকেই এগিয়ে আসবেন না।
আলোচনায় অংশ নিলেও শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের সময় বিধানসভা বয়কট করে বেরিয়ে যান বিরোধী বিধায়কেরা। বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষের বক্তব্য, ‘গতবার ভোটে কারচুপি হয়েছে। আবার হবে। তাই বেরিয়ে গেলাম।’
অন্যদিকে, তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘ওরা কিছু বোঝে না। বয়কট করবে নাকি, থাকবে তাও ঠিক করতে পারছিল না।’ তবে আপাতত বিধানসভায় এই বিল পাশ হয়ে যাওয়ার পর রাজ্যপালের সই-এর অপেক্ষা। এর আগে সোমবার বিধানসভায় পাশ হয়েছে আচার্য বিল। সেই বিল অনুসারে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যপালের বদলে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। দুই বিল নিয়েই কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা।