West Bengal Flood Situation: ‘ঝাড়খণ্ডের বোঝা চাপছে ঘাড়ে’, শনিবার আকাশপথে বানভাসি এলাকা পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রী

CM Mamata Banerjee: বন্যা দুর্গত এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে। আগামিকাল, শনিবার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

West Bengal Flood Situation: 'ঝাড়খণ্ডের বোঝা চাপছে ঘাড়ে', শনিবার আকাশপথে বানভাসি এলাকা পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রী
শনিবার বানভাসি এলাকা পরিদর্শনে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 01, 2021 | 1:24 PM

কলকাতা: ভারী বৃষ্টিতে প্লাবন পরিস্থিতি। ফুঁসছে একের পর এক নদী। বাঁধের বিপত্তি জেলায় জেলায়। পুজোর মুখে ফের দুর্যোগের মেঘ। ভরা আশ্বিনেও ভরাডুবির আশঙ্কা দক্ষিণের একাধিক জেলায়। তবে বাংলায় বন্যা পরিস্থিতির জন্য আবারও ডিভিসিকে (DVC) তোপ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। না জানিয়েই জল ছেড়েছে ডিভিসি, আবারও অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “ঝাড়খণ্ডের বোঝা বইতে হচ্ছে বাংলাকে।” বন্যা দুর্গত এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে। আগামিকাল, শনিবার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নবান্ন সূত্রে খবর, আকাশপথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়া, হাওড়া, পুরুলিয়া ও হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখবেন। উল্লেখ্য, দু’মাস আগেই হাওড়ার বানভাসি এলাকা, আমতা পরিদর্শনে গিয়ে ডিভিসিকে দায়ী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। ২০০০ সালে রাজ্য জুড়ে বন্যার পর মমতা ‘ম্যান মেড’ তত্ত্ব। তার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ২০১৭ সালে এই হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গিয়েও এমনটাই বলেছিলেন তিনি।

দু’মাস আগে বন্যা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিভিসি ইস্যুতে সরকারিভাবে খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। চারপাতা সেই চিঠির প্রথম লাইনেই মুখ্য়মন্ত্রী লিখেছেন এই বন্যা ‘ম্যান মেড’। পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক সীমারেখা স্পষ্ট করে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ডিভিসির জল ছাড়ার জন্যই ডুবতে বসেছে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলা। যদিও পাল্টা ডিভিসির পক্ষ থেকে সে সময় জানানো হয়েছিল,  রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে একটুও জল ছাড়ে না তারা। জল ছাড়ার পুরো বিষয়টিই রাজ্যের গোচরে রয়েছে। এবারও সেই একই তত্ত্ব খাঁড়া করেন মুখ্যমন্ত্রী।

দুর্গত এলাকাগুলিতে ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও এনডিআরএফ টিম। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে পৌঁছেছে ২ কলম সেনা। দুর্গতদের উদ্ধারকাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ৮ হাজার মানুষ দুর্গম এলাকা থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। এই খবরটি সম্প্রচারিত হওয়ার সময়ই খবর আসে, হাওড়ার নরনারায়ণচকের একটি বাঁধ ভেঙে ভেসে যায় গোটা গ্রাম।

ইতিমধ্যেই নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। জেলাশাসক ও পুলিশ সুুপারদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। বৈঠকে ছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। ইতিমধ্যেই একাধিক জায়গায় দুর্গতদের উদ্ধারে পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী, নামানো হয়েছে এনডিআরএফ টিম।

আরামবাগ, হুগলি

গোঘাটের ভাদুরে দারকেশ্বর নদীর বাঁধ ভেঙেছে ইতিমধ্যেই। রাতে হু হু করে জল ঢোকে আরামবাগ শহরে। রাতে বিদ্যুত্হীন হয়ে পড়ে এলাকা। গোটা শহর অন্ধকার। দ্বারকেশ্বর নদীর জল গ্রামে হু হু করে ঢুকতে শুরু করে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। ত্রাণ শিবিরে যাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। রাজ্য সড়কের ওপর দিয়েই বইতে থাকে ৬-৭ ফুট জলের স্রোত। রাতেই আরামবাগ শহরে ৩ কোম্পানি সেনা নামানো হয় উদ্ধার কার্যের জন্য।

বিপর্যয় বাড়ে আরও। খানাকুলের বন্দিপুরে দারকেশ্বরের নবনির্মিত বাঁধ ভেঙে এলাকায় হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে। এরপর আরামবাগ পেরিয়ে তারকেশ্বরে রাজ্য সড়কের ওপর দিয়ে জল বইতে শুরু করে।

হাওড়া

ডিভিসি জল ছাড়ায় হাওড়া জগতবল্লভপুর এলাকায় প্রায় দশটি জায়গায় কানা নদীর বাঁধ ভেঙে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত। সেই কারণে জগৎবল্লভপুর পুলগুষ্টিয়া অঞ্চলের ইসলামপুর, বরগেছিয়া, কমলাপুর, উদয়নারায়ণপুর লাগোয়া কিছু গ্রামে ইতিমধ্যেই জল রয়েছে। তাই প্রশাসনের তরফে সতর্ক করা হচ্ছে। এলাকায় চলছে মাইকিং। উদয়নারায়ণপুরে নামানো হয়েছে এনডিআরএফ-এর টিম। করা হয়েছে হেলিপ্যাড গ্রাউন্ড।

ইতিমধ্যেই আরামবাগ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মন্ত্রী বেচারাম মান্নাকে পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকালেই তাঁকে ফোন করে দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

আরও পড়ুন: Ghatal Flood Situation: মা-বাবা তখনও ঘুমোচ্ছিলেন! ঘরের হাঁটু সমান জলে ভাসছে চার বছরের ছেলের শরীরটা