কলকাতা: কোথায় পৌষের ওমে মৌতাত জমবে বাংলায়, কুয়াশা কেটে খেজুর গাছ থেকে রসভর্তি হাঁড়ি নামাবে ‘শিউলি’! তা না আবহাওয়া দফতর এখন শোনাচ্ছে বৃষ্টির পূর্বাভাস। সে ধারাপাতের সঙ্গে আবার মিলে যেতে পারে বিদ্যুতের ঝলকানি, বাজের মন্দ্র, ঝোড়ো হাওয়ার দাপট। সোমবার থেকেই রাজ্যের পশ্চিমের জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
একইসঙ্গে মঙ্গলবার বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি এমনকী শিলাবৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে। বইবে ঝোড়ো হাওয়া। কলকাতা-সহ রাজ্য জুড়ে এই বৃষ্টি চলবে। কোথাও বৃষ্টির চাল হালকা, কোথাও বা মাঝারি হতে পারে। শিলাবৃষ্টি মূলত হবে উত্তরবঙ্গে। দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দোপাধ্যায় বলেন, “আজ থেকে বৃষ্টি শুরু হবে পশ্চিমের জেলাগুলিতে। মঙ্গলবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতা-সহ রাজ্য জুড়ে বৃষ্টি হবে। মূলত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হবে। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ কম হবে। দার্জিলিং, কালিম্পয়ে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।”
একইসঙ্গে সঞ্জীব বন্দোপাধ্যায় জানান, “১২ তারিখ হালকা বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সমস্ত জেলাতেই। ১৩ ও ১৪ জানুয়ারিও বৃষ্টি থাকবে তবে ১২ তারিখের তুলনায় কমবে দাপট। ১১ থেকে ১৪ আমরা দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টি পাব। সোমবার রাত থেকে শুরু হবে পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায়। ১১ তারিখ বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে পশ্চিমের জেলাগুলিতে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমানের দু’ এক জায়গায় শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।”
সাগর মেলাতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আপাতত রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের উপরে থাকায় শীতের অনুভব কম হবে। একইসঙ্গে তিনি জানান, বৃষ্টির কারণে আলু চাষ ও সবজি চাষে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। মাঘের প্রথম সপ্তাহে ফের তাপমাত্রা কমতে পারে।
ইতিমধ্যেই নবান্ন থেকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে জেলার কৃষি আধিকারিকদের কাছে। কৃষি আধিকারিকদের সবরকমভাবে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। বৃষ্টি হলে চাষিদের শস্যের ক্ষয়ক্ষতি হবেই। বিশেষ করে আলু চাষিদের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হতে পারে এই বৃষ্টি। নবান্নের তরফে বলা হয়েছে, এর জন্য ব্লকের কৃষি আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। এখন রবিশস্যের সময়। একইসঙ্গে এই সময় বোরো ধানও চাষ হয়। সেসব দিকে নজর রাখার কথা বলা হয়েছে।
গত সপ্তাহের শেষ থেকেই আচমকা আবহাওয়া বদলাতে থাকে। ডিসেম্বরেও উত্তুরে হাওয়ার যে কামড় টের পাওয়া গিয়েছিল, জানুয়ারি পড়তেই তা কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছে। রবিবার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। সোমবার সকালের কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
হাওয়া অফিস বলছে, বুধবার অবধি এই তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখীই থাকবে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা আসছে শীতের কাঁটা হয়ে। রাজস্থান থেকে বাংলায় আসবে সেই ঝঞ্ঝা, যার জেরে এই পৌষবেলাতেও ভিজবে বাংলা। শুধু তাই নয় শিলাবৃষ্টিও হতে পারে অসময়ে।
আরও পড়ুন: Weather Update: পৌষেও বৃষ্টির ভ্রুকুটি, এ কোন অশনি সঙ্কেত! প্রমাদ গুনছেন চাষিরা