Weather Update: ২১৬ দিন পর ভারী বৃষ্টি, তাপমাত্রা নেমেছে হু হু করে, আজও কি তোলপাড় চলবে?

Weather Update: অপ্রাপ্তি মিটে যাওয়ার সুযোগ থাকছে। অন্তত রবিবার পর্যন্ত রাজ্যের সব জেলায় ঝড়-বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি। আজও জেলায় জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস উত্তর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে। প্রকৃতির ইঙ্গিত, ভ্যাপসা গরম একটু নাকাল করতে পারে, কিন্তু বৈশাখে আর তাপের জ্বলুনি ফেরত আসার ভয় কম।

Weather Update: ২১৬ দিন পর ভারী বৃষ্টি, তাপমাত্রা নেমেছে হু হু করে, আজও কি তোলপাড় চলবে?
প্রতীকী চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 07, 2024 | 12:14 PM

বৃষ্টি জাদুকাঠি ছুঁয়ে দিতেই চোখের নিমেষে ভোলবদল। সাত দিন আগে উষ্ণতার রেকর্ড গড়েছিল কলকাতা। দিনেও, রাতেও। আলিপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে এপ্রিলের সর্বকালীন রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছিল। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় ৭০ বছরের রেকর্ড। ১৯৫৪ সালের পর এপ্রিলে আর কখনও ৪৩ ডিগ্রি ছোঁয়নি আলিপুরের তাপমাত্রা। সোমবার মেঘ একটু ছায়া দিতেই মহানগরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে আসে ৩৫.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ২৩ দিন পর ৩৬ ডিগ্রির নীচে পারদ। সন্ধ্যায় বৃষ্টি নামতেই ম্যাজিক। রাত সাড়ে আটটায় পারদ নামে ২২.৪ ডিগ্রিতে। মাত্র ৬ ঘণ্টায় ১৩ ডিগ্রি পারদপতন। শেষমেশ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ডের সময় পারদ নামে ২১.৭ ডিগ্রিতে

শেষ কবে এমন ‘শীতল’ রাত পেয়েছিল কলকাতা?

আবহাওয়া দফতরের নথি বলছে, ২২ মার্চ আলিপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৪৬ দিন পর তার এত কাছাকাছি পারদ নামল আলিপুরে। জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কিছুটা কম। ঝাড়গ্রামে পারদ নেমেছে ১৮ ডিগ্রিতে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, দমদমে কুড়ির ঘরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আজ সকালের পর মেঘ কেটে রোদ উঠতে শুরু করেছে। তাও আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২-৩৪ ডিগ্রির আশপাশে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা। ম্যাজিক ছাড়া কী-ই বা বলা যায় একে?

ম্যাজিকের নেপথ্যে ঝাড়খণ্ডের ঘূর্ণাবর্ত। সেই ঘূর্ণাবর্ত থেকে মধ্য প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত নিম্নচাপ অক্ষরেখা। এই জোড়া ফলার হাত ধরেই পিছু হটেছে গরম হাওয়া। আপাতত ছুটি তাপপ্রবাহের। সোমবার দুপুরেই উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায়, ঝাড়খণ্ড, বাংলাদেশ, দু’দিক থেকে দক্ষিণবঙ্গের অন্দরে মেঘ ঢুকছে। একেবারে শুরুতে পশ্চিমের জেলা ও নদিয়ায় ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। পরে কলকাতা ও লাগোয়া জেলার আকাশেও চলে আসে জলভরা মেঘ। ঝড় ওঠে, সঙ্গে ঝেঁপে বৃষ্টি।

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত) ৭০.৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে আলিপুরে। অঙ্কের হিসেবে ভারী বৃষ্টি। গোটা এপ্রিলে মাত্র ০.৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। সেই বঞ্চনা তো মিটলই, উল্টে প্রাপ্তি ভারী বর্ষণ। নথি বলছে, গত বছর ৪ অক্টোবরের পর, এই প্রথম, অর্থাৎ ২১৬ দিন পর ভারী বৃষ্টি পেল কলকাতা। ৪ অক্টোবর নিম্নচাপের জেরে ৬৫.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল আলিপুরে। এ বারের প্রাপ্তি তার চেয়েও খানিকটা বেশি।

অবশ্য এত প্রাপ্তির মধ্যেও একটা অপ্রাপ্তি কলকাতার। রুদ্রমূর্তি নিয়ে ঝড় উঠলেও কালবৈশাখী ‘মিস’ আলিপুরের। কী ভাবে? কালবৈশাখীর শর্তপূরণের জন্য ঝড়ের গতিবেগ আচমকা ৪৫ কিমি/ঘণ্টা বা তার চেয়ে বেশি গতিবেগে পৌঁছতে হয়। এবং সেই গতিবেগে অন্তত এক মিনিট স্থায়ী হতে হয় ঝড়। সোম-সন্ধ্যায় প্রথম শর্ত তিন বার পূরণ হলেও, দ্বিতীয় শর্ত একবারও পূরণ হয়নি। আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলছে, সন্ধে ৭টা ৩৫ মিনিটে ঝড়ের গতিবেগ ওঠে ৫০ কিমি/ঘণ্টায়। সন্ধে ৭টা ৫০ মিনিটে ঝড়ের গতিবেগ ওঠে ৭৪ কিমি/ঘণ্টায়। শেষবার গতি আরও বেশি। রাত ৮টা ৫৯ মিনিটে ঝড়ের গতিবেগ ওঠে ৭৭ কিমি/ঘণ্টায়। কিন্তু স্থায়িত্ব এক মিনিট না হওয়ায়, অঙ্কের হিসেবে একবারও কালবৈশাখীর শর্তপূরণ হয়নি। আলিপুরের নথিতে কালবৈশাখী নয়, তিনটি উদাহরণই লেখা থাকবে দমকা বাতাস হিসেবে।

তবে অপ্রাপ্তি মিটে যাওয়ার সুযোগ থাকছে। অন্তত রবিবার পর্যন্ত রাজ্যের সব জেলায় ঝড়-বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি। আজও জেলায় জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস উত্তর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে। প্রকৃতির ইঙ্গিত, ভ্যাপসা গরম একটু নাকাল করতে পারে, কিন্তু বৈশাখে আর তাপের জ্বলুনি ফেরত আসার ভয় কম।