কলকাতা: পূর্ব ঘোষণা মতোই ওঁরা কেউ বিধানসভা অধিবেশনে (West Bengal Assembly) যোগ দেননি। কিন্তু খাতায় সই করেছেন। প্রত্যেকেই নিয়ম মাফিক পাবেন তাঁদের দৈনিক প্রাপ্য ভাতাও। বিজেপি বিধায়কদের এই পদক্ষেপেই বিধানসভায় চর্চা তুঙ্গে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল, কুমারগ্রামের মনোজকুমার ওঁরাও, ইন্দাসের বিধায়ক নির্মল কুমার ধারা ও ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ সখা-সহ আরও অনেকে। কেন তাঁরা অধিবেশনে যোগ দিলেন না, তা স্পষ্ট। কিন্তু কেন তাঁরা সই করলেন, তা নিয়েই জোর চর্চা চলছে। শাসকদলের ব্যাখ্যা, বিধানসভায় গিয়ে হাজিরা খাতায় সই করে দৈনিক ভাতা আদায়ের পথ খোলা রাখছেন বিজেপি বিধায়করা। টানাপোড়েন শুরু হয়েছে বিজেপি পরিষদীয় দলেও।
বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনে অংশ না নেওয়ার মনোভাব আগেই প্রকাশ করেছিল বিজেপি পরিষদীয় দল। তারা ১৬ নভেম্বরের পর অধিবেশন শুরুর প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সরকার পক্ষ তা মানেনি। পরিষদীয় দলের এই সিদ্ধান্তে বিজেপি বিধায়কদের একাংশের মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। কারণ, সরকার পক্ষের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অধিবেশনের দিনগুলিতে অনুপস্থিত থাকলে তাঁরা দৈনিক ভাতা থেকে বঞ্চিত হবেন। যেটা তাঁরা চাইছেন না। আবার তাঁদের অনেকেই শাসকদলের সমালোচনার ভয় পাচ্ছিলেন। কিন্তু ৩৬ হাজার টাকার প্রাপ্য ভাতা আদায়ে সরকারের সমালোচনায় কান দেননি বিজেপির বেশ কয়েকজন বিধায়ক।
মঙ্গলবার অধিবেশনে যোগ না দিলেও খাতায় সই করলেন তাপসী মন্ডল হলদিয়া, কুমারগ্রাম বিধানসভার বিধায়ক মনোজকুমার ওরাও , ইন্দাসের বিধায়ক নির্মল কুমার ধারা, ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ সখা, সোনামুখীর বিধায়ক দিবাকর ঘরামি- সহ আরও অনেকে। ফলে ভাতার টাকা পাবেন তাঁরা।
শাসকদলের তরফে ইতিমধ্যেই ধেয়ে এসেছে বাণ। শাসকদলের কটাক্ষ, ‘ওঁরা অধিবেশনে থাকবেন না। ভাতা নেবেন।’
সোমবার থেকেই বিধানসভার (Assembly) শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয়। বিধানসভার অধিবেশনের শুরুতেই বিঘ্ন। শোকপ্রস্তাব পাঠ ও নীরবতা পালনের সময় বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে বেজে ওঠে মোবাইল। ক্ষুব্ধ হন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এটা পরিতাপের বিষয় যে বারবার বলা হলেও দেখা যাচ্ছে শোকপ্রস্তাবের সময়েও ফোন বেজে উঠছে। আপনারা ফোন সুইচ অফ মোডে বা সাইলেন্ট করে আসবেন। এমন কিছু করতে বাধ্য করবেন না যাতে আপনাদের ফোন জমা রাখতে হয়।’
এদিকে, শোকপ্রস্তাবে বাংলাদেশে হিংসার কথা উত্থাপিত না হওয়ার অভিযোগে ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার থেকে বিধানসভায় যোগ না দেওয়ার কথা জানান তিনি। এরপর সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। শোকপ্রস্তাবে কেন বাংলাদেশের হিংসার কথা উল্লেখ করা হল না, তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। তারই প্রতিবাদে মঙ্গলবার থেকে বিধানসভায় বিজেপি বিধায়করা আসবেন না বলেই সিদ্ধান্ত নেন। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমরা বিএ কমিটির বৈঠকে থাকি না। থাকব না। উৎসবের মরশুমে আমরা মানুষের পাশে থাকব।” তবে বিধানসভার অধিবেশনে বিজেপি বিধায়কদের যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা মতো, অধিবেশন যোগ দেন না বিজেপি বিধায়করা। তবে তাঁদের অনেককেই খাতায় সই করতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: West Bengal Assembly: বিধানসভায় দু’ মিনিটের নীরবতা পালন পর্ব, তার মধ্যেও বেজেই চলেছে বিধায়কদের ফোন!