কলকাতা: প্রিভেনশন অব কোরাপ্টশন অ্যাক্ট-এর ১৯ (১) ধারায় কোনও জন প্রতিনিধির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধানসভার (West Bengal Bidhansava Bhawan) অধ্যক্ষের অনুমতি প্রয়োজন। অভিযোগ, সম্প্রতি নারদ মামলায় তিন জনপ্রতিনিধি ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ইডি চার্জশিট দেয়। কিন্তু তার আগে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও রকম অনুমতি নেয়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এরপরই আইন ‘অমান্য’ করার জন্য সিবিআই ও ইডির আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বিধানসভার তরফে। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর সিবিআইএ-এর ডিএসপি সত্যেন্দ্র সিংহ ও ইডির রথীন বিশ্বাসকে হাজিরার চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানালেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
২২ সেপ্টেম্বর বেলা ১টায় বিধানসভায় হাজির হতে হবে সিবিআই ও ইডির দুই আধিকারিককে। ইতিমধ্যেই সত্যেন্দ্র সিং (DSP, CBI) এবং রথীন বিশ্বাস (ED-এর আধিকারিক)কে ডেকে পাঠানো হয়েছে। নিজাম প্যালেসে সেই মর্মে চিঠিও পাঠিয়েছেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রিভেনশন অব কোরাপ্টশন অ্যাক্ট-এর ১৯ (১) ধারা অনুসারে বিধায়কের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করতে গেলে বিধানসভার স্পিকারের অনুমোদন নিতে হবে। সেটা নেওয়া হয়নি। বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিধানসভার মর্যাদা ক্ষুন্ন করার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। বিধানসভাকে বাদ দিয়ে অনুমোদন নিয়ে আসা হচ্ছে। এই পবিত্র স্থানের গরিমা নষ্ট হতে দেব না।”
আগামী বুধবার সারা ভারত অধ্যক্ষ সম্মেলন রয়েছে। সেখানে পাঁচ মিনিট সময় চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। মনে করা হচ্ছে, এই সম্মেলনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দুই সংস্থার ভূমিকা-প্রসঙ্গ উঠতে পারে। পাশাপাশি রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়েও কথা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং বিধায়ক মদন মিত্রের বিরুদ্ধে নারদ মামলায় ইডি চার্জশিট দেয়। সেই সূত্রে ইডির যে বিশেষ আদালত রয়েছে, তারা সমন পাঠায় বিধানসভাতে। মূলত অভিযুক্তদের কাছে তা পৌঁছে দিতেই বিধানসভায় তা পাঠানো হয়। এরপরই বিধানসভা কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, চার্জশিটে এই তিনজনের নাম রয়েছে। কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের চার্জশিটে রাখতে গেলে যে আইন রয়েছে, সেই আইন এ ক্ষেত্রে লঙ্ঘণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিধানসভার সচিবালয় বলছে, ইচ্ছাকৃত ভাবেই তা করা হয়েছে। সে কারণে বিধানসভার সচিবালয় থেকে ইডি ও সিবিআইয়ের দফতরে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
উল্লেখ্য, নারদ মামলায় ইতিমধ্যেই সিবিআই চার্জশিট পেশ করেছে। তবে এখনও ইডির চার্জশিট জমা পড়েনি। এই প্রেক্ষিতে চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দেওয়ার আগে সিবিআই-র স্পেশাল কোর্টে ইডি জানিয়েছে, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং ফিরহাদ হাকিমকে আগামী ১৬ নভেম্বর তারা জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে সিবিআই-র বিশেষ আদালতের নির্দেশ, বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাধ্যমে তিন বিধায়ককে সমন পাঠানো হবে।