‘এই নার্সিংহোমে মৃতদেহ থেকে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ খুলে নেয়’, মৃত্যুর আগে বলেছিলেন করোনা রোগী! দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের নির্দেশ

Covid-19: চলতি বছরের এপ্রিলে যখন সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাকাল গোটা দেশ, শহরের এক নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় কাকলি সরকার নামে এক মহিলার।

'এই নার্সিংহোমে মৃতদেহ থেকে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ খুলে নেয়', মৃত্যুর আগে বলেছিলেন করোনা রোগী! দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের নির্দেশ
কী বলছে কলকাতা হাইকোর্ট? (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 13, 2021 | 8:14 PM

কলকাতা: করোনায় মৃতের দ্বিতীয়বার ময়না তদন্ত করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। রোগীর মৃত্যু করোনার কারণে বলেছে বেলঘড়িয়ার নার্সিংহোম (Belgharia Nursing Home)। অথচ তাঁর হাতে ছিল দাগ। মৃতের পরিবার জানতে চায় এই দাগ কেন। সেই প্রশ্ন নিয়েই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে মামলা করে পরিবার। সিআইডি তদন্তের আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে মামলাও দায়ের করা হয়।

চলতি বছরের এপ্রিলে যখন সংক্রমণের (Covid-19) দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাকাল গোটা দেশ, শহরের এক নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় কাকলি সরকার নামে এক মহিলার। তিনি কোভিড রোগী ছিলেন। পরিবারের অভিযোগ, নার্সিংহোমে করোনা নিয়ে ভর্তি হন কাকলিদেবী। হঠাৎ তাঁর পরিবারের কাছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ফোনে জানায়, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। কাকলিদেবীর ভাই তড়িঘড়ি ওই নার্সিংহোমে যান। তাঁর ভাইয়ের অভিযোগ, দিদি তাঁকে জানিয়েছিলেন এই নার্সিংহোমে একটি অঙ্গ পাচার চক্র চলে। সমস্ত মৃত রোগীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করে দেওয়া হয়। অভিযোগ, বিস্ফোরক এই দাবির পরই তাঁর দিদিও মারা যান। পরিবারের অভিযোগ কাকলি সরকারকে একটি ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল। সে কারণেই মারা যান তিনি।

এরপরই মৃতের পরিবার ময়না তদন্তের দাবি জানায়। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পর দেখা যায় কাকলিদেবীর মুখ দিয়ে গ্যাজলা উঠে মারা গিয়েছেন। হাতেও তার ক্ষত রয়েছে। এরপরই পরিবার প্রশ্ন তোলে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে এই ধরনের পরিস্থিতি কেন সৃষ্টি হবে। পরিবারের তরফে বিষয়টি রাজ্যের হেলথ রেগুলেটরি কমিশনের কাছে জানানো হয়। কমিশনের চেয়ারম্যান নির্দেশ দেন, ওই নার্সিংহোম কোনও রোগী ভর্তি করতে পারবে না। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেন।

এরপরই ওই পরিবার দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়। আদালতে পরিবার দাবি করে, বেলঘড়িয়া থানা নয়, ঘটনার তদন্ত করুক সিআইডি বা অন্য কোনও তদন্ত সংস্থা। একই সঙ্গে কাকলিদেবীর মৃতদেহের দ্বিতীয় বার ময়না তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। সোমবার আদালত জানিয়েছে, এনআরএস হাসপাতালের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে এই দ্বিতীয় ময়না তদন্ত করতে হবে। মৃতের শরীরে সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখবেন এই তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলি কাকলি সরকারেরই কি না সেই বিষয়টিও ময়না তদন্তে নজর দেবেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা। বর্তমানে কাকলিদেবীর দেহ সাগর দত্ত হাসপাতালে রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমার দিদি ২৫ এপ্রিল মারা গিয়েছেন। আমি চাই আবার তাঁর মৃতদেহের ময়না তদন্ত হোক। সোমবার মহামান্য বিচারপতি রাজশেখর মান্থা সবদিক খতিয়ে দেখে নির্দেশ দিয়েছেন তিন সপ্তাহের মধ্যে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে মৃত দেহ এনআরএসে নিয়ে গিয়ে তিনজন ডাক্তারের একটি টিম এই দ্বিতীয় ময়না তদন্ত করবেন। দেখবেন মৃতদেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ঠিক আছে কি না। যদি সব ঠিক থাকে তবু তা যে আমার দিদিরই, সেটাও পরীক্ষা করে দেখা হবে।”

আরও পড়ুন: অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে বোমাবাজি, NIA’র হাতে তদন্তভার দিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক