কলকাতা : সোমবার বিধানসভায় (West Bengal Assembly) বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব পাশ হল ধ্বনিভোটের মাধ্যমে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এদিন বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গের ইস্যুতে বিজেপির পরিষদীয় দলের মধ্যে দুটি ভিন্ন দিক উঠে এল। উত্তরবঙ্গকে আলাদা করার কথা সরাসরি না বললেও এই নিয়ে গণভোটের দাবি তোলেন বিজেপি (BJP) বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। এদিকে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবার বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপি বঙ্গভঙ্গ চায় না। বললেন, ‘এক পশ্চিমবঙ্গ, শ্রেষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গ’। উল্টে, তৃণমূল (Trinamool Congress) শিবির যে বিষয়টিকে নিয়ে নির্বাচনী এজেন্ডা তৈরি করার চেষ্টা করছে, সেই কথাও এদিন তুলে ধরেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর কোন নেতা কী বললেন এদিন বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব ইস্যুতে?
ফিরহাদ হাকিম আবার বললেন, “চিরকাল বাংলাকে সবাই ভয় পায়। তাই বাংলাকে দুর্বল না করলে অন্যরা শক্তিশালী হয় না। সেই ব্রিটিশ আমল থেকে ভাগের চেষ্টা চলছে। ১৯০৫ সালের পরে বাংলা ভাগ করতে গিয়ে ভারত ভাগ হল। পরে সুভাষ ঘিসিং-এর সময় দার্জিলিং ভাগ হওয়ার কথায় মানুষ মারা গেল। তখন বিজেপি পিছন থেকে ছিল। ২০১৯ সালে বিজেপি লোকসভায় এই বাংলা ভাগের ডাক দেয়।” প্রসঙ্গত, অতীতে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা উত্তরবঙ্গ ইস্যুতে সরব হয়েছিলেন। এদিন ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্যে জন বার্লার প্রসঙ্গও উঠে আসে। বললেন, “বাংলাকে ভাগ করে দুর্বল করার জন্য এই রাজবংশী বিভাজন। বিজেপি বার বার করে ভাগ করার কথা বলছে। আমরা যদি মৃত্যু বরণ করতে হয় করব, কিন্তু বাংলাকে ভাগ হতে দেব না।”
একই সুর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গলাতেও। তিনি বলেন, “আমরা ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড দেখলাম। এভাবে আমরা কত টুকরো হব? স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নিউরোসার্জেন্ট নেই, সেটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এই সমস্যা আমার দমদমেও হতে পারে। কিন্তু উন্নয়ন তো হয়েছে।” অন্যদিকে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যে বাংলা নজরুল, রবীন্দ্রনাথের। সেই বাংলায় রক্তক্ষরণ দেখেছি। আর চাই না। কেন বাংলাকে আমরা টুকরো টুকরো করব? উন্নয়নের জন্য আমরা আছি। লড়াই করুন, আছি। কেবল রক্তক্ষরণ চাই না। ২০১১ সালের পর GTA-কে আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উত্তরকন্যা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি উত্তরবঙ্গ নিয়ে ভাবছেন। দার্জিলিং-সহ পার্বত্য এলাকায় নানা উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হয়েছে। এবছরও বাজেটে অনেক বরাদ্দ হয়েছে।”