কলকাতা: অবশেষে সমস্ত জটিলতা কাটিয়ে মায়ের কোল পেল সদ্যোজাত। এনআরএস (NRS) থেকে হোমে ঠাঁই পাওয়া শিশুসন্তানকে ফিরে পেল পরিবার। বৃহস্পতিবার বাবা স্বপন হালদারের হাতে শিশুপুত্রকে তুলে দেয় চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি বা সিডব্লিউসি (CWC)। হোমে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সদ্যোজাতকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করল তারা। সাদা তোয়ালে জড়িয়ে, মাথায় লাল রঙের সান্টাক্লজ টুপি পরিয়ে একরত্তিকে বাড়ি নিয়ে গেল পরিবারের লোকেরা। ছেলেকে কোলে পেয়ে ছলছল চোখ বাবার। এই প্রথম সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন মা। মায়ের বুকের ওম পেল ছোট্ট শিশু। যাকে ঘিরে এত কিছু চলল এক সপ্তাহ ধরে, সিডব্লুসি যখন সেই শিশুকে পরিবারের হাতে তুলে দেয়, সে তখন অঘোরে ঘুমোচ্ছে। ছোট্ট আঙুলখানা মুখে ভরা।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি বারুইপুরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে জন্ম হয় এই শিশুর। মা রুমা হালদার শিশুপুত্রের জন্ম দেন। জন্মের পর শ্বাসকষ্ট শুরু হয় বাচ্চার। এরপরই নার্সিংহোমের পরামর্শে শিশুটিকে কলকাতার নীলরতন সরকার বা এনআরএস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এই স্থানান্তরিত প্রক্রিয়াতেই বড়সড় ভুল করে বসে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। এক সপ্তাহ ধরে যার খেসারত দিতে হয় হালদার পরিবার ও সদ্যোজাত শিশুটিকে।
অভিযোগ, ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ যখন বাচ্চাটির রেফার সংক্রান্ত কাগজ লেখে, সেখানে শিশুপুত্রের বদলে শিশুকন্যা উল্লেখ করে। এদিকে এনআরএসে আনার পর শিশুটিকে ভর্তির সময় চরম বিভ্রান্তি ঘটে। এনআরএস শিশুটিকে ভর্তি নিলেও ‘আননোন বেবি’ হিসাবে উল্লেখ করে। চিকিৎসাও করে। কিন্তু গত সোমবার যখন শিশুটির হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার সময় আসে, তখন শুরু হয় সমস্যা।
যেহেতু ‘আননোন বেবি’ তাই তাকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেয় এনআরএস কর্তৃপক্ষ। এনআরএসের এমএসভিপি ইন্দিরা দের বক্তব্য ছিল, “যেহেতু শিশুটিকে আননোন বলে ভর্তি করা হয়, তাই সিডব্লুসিতে জানানো হয়। তারা বাচ্চাটিকে নেওয়ার জন্য রাজি হয়। এরইমধ্যে বাচ্চার বাবা বলে পরিচয় দিয়ে একজন আসেন। পরিচয়পত্রও দেখান। তবে সেটা সত্যি কি মিথ্যা যাচাই করবে সিডব্লুসি। ওখানেই তথ্য়প্রমাণ দিয়ে বাচ্চাটিকে নিতে হবে।” এরপর মঙ্গলবার শিশুটিকে সিডব্লুসির হাতে তুলেও দেওয়া হয়। সমস্ত তথ্যপ্রমাণ দাখিল করে বৃহস্পতিবার শিশুটিকে বাড়ি নিয়ে গেল পরিবার।