কলকাতা: ১০০ দিনের প্রকল্পের টাকা নিয়ে গত কয়েকদিনে কার্যত তোলপাড় চলছে। বারবারই রাজ্যের তরফে দাবি করা হচ্ছে, কোটি কোটি টাকা বকেয়া রেখেছে কেন্দ্র। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি পর্যন্ত লিখেছেন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী সাক্ষাতেও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। এরইমধ্যে উঠে এল নয়া তথ্য। ২৮ শে জুলাই পর্যন্ত তথ্য যা বলছে, ১০০ দিনের কাজের খাতে একটি পয়সাও আসেনি বাংলায়। খোদ কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী রাজ্যসভায় এই তথ্য পেশ করেছেন।
রাজ্যসভায় ১০০ দিনের কাজের টাকা বরাদ্দ সংক্রান্ত তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি যা বলেছেন, তাতে দেখা গিয়েছে, মনরেগা (MGNREG) প্রকল্পে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে যা বরাদ্দ করা হয়েছিল, তা তার আগের অর্থবর্ষের (২০২০-২১) তুলনায় ৪ হাজার কোটি টাকা কম। একইসঙ্গে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ২৮ জুলাই অবধি এই প্রকল্পে একটি টাকাও আসেনি রাজ্যে। বারবার রাজ্য দাবি করছিল কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। কার্যত সেই অভিযোগেও সিলমোহর পড়ল এই তথ্যে।
একইসঙ্গে আরও একটি তথ্য উঠে আসছে এই সূত্র ধরে। একটি এক্সেল শিটও সামনে এসেছে, কোন কোন রাজ্য কত টাকা পেয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ ও লক্ষদ্বীপ এক পয়সাও পায়নি। বাকি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি টাকা পেয়েছে। গত সপ্তাহেই দিল্লি গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন তিনি। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে বিভিন্ন প্রকল্পের বকেয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে জানান। একটি চিঠিও দেন। সেই চিঠিতে ১০০ দিনের কাজ (মনরেগা), প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার টাকা রাজ্যের বকেয়া রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
যদিও এই ১০০ দিনের কাজের টাকা বকেয়া সংক্রান্ত বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, “১০০ দিনের কাজে বাংলায় চরম দুর্নীতি হয়েছে। তা বারবার ধরাও পড়েছে। এই পশ্চিমবঙ্গে এনআরইজিএ’র কাজে যত হাজার কোটি টাকার মাটি কাটা হয়েছে বাস্তবিক পক্ষে সেই মাটি এক জায়গায় জমা করলে তা এভারেস্টের সমান হয়ে যাবে। পশ্চিমবঙ্গে এত মাটি আছে কি না সন্দেহ। অর্থাৎ ১০০ দিনের কাজে শুধুমাত্র খাতায় কলমে কাজ হয়েছে। টাকা ঢুকেছে তৃণমূলের নেতাদের ঘরে। সাধারণ মানুষ বঞ্চনা ছাড়া কিছুই পাননি। জবকার্ড হোল্ডাররা অন্য দল করেন বলে, কাজ পাননি। এর সোশাল অডিট হয়েছে। দিল্লি থেকে টিম এসে তদন্ত করে গিয়েছে। গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে রাজ্যে চরম দুর্নীতি হয়েছে। সাংসদদের এগুলো দেখার কথা। এ রাজ্যে কিছুই মানা হয় না। ফলে রাজ্যের অভিযোগ ভিত্তিহীন।”