Bengal BJP: বঙ্গ বিজেপির প্রথম সভাপতির জন্মজয়ন্তীতে দলের ‘সমালোচনায়’ বর্তমানরা
Bengal BJP: বুধবার বঙ্গ বিজেপির প্রথম সভাপতি হরিপদ ভারতীর ১০৪ তম জন্মজয়ন্তী পালিত হল। আর সেখানেই দলের বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কী কী সমস্যা হচ্ছে তারও ফিরিস্তি তুলে ধরলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা ও বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

কলকাতা: বঙ্গ রাজনীতিতে গত কয়েক বছরে এক উল্কাগতির উত্থান হয়েছে বিজেপির (Bengal BJP)। পায়ের তলার মাটি যে শুধু শক্ত হয়েছে তাই নয়, তৃণমূলকে কথায় কথায় চাপে ফেলে দিচ্ছে। বামেদের সরিয়ে প্রধান বিরোধী দলের তকমা পেয়েছে। দলের সংগঠন ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। আর এসবের মধ্যেই আত্ম-সমালোচনার সুর রাজ্য নেতৃত্বের গলায়। বুধবার বঙ্গ বিজেপির প্রথম সভাপতি হরিপদ ভারতীর ১০৪ তম জন্মজয়ন্তী পালিত হল। আর সেখানেই দলের বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কী কী সমস্যা হচ্ছে তারও ফিরিস্তি তুলে ধরলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা (Rahul Sinha) ও বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। একপ্রকার বোমা ফাটালেন বলা চলে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যেমন ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন, দল কারও একার উপর নির্ভর করে বেড়ে ওঠেনি। সুকান্ত অধ্যাপক মানুষ। বিচক্ষণ ব্যক্তি। তাই দলের কিছু অংশের মানুষের যে রিয়েলিটি চেকের প্রয়োজন রয়েছে, তা ভালই বুঝতে পেরেছেন তিনি। আজ রাজ্য সভাপতির কথাতেও সেই বার্তা স্পষ্ট। বুঝিয়ে দিয়েছেন, বঙ্গ বিজেপির এই বিস্তারের পিছনে অনেকেই নিজেকেই বড় করে দেখেন। ভাবখানা এমন, যেন তাঁর জন্যই সব হয়েছে। এই হামবড়া ভাব দেখানো যে চলবে না, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। একজন রাজনীতিকের ব্যক্তিগত সততা কতটা গুরুত্ব রাখে, তাও লালকৃষ্ণ আডবানির উদাহরণ টেনে বুঝিয়ে দেন সুকান্ত।

হরিপদ ভারতীর জন্মজয়ন্তীতে রাহুল সিনহা, সুকান্ত মজুমদাররা
আবার বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা বঙ্গ বিজেপির কোর কমিটির সদস্য রাহুল সিনহা আবার কথা শোনালেন রাজনীতিকের ভাষা-সন্ত্রাস নিয়ে। বঙ্গ বিজেপির প্রথম সভাপতি ছিলেন হরিপদ ভারতী। ১৯৭৭-১৯৮২ সালে বিধায়কও ছিলেন। তাঁর সময়কালের কথাও তুলে ধরেন রাহুল সিনহা। সেকালে মানুষের মধ্যে স্বতঃর্ফূর্ততা ছিল ‘মাস্টারমশাই’ হরিপদ ভারতীর ভাষণ শোনার জন্য। যা আজকের দিনে প্রায় উবে গিয়েছে বলেই মনে করছেন রাহুল। বললেন, ‘মাষ্টারমশাইয়ের বক্তব্য শুনতে দলমত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ আসতেন। আর এখন লরি পাঠিয়ে লোক আনতে হয়।’
একুশের বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বার বার হিংসার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। বিজেপি কর্মীদের উপর অত্যাচার হয়েছে, নীচুতলার কর্মীদের খুনের অভিযোগ উঠেছে। ভয়ে অনেকে গ্রামছাড়া হয়ে গিয়েছিলেন। রাহুল সিনহার প্রশ্ন, ‘এই পরিস্থিতির জন্য কি শুধুই তৃণমূল দায়ী? আমরা দায়ী নই? আমরা নির্বাচনের আগে বলে বেরিয়েছি মাটিতে পুঁতে দেব, খুন করে দেব, মাথা নামিয়ে দেব।’
কিন্তু ভোটে বিজেপি যেমন ফলাফল চেয়েছিল, তেমনটা হয়নি। ২০০ পারের হুঙ্কার সেঞ্চুরি পেরনোর আগেই থমকে গিয়েছিল। নির্বাচনী ফলাফল পাল্টে যাওয়ার পর যা পরিস্থিতি হয়েছে, তা নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুযায়ীই হয়েছে বলে মনে করছেন দীর্ঘদিনের বিজেপি নেতা। বলছেন, ‘প্রতিক্রিয়া তো হওয়ারই ছিল।’ আজ দলের প্রথম রাজ্য সভাপতি জন্মবার্ষিকীর স্মরণসভায় দলের নেতা-কর্মীদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিলেন হরিপদ ভারতীর অন্যতম উত্তরসূরি। নিজের জন্য যাতে দলের কর্মীদের জীবন বিপন্ন না করে ফেলেন কেউ, সেই বার্তাও দিয়ে রাখলেন রাহুল সিনহা।
