কলকাতা: বিজেপির নবান্ন অভিযান নিয়ে জেপি নাড্ডার কাছে রিপোর্ট পেশ করল পাঁচ সদস্যর ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’। বিজেপি সূত্রে খবর, সেই রিপোর্টে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপেরও দাবি তোলা হয়েছে। বিজেপির ওই কমিটির দাবি, নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিজেপি কর্মীদের উপর বর্বরোচিত হামলা হয়েছে। এদিন ২৫ পাতার একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে ওই কমিটির তরফে। সেখানে বেশ কয়েকটি ছবিও রয়েছে। আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের ছবির পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেও কয়েকটি ছবি দেওয়া হয়েছে।
বিজেপির রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে —
১. এ রাজ্যে যে আইনশৃঙ্খলা নেই, তা আরও একবার প্রমাণ হল।
২. বিজেপির এই নবান্ন অভিযান ছিল ‘জন আন্দোলন’। তা ছত্রভঙ্গ করতে রাজ্য সরকার বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে।
৩. পুলিশের দ্বারা বর্বরোচিত হামলা হয়েছে। কখনও মুখ ঢেকে, অনেকে আবার সাধারণ পোশাকে তৃণমূলের গুন্ডাদের সঙ্গে নিয়ে।
৪. বিরোধীদের কন্ঠরোধে সাঁতরাগাছি, হাওড়া ময়দানে ১৪৪ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। লালবাজার, এমজি রোডে কোনও অর্ডার ছাড়াই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
৫. সাঁতরাগাছি, হাওড়া ময়দান, লালবাজার-এমজি রোডে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে রাজ্য সরকার। পাথর ছোড়া, ওয়াটার ক্যানন, রবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস, লাঠির ব্যবহার শুধুমাত্র দুর্ভাগ্যের নয়, সাংবিধানিক অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। বিজেপিকে প্রতিরোধ নয়, এসব রাখা হয়েছিল ক্ষমাহীনভাবে বিরোধীদের রুখতে।
৬. প্রায় ৭৫০ জন মানুষ ও বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন। অনেকে আইসিইউয়ে। শুধুমাত্র এ রাজ্যে নয়, পড়শি রাজ্যের হাসপাতালেও ভর্তি তাঁরা। অভিযান শুরু ও তার আগে ৫৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ৬০ জন এখনও পুলিশ হেফাজতে।
এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যও। কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার দেবজিত্ চট্টোপাধ্যায়কে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে যা বলেছিলেন তিনি। একইসঙ্গে তিন আইপিএস সিদ্ধানাথ গুপ্তা, আইপিএস দময়ন্তী সেন, আইপিএস প্রবীণকুমার ত্রিপাঠীর কথা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই তিন আইপিএস তাঁদের যথাযথ ভূমিকা পালন করেননি।
প্রসঙ্গত বিজেপির পাঁচ সদস্যর কমিটিতে ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ ব্রজলাল (উত্তর প্রদেশ), লোকসভার সাংসদ কর্নেল রাজ্যবর্ধন সিং রাঠৌর, লোকসভার সাংসদ অপরাজিতা সারেঙ্গি, রাজ্যসভার সাংসদ সমীর ওরাও, পঞ্জাবের সুনীল জাখার। ১৭ সেপ্টেম্বর কলকাতায় আসেন তাঁরা।