কলকাতা: মার্চ মাস থেকে রাজ্য সরকারের সমস্ত কর্মচারীকে তিন শতাংশ মহার্ঘ ভাতা পাবেন। রাজ্য বাজেটে বড় ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বিধানসভায় তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্যে সকল কর্মচারী, শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারী, সমস্ত পেনশনভোগীরা ৩ শতাংশ ডিএ, মহার্ঘ ভাতা লাগু করা হবে। আগামী মার্চ থেকে তা লাগু হবে।” তিনি আরও বলেন, “আগামী অর্থবর্ষের জন্য ৩ লক্ষ ৩৯ হাজার ১৬২ কোটি নিট বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।”
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বকেয়া মহার্ঘ ভাতার। এই মামলা কলকাতা হাইকোর্ট পেরিয়ে পৌঁছয় সুপ্রিম কোর্টেও। গত বছরের ২০ মে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল তিন মাসের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে ফেলতে হবে রাজ্যকে। সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় রাজ্য। রাজ্যের সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায় আদালতে। তিন মাসের মধ্যে বকেয়া প্রাপ্য টাকা না পাওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল সরকারি কর্মচারি সংগঠনগুলি। রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠে। এরপর মামলাটি গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। দীর্ঘ আইনি জটিলতায় ঝুলেই থাকে সরকারি কর্মীদের বকেয়া দাবি।
শেষমেশ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন সরকারি কর্মীরা। ২০ দিন লাগাতার চলছে সেই আন্দোলন। আর বকেয়া ডিএ-র দাবিতে শহিদ মিনারে সরকারি কর্মীদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অনশন আন্দোলনের বুধবার ষষ্ঠ দিন। বুধবারের মধ্যে বকেয়া না মেটানো হলে পঞ্চায়েত ভোটে কাজ না করা এবং লাগাতার কর্মবিরতির চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সরকারি কর্মীরা। ভোটের কাজ না করার কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, ষষ্ঠ বেতন কমিশন অনুযায়ী কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের ডিএ-র তফাত এখন ৩৫ শতাংশ। এদিন ডিএ নিয়ে যে কোনও বড় ঘোষণা থাকতে পারে, তা আশা করেছিলেন আন্দোলনকারী সরকারি কর্মীরা। তা না হলে বড় আন্দোলনের পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু এদিনের ঘোষণায় ঠিক কতটা খুশি সরকারি কর্মীরা? TV9 বাংলার প্রতিনিধিরা পৌঁছেছিলেন শহিদ মিনারে। সেখানে উপস্থিত আন্দোলনকারী সরকারি কর্মীদের কাছে ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছে এই খবর। এক সরকারি কর্মীর বক্তব্য, “আমরা ৩৯ শতাংশ বকেয়া চাই। আমরা পাটিগণিত বুঝিয়ে দেব ওঁকে, ৩ শতাংশ দিয়ে ৩৯ শতাংশকে ঢাকা যায় না। আমাদের দাবি যতক্ষণে না আদায় হচ্ছে, লড়াই চলবে।” তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “যাঁরা ডিএ নিয়ে আন্দোলন করে এই ভাষা বলছেন, তাঁরা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাজ করছে। তাঁরা জানেন কেন্দ্রীয় সরকারি বিপুল পরিমাণ টাকা বকেয়া রেখেছিলেন বলে এই ধরনের সমস্যা হচ্ছে। অনেক কষ্টে রাজ্য সরকারকে কাজ করতে হচ্ছে। রাজ্য সরকার প্রান্তিক মানুষ, গরিব মানুষদের সামাজিক সুরক্ষাকে সুনিশ্চিত করছে।”